রমজান এলেই দেখি চারিদিকে খেঁজুর কেনার ধুম পড়ে যায় । কারণ, খেঁজুরকে আমরা ইফতারির প্রধান মেনু হিসাবে রাখতে চাই ।
কেন রাখতে চাই ?
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইফতারিতে খেঁজুর রাখতেন । আমরাও রাখব কারণ আমরা তাঁর উম্মত ।
উম্মত হিসাবে অবশ্যই প্রিয় নবীর জীবন, কর্ম ও খাদ্যাভাস অনুসরনীয় এবং পালনীয় । কিন্তু পাশাপাশি আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, আবহাওয়া ও পরিবেশগত ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন ফল ও ফসল এবং সেখানকার মানুষের খাদ্যাভাস ভিন্ন রকম হতে পারে ।
খেঁজুর মুলত হাজার হাজার বছর পূর্ব থেকেই আরবীয় মরুভূমির একটা সুস্বাদু ফল । যা তৎকালীন সময় থেকে সেখানকার অর্থনীতিরও একটা চালিকা শক্তি ছিল । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বেশ কিছু হাদিসেও খেঁজুর ও খেঁজুর বাগানের কথা উঠে এসেছে ।
এখন আমরা প্রিয় নবীর উম্মত হিসাবে ইফতারিতে খেজুর রাখতেই পারি । কিন্তু বিদেশী এই ফলটা প্রতিদিন ইফতারিতে রাখার সামর্থ কয়জন রাখে ? সেটাই বিবেচ্য বিষয় ।
হ্যাঁ, বলতে গেলে আমরা সবাই কমবেশি সে সামর্থ রাখি । কিন্তু ভাল মানের খেঁজুর কেনার সামর্থ আমাদের কয়জনের আছে ? যেখানে মিডিয়াম মানের এক কেজি খেঁজুরের দাম বার'শ/চৌদ্দ'শ টাকা । যতদূর জানি, দু'হাজার/তিন হাজার টাকা কেজি দামের উন্নত জাতের খেঁজুরও বাংলাদেশে আসে ।
বলা বাহুল্য, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রণির মানুষের কাছে এটা অনেকটা স্বপ্নের মতোই । তাই, ইফতারিতে মানুষ খেঁজুর রাখে ঠিকই, কিন্তু সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অতি নিম্ন মানের খেঁজুর । যার কোনটার হয়ত খাওয়ার তারিখই পার হয়ে গেছে । অথচ বিক্রেতা সেটাই অনেকটা সস্তায় গছিয়ে দিচ্ছে ক্রেতার হাতে ।
আর মানুষ সেগুলোই ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারাদিন রোজা রেখে অভুক্ত থাকার পর সেগুলোই মুখে তুলে নিচ্ছে এর স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা না করেই ।
এ ব্যপারে আমাদের আরেকটু সচেতন হলেই মনে হয় ভাল হয় । সেক্ষেত্রে খেঁজুরের চেয়ে দেশি মৌসুমী টাটকা ফলকে বেশি প্রাধান্য দিতে পারি । যদিও সেগুলোর দামও মোটেই কম নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:১৬