পঞ্চ তন্ত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী
১. গল্প: ( ভন্ড ইংরেজ)- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খবর শুনে এক বৃদ্ধ শিখ মেজর জিজ্ঞেস করলেন,‘কে কার বিরুদ্ধে লরছে?
‘ইংরেজ- ফরাসী জর্মনির বিরুদ্ধে।’
সরদার্জি আফসোস করে বললেন, ‘ফরাসী হারলে দুনিয়া থেকে সৌন্দর্যের চর্চা উঠে যাবে আর জর্মানি হারলেও বুরী বাৎ, কারণ জ্ঞান-বিজ্ঞান কলকৌশল মারা যাবে।’ কিন্তু ইংরেজের হারা সম্বন্ধে সর্দাজী চুপ।
‘ আর যদি ইংরেজ হারে?’
সর্দারজি দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন, ‘ তবে দুনিয়া থেকে বেঈমানি লোপ পেয়ে যাবে।’
শাশ্বত বঙ্গঃ কাজী আব্দুল ওদুদ
১. বঙ্কিমচন্দ্রের ধর্মবোধঃ তার সুবিখ্যাত উক্তি-“ এ জীবন লইয়া কি করিব? লইয়া কি করিতে হয় ?সমস্ত জীবন ইহার উত্তর খুঁজিয়াছি। ইত্তর খুঁজিতে খুঁজিতে জীবন প্রায় কাটিয়া গিয়াছে। অনেক প্রকার লোক-প্রচলিত উত্তর পাইয়াছি, তাহার সত্যাসহ নিরুপন জন্য অনেক ভোগ ভুগিয়াছি, অনেক কষ্ট পাইয়াছি, যথাসাধ্য পরিয়াছি অনেক লিখিয়াছি, অনেক লোকের সঙ্গে কথোপকথন করিয়াছি এবং কার্য ক্ষেত্রে মিলিত হইয়াছি। সাহিত্য দর্শন দেশি বিদেশী শাস্ত্র যথাসাধ্য অধ্যায়ন করিয়াছি। জীবনের সার্থকতা সম্পাদন জন্য প্রাণপাত পরিশ্রম করিয়াছি, এই পরিশ্যম এই কষ্ট-ভোগের ফলে এইটুকু বুঝিয়াছি যে, সকল বৃত্তির ঈশ্বরানুবর্তিতাই ভক্তি এবং সে ভক্তি ব্যতীত মনুষ্যত্ব নাই।”
২. সত্যের প্রকৃতি এই যে সে আপোষ করে না, জয় করে; যে তার বিরোধিতা করে সে বিনষ্ট হয়।” পৃ ১৫১
৩. “plain living and High Thinking”
৪. যারা সৃষ্টিধর্মী, সত্য ও সৌন্দর্যেও প্রেরণা তারা যে জগতের যে কোন স্থান থেকে সহজ ভাবে গ্রহন করতে পারেন, দেশ জাতি কাল এর কোনো ব্যাবধান তাঁদের কাছে ব্যাবধান মনে হয়না, এই দিনের আলোর মতো সুস্পষ্ট কথা আমাদের দেশের সৃষ্টিধর্মী ব্যাক্তিও যে মাঝে মাঝে কেমন করে বিস্মৃতি হয়েছেন এ কথা ভাবলে বিষ্ময়ে বিহ্বল হতে হয়। এর মুখ্য কারন বোধ হয় এই যে সৃষ্টি-প্রবণতা তাদের মধ্যে স্বল্প ক্ষনস্থায়ী হয়েছে, আর দেশের উচ্চ শ্রেনীর ভিতরেও অজ্ঞনার বহুবিস্তারের জন্য তাদের মনে বিচারের পথ হয়েছে দুস্তর।
৫. হাফিজের গজল
“ইহকাল ও পরকালের আরাম এই এক কথায়-
বন্ধুদের নিয়ে উৎসব কর আর শত্রুদের সঙ্গে আপোস কর।
“বায়াত্তর দলের ঝগড়া নিরর্থক,
সত্য না বুঝে তার খেয়াল ও মূঢ়তার পথে চলেছে।।
তারো অনিষ্টকারী হয়ো না আর যা খুশি কর,
আমাদের পন্থায় এ ভিন্ন আর কোন পথ নেই।
শেখ সাদীর বিখ্যাত উক্তি
“ জীবের সেবা ভিন্ন ধর্ম আর কিছূ নয়।
তসবিহ জায়নামাজ( আসন) ও আলখেল্লায় ধর্ম নাই।”
ড.মাহাথির মুহাম্মদ, নির্বাচিত ভাষণ-১
ইসলামে পদ্ধতি বা প্রক্রিযাকে কোন সময়েই মূল বিষয়ের মত গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যেমন নামায কিভাবে আদায় করা হল সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় বরং নিয়ত বা কি উদ্দেশ্য নামায আদায় করা হল সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।..
এটা হয়ত আমাদের দুভাগ্য যে, অনেত মুসলমানই ইসলামের মূল বিষয়ের চেয়ে ধরন ও পদ্ধতিকেই বেশী গুরুত্ব দেয়। (পৃঃ ৯১)
সংস্কৃতি -কথাঃ মোতাহের হোসেন চৌধুরী
১. লোকটা মোটের উপর ভালো কি মন্দ সেদিকে আমাদের নজর নেই, তার গায়ে কোন দলের মার্কা পড়েছে সেদিকেই আমাদের লক্ষ্য। মার্কাটি নিজের দলের হলে তার সাতখুন মাফ, না হলে খুঁটিয়ে খুটিয়ে তার দোষ বের করা আমাদের স্বাভাবে দাড়িয়ে গেছে। এই মনোবৃত্তি থেকে মুক্ত না পেলে কালচার্ড হওয়া যায় না। পৃ: ১২
২. আইডিয়ার গোঁড়ামি থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় নিজের বা নিজের দলের অভ্রান্ততা সমন্ধে একটুখানি সন্দেহ রাখা। পৃ;১৩
৩. আমাদের মনে রাখা উচিৎ, ধর্ম শিক্ষা নামে কোন বিশেষ শিক্ষা নেই, সব শিক্ষাই ধর্ম শিক্ষা; যদি শিক্ষাটির উদ্দেশ্য হয়ে থাকে শিক্ষার দ্বারা জীবনকে মহৎ ও সুন্দর করে গড়ে তোলা । পৃ:১১৮
৪.প্রেমের স্বাদ যে পায় নি, জীবন তার কাছে তার শ্রেষ্ঠ ঐশ্বর্য উদঘাটিত করেনি। পৃ: ২৬২