যেথা রঙধনু ওঠে হেসে, যেথা ফুল ফোটে ভালোবেসে,
সেথা তুমি যাবে মোর সাথে, এই পথ গেছে সেই দেশে!!!
এমনি করে গান গেয়ে না বললেও আমার রাজকুমারের হাবেভাবে এমনি প্রকাশ ছিলো যে তার জন্মস্থানটি এক স্বর্গীয় সৌন্দয্যের অনাবিল লীলাভুমি!!!
এদিকে আমি বলতে গেলে বাংলাদেশের সবখানেই গেছি, শুধুই কেনো যেন বিধাতা এই স্থানটিই বাদ রেখেছিলেন আমার জন্য। কখনও যাওয়া হয়নি আমার এর আগে এই অপরুপ পুন্যভুমি সিলেটে।
যাইহোক এক বিকেলে রওয়ানা হলাম আমার রাজপুত্রের দেশে। পৌছুলাম যখন তখন রাত দুপুর। শেষ পর্যন্ত আঁকাবাঁকা পাহাড়ীয়া রাস্তা বেয়ে এগিয়ে গিয়ে থামলাম এক সদর দরোজায়। তারপর ঘুম ঘুম চোখে এক লম্বা ঘুম।
ভোরবেলা রাজকুমারের হাকডাকে ঘুম ভেঙে উঠে জানলাম এখন সে আমাকে ভোর দেখাতে চায় নাকি?


যাইহোক আপাদমস্তক মুড়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম । অন্যরকম একটি ভোর দেখা সার্থক হোলো আমার। রিসোর্টের আঁকাবাঁকা পথটি বেয়ে যখন উপরে উঠছিলাম কি যে ভালো লাগছিলো!!!!!
জাস্টার হলিডে রিসোর্টের এঁকেবেকে চলা পথ
তারপর নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম চা বাগানের উদ্দেশ্যে। শ্রীমঙ্গলে চা গাছের সবুজ ঝিলমিলে মনোহরনকারী পাতাগুলো প্রথম ছুঁয়েদেখা।

মন হারালাম চায়ের ফুলে........( এই ফুলে আমি দুলও পরেছিলাম

অপরুপা আনারস বাগান দেখে মনে হলো কোন রুপসীর অপূর্ব সুন্দর কেশবিন্যাস!!!
মায়াবিনী রং বেরং চা (নীলকন্ঠ চায়ের দোকানের সেই স্পেশাল চা, যা দেখা মাত্র মনে পড়েছিলো সৌম্যের কথা)
পরের দিনটির শুরু হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে।
দরগাহে কবুতরের নির্ভয় বিচরনভুমি।
তারপর গেলাম মালনিছড়া চা বাগান। যে অপরূপ সবুজ শ্যামল চা বাগানটি নাটক সিনেমায় আমি আগে অনেক দেখেছিলাম।
সিলেটের শাহী ঈদ গাহ ।
দুপুরের খাবার খেয়ে গেলাম সুরমা নদীর উপরে নির্মিত কীন ব্রীজের ধারে হাওয়া খেতে। বিখ্যাত সেই আমজাদ আলি হিস্টোরিক্যাল ওয়াচটির গহ্বর শূন্য।

এরপরদিন
জলে আগুন জ্বলে যেথায়( হরিপুরের জলন্ত কূপ)
আগুনের উপর বসবাস ( পাহাড়ের ফাটলে আগুন জ্বলছে-হরিপুর গ্যাস ফিল্ড)
জৈন্তাপুর রাজমন্দির
সিলেট শহরে ওসমানী মিউজিয়াম
ফিরে পেলাম শৈশব ( প্রথম ফুল গাছ লাগানোর স্মৃতি)প্রিয় ফুল তারাফুল
জাফলং ( নুড়ি কুড়িয়ে জড়ো করেছিলাম এক রাশ)
ঐ পাহাড়ের ঝরণা আমি( শেষবিকেলে মাধবকুন্ড জলপ্রপাত)
আবার ফিরে চলা পুরনো গন্তব্যে............
লেখাটি ভাস্করের দেশ সিলেট ভ্রমন ঊপলক্ষ্যে আমি ভাস্করকেই উৎসর্গ করলাম। সাথে সৌম্যকে আবারো স্মরণ করছি যদিও তাদের কথা আমার বারবার মনে পড়েছিলো বিশেষ করে সাতরং চা খাবার সময়। আরো একজনকে স্মরণ করছি ,লুদ্ধক যে কিনা সিলেটে আসবার আমন্ত্রন জানিয়েছিলো। যদিও কাউকেই না জানিয়ে চুপিচুপি ঘুরে এলাম আমার রাজকুমারের দেশ সিলেট থেকে।
