দু’জন মানুষের কিছু সংলাপ পড়ুন ।
বছিরুদ্দিনঃ মুয়াজ্জিন সাহেব, আপনাদের মসজিদের ক্যালেন্ডারে আজকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু কয়টায় লেখা ছিল ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ ভোর ৫ঃ ১৪ ।
বছিরুদ্দিনঃ আপনি আযান দিলেন কয়টায় ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ ৫ঃ ৩৫ এ
বছিরুদ্দিনঃ কেন ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ আমাদের কমিটির সিদ্ধান্ত ।
বছিরুদ্দিনঃ আপনি যখন আযান দেবার জন্য প্রস্ততি গ্রহণ করেন, তখন নিরব কোলাহলমুক্ত পরিবেশে দূর থেকে ঠিক ৫ঃ১৪তেই ফজরের আযানের ধ্বনী আপনার কানে আসছিল কি না ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ হ্যা । কিন্তু ওরা তো আহলে হাদীস ? আমাদের সাথে ওদের মিলবে না ।
বছিরুদ্দিনঃ কি বলেন ? কেন মিলবে না ? আপনি যে বললেন, আপনাদের মসজিদের ক্যালেন্ডারে টাইম লেখা আছে ৫ঃ ১৪ ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ হ্যা, তা ঠিক । তবে --------
বছিরুদ্দিনঃ তবে কি ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ আসলে আমরা হানাফী মাযহাব চাই, আমাদের কমিউনিটির সবাই যেন জামাতে অংশ গ্রহণ করতে পারে, তার জন্য সূর্যোদয়ের ৩০ মিনিট আগে ফজরের জামাত শুরু করি । এ জন্য ওদের সংগে আমাদের মিলবে না । ওদের জামাতে অংশগ্রহণকারি মুসল্লীদের সংখ্যাতো খুবই কম হয় । কেননা অধিকাংশ মানুষ কর্ম ব্যস্ত জীবন অতিবাহিত করেন । তাদেরকেতো সুযোগ দিতে হবে, তাই না ?
বছিরুদ্দিনঃ আপনার এই কথা কি রাসুল(সঃ) এর হাদীসের সাথে মিলে ? যখন তিনি সবাইকে নিয়ে ফজরের জামাত শেষে বাইরে আসতেন, তখন এতটাই অন্ধকার থাকত যে, কেউ কাউকে চিনতে পারতেন না । তা ছাড়া আপনাদের মসজিদেওতো ফজরের জামাতে দেড় কাতার লোকও হয় না । অথচ জুমআ’র দিনতো ৫ তলা ভরে গিয়ে পথেও মানুষ জামাতে দাঁড়ায় ।
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ দেখুন , কেবল ঐ হাদীস নয় । আরো হাদীস আছে । আমরা সেটা ফলো করি ।
বছিরুদ্দিনঃ ঐ হাদিস কিন্তু সারা বছরের জন্য প্রযোজ্য নয় । কোন বিশেষ কারণে, কোন বিশেষ পরিস্থিতি বা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হত মাঝে মাঝে । নিয়মিত নয় তো । নিয়মিত তিনি সর্বদাই আউয়াল ওয়াক্তে নামায পড়াতেন । সাহাবীরাও তাই ফলো করতেন । তাহলে কেন আপনারা কেবল বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে ঘটনার অনুসরণকে সারা বছরের জন্য নিয়মিত করলেন ?
মুয়াজ্জিন সাহেবঃ ভাই, কমিটিকে বলেন । আমার সাথে বলে কি হবে ?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৪৫