মেয়েদের ব্যাপারে ছেলেদের কিছু সাধারন বিশ্বাস এবং বাস্তবতা
বি.দ্রঃ লিখাটি কাউকে ছোট বা বড় করার উদ্দেশ্যে বা কারো পক্ষপাতিত্ব করে লিখা হয়নি এবং অপরিপক্ব(ইম্যাচিউর) পোলাপানদের না পড়ার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
অনেককেই বলতে শুনেছি যে তাদের প্রেমিকা বা বৌ বেশী বেশী কিছু কাজ করে যা তাদের পছন্দ হয়না, হয়তো এই কারনেই এ ধরনের গান তৈরী হয়-
"কিছুতে তোমার মনটা আমি বুঝতে পারি না
এত চেনা তবু কেন লাগে অচেনা"
কিন্তু আসলেই কি তা ঠিক?
আমরা অনেকে বলি যে,
দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টান, জীবন পাল্টাবে।
কিন্তু কিভাবে দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাতে হয় বা একটা ব্যাপারকে অন্যভাবে(ভালোরূপে) ভাবা যায়, সেটা কি আমরা জানি? আমি আজ সেটাই করার চেষ্টা করেছি, জানিনা কতটুকু পেরেছি; তবুও করতে তো দোষ নেই, কি বলুন?
এখন আসুন, মেয়েদের ব্যাপারে ছেলেদের কিছু সাধারন বিশ্বাস এবং বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করা যাক। ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন তো নিচের কথাগুলো যুক্তিসঙ্গত কিনা...
বিশ্বাস#১
যাই করিনা কেন সে কখোনোই সন্তুষ্ট হবে না
প্রকৃত সত্যি
মেয়েরা সবসময় একটা ব্যাপার বা কাজকে আরো ভালোভাবে করার পথ খোজে। তার পরামর্শ কে কখনো অভিযোগ কিংবা নিন্দা হিসেবে বিবেচনা না করাই ভালো। বরংঞ্চ একে তার পরামর্শ বিবেচনা করে কোন ব্যাপারে আরেকটু ভালো দিকটা খুজে বের করতে পারলে তা আপনার জন্যও ভালো হয় এবং সম্পর্কের মধ্যেও কখনো টানাপোড়েন চলে আসে না।
বিশ্বাস#২
দৃঢ় মনোবল এবং আত্মবিশ্বাসী মেয়েদের কখনো ছেলেদের পরোয়া করার দরকার নেই
প্রকৃত সত্য
প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি মানুষই চায় যেন কেউ তার দেখাশোনা করুক, তাকে ভালোবাসুক। মনে মনে অনেকেই হয়তো এটা দরকার মনে করে; কিন্তু কেউ এটা প্রকাশ করে আবার কেউ কেউ প্রকাশ করে না।এমনকি, যদি একজন নারী যদি তার বাড়ির সকল কাজ নিজেই করে ফেলতে সক্ষম হন অথবা তার গাড়ীর ইঞ্জিনের লুব্রিকেন্ট অয়েলও যদি তিনি পরিবর্তন করতে জানেন তবুও কাজগুলো করতে তিনি আপনার সাহায্য কামনা করতে পারেন। কারণ এতে করে তিনি আপনার কাছ থেকে সহায়তা, শক্তি এবং নিরাপত্তাটুকু অনুভব করেন।
বিশ্বাস#৩
মেয়েরা সবসময় ছেলেদেরকে নিয়ন্ত্রন করতে চায়
প্রকৃত সত্য
এটা আসলে নিয়ন্ত্রন না, এটাই আসলে ভালবাসা। যখন একজন মেয়ে দেখেন যে এ্কজন মানুষ মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে, গুড়িয়ে যাচ্ছে এবং এর থেকে উত্তরনের জন্য প্রানপ্রণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, তখন সে মানুষটার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চায়।
তাকে সাহায্য করার সুযোগটুকু দিন
বিশ্বাস#৪
একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক থাকা আর একটা হাতি পোষা সমান কথা(এর জন্য প্রচুর শ্রম, সময় ও টাকার দরকার)
প্রকৃত সত্য
একটি একনিষ্ট সম্পর্কের পরিমার্জিত বিকাশের জন্য সবসময়ই সে(সম্পর্ক) কিছু সময় এবং উদ্যম এবং সম্মানের দাবীদার।একে কোনরুপ বাধ্যবাধকতা হিসেবে ভাবাটা উচিত নয়।
আপনার স্ত্রী কিংবা গার্লফ্রেন্ড অবশ্যই এর প্রতিদান দিবেন, যা আপনি তাকে দিচ্ছেন। তবে আপনি যে শুধুমাত্র পাবার জন্যই তাকে দিচ্ছেন; সেটা কখনো আশা করবেন না। এতে করে জটিলতা বাড়বে বৈ কখনো কমবে না। ভালোবাসলে প্রান খুলে দিন। তবে হ্যা, নিজের সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু করতে যাবেন না, এতে কষ্টটা কিন্তু আপনাকেই পোহাতে হবে, আর এসব ক্ষেত্রে ভালোর চেয়ে খারাপ দিকটাই বেশি চলে আসে।
বিশ্বাস#৫
আপনি কখনো মেয়েদের সামনে মিথ্যা বলতে পারবেন না!!!
প্রকৃত সত্য
মেয়েরা চরমভাবে কিংবা প্রকৃতিগতভাবেই কারো মনের অবস্থা, আচরণের ভঙ্গি, মুখের অভিব্যক্তি এবং তার ভাষা খুব সহজেই বুঝে নিতে পারে। যদিও অনেকে হয়তো বলতে পারেন যে, আমি তো তার কাছে অনেক মিথ্যা বলেও পার পেয়ে গেছি কিন্তু সে সেটা বুঝেনি। হয়তো সে সেটা বুঝেও এড়িয়ে গেছে কারণ সে চায় আপনাদের সম্পর্কের মাঝে শান্তি বিরাজ করুক।
অথবা সে নিজেকেই মিথ্যা প্রবোধ দিয়েছে কারণ সে হয়তো সত্যি কথাটার ব্যাপারে ভীত ছিল।
বিশ্বাস#৬
ঈর্ষা এবং আধিপত্যপরায়নতা মেয়েদের একটা অংশ
প্রকৃত সত্য
মেয়েরা তাদের স্বত্তাধীন প্রতিটি ব্যাপারে রক্ষণশীল। কিন্তু তারা শুধুমাত্র সে ব্যাপারেই রক্ষণশীল যা তাদের সম্পর্কের মাঝে মর্যাদা রক্ষার দাবীদার। এর মানে এই না যে সে আপনাকে বিশ্বাস করে না; আসলে সে সম্পর্কটাকে পাহাড়া দিয়ে রাখছে।
আপনি হয়তো তার কাছে এতটাই মূল্যবান, হয়তোবা একটা ছোট্ট ভুলের জন্য আপনার এবং তার সম্পর্কের মাঝে খারাপ কিছু ঘটে যাক তা সে কখনোই চায় না।
বিশ্বাস#৭
মেয়েরা খুব আবেগপ্রবণ
প্রকৃত সত্য
মেয়েরা আসলে তাদের অনুভূতিগুলো কখনো গোপন করে না বরং তারা যাকে বিশ্বাস করে তার কাছে তাদের মনের কথা স্পষ্টরুপে বলতে পারে বা চায়। আর আবেগ থাকা অন্যায় কিছু না- আমাদের সবারই সেটা আছে। একমাত্র আবেগের কারনেই মেয়েরা এত বেশি সংবেদনশীল এবং অভিমানী।
আর এই কারণেই ছেলেরা মেয়েদেরকে ভালোবাসে।
তাই,
এই মেসেজটা আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে পাঠান, এবং আপনাকে ধরে রাখার জন্য তাকে সাহস যোগান।
“There are many fine women in the world; but you are the best of them all”. Proverbs 31:29
আর আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে এতক্ষন ধৈর্য ধরে পড়ে থাকেন তবে,
নিচের মেসেজটা আপনার প্রিয়তম কে পাঠান, আপনাকে বোঝার জন্য তাকে সময় দিন।
“Her husband can trust her, and she will richly satisfy his needs.” Proverbs 31:11
সব কিছুর পর একটা কথাই বলছি, কাউকে বোঝতে চাওয়াটা বা পারাটা দোষের কিছু না। সেটাই আমি এখানে বুঝাতে চেয়েছি। কারো পক্ষপাতিত্ব আমার উদ্দেশ্য নয়। তারপরও যদি কারো সেটা মনে হয় তবে তাদেরকে বলছি,
আমার একটু পক্ষপাতিত্বের জন্য যদি একটাও সুন্দর সম্পর্ক মনোমালিন্যের থেকে বেচে যায়, তবে নাহয় তাই করলাম। আমি এতে কোন দোষের কিছু দেখছি না।
আবার এসব চিন্তার বাইরে যে কোন মেয়ে মানুষ নাই তা বললে ভুল হবে। তবে সংখ্যায় কম এমন মেয়েদেরকে আমি হিসেবের বাইরে রেখেছি। কারণ, Exceptional could not be example...
তারপরও বলছি যদি কাউকে আসলেই বুঝতে চান তবে সেটা সব সময়ের জন্য করাটা ভাল। কারণ আপনি এক সপ্তাহ একজনকে ভালোবেসে যদি একদিন খারাপ আচরণ করেন তবে আগের ভালোটার তেমন কোন মূল্যই থাকবে না। ব্যপারটা অনেকটা এরকম,
ফুটবল খেলায় গোলকীপার এমন অনেক কঠিন বল ফেরায় যা মাঝে মাঝে আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়, কিন্তু সে একটা বল মিস করলে সেটা কারো চোখ এড়ায় না, বরং সেটাই সকল এর চোখে গোল হিসেবে ধরা পড়ে।
আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
লেখকের অনুমতি ব্যতীত এই লেখার কোন অংশ কপি/পেষ্ট না করার জন্য বিনীত অনুরোধ করা যাচ্ছে।
নিচের লিখাগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লিখা
Click This Link
Click This Link
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:৫৩