somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ লিওনেল আন্দ্রেস মেসির ২৩তম জন্মদিন

২৪ শে জুন, ২০১০ সকাল ৯:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বকাপে খেলতে এসেছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে। নিজের জন্মদিনের তিন দিন আগে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন দলের অধিনায়কত্ব। অধিনায়ক হওয়ার উচ্ছ্বাসটা প্রকাশও করে ফেলেছেন সরাসরি_ 'এ অনুভূতি অন্যরকম। এটা বলে বোঝানো যাবে না।' বিশ্বকাপে এখনও গোল না পেলেও দলকে জেতাতে রাখছেন অসাধারণ ভূমিকা। তাই আর্জেন্টাইনদের হৃদয়ে ম্যারাডোনার পাশাপাশি এখন আছেন তিনিও। ছেলেবেলা থেকেই স্পেনে বেড়ে ওঠা বলে আর্জেন্টিনার জাতীয় সঙ্গীতও ভালোভাবে গাইতে পারেন না। কিন্তু হৃদয়ে রয়েছে তার প্রিয় স্বদেশই। তাই স্পেনের ডাক উপেক্ষা করতে পেরেছেন। জন্মভূমির জন্য লড়ে যাচ্ছেন বিশ্বমঞ্চে। গ্রিসের বিপক্ষে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে সেটার প্রমাণ আবারও দিলেন। পাশাপাশি জন্মদিনের জন্য নিজেই নিজেকে দিয়ে রাখলেন আগাম এক উপহার। আজ লিওনেল আন্দ্রেস মেসির ২৩তম জন্মদিন। কীভাবে তিনি আজকের মেসি হয়ে উঠলেন সেটাই তুলে ধরা হলো এ লেখায়।
নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে কে চায়! কিন্তু ওই ছোট্ট ছেলেটার জন্য বনের মোষ তাড়িয়েছে যারা তাদের পুরো পৃথিবী আজ কুর্ণিশ করুক। ছেলেটার জন্ম 'বিখ্যাত' রোজারিও শহরে। ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন । ছোট থেকেই খেলাপাগল। পাড়ায় একটা ফুটবল ক্লাব ছিল। নাম গ্রান্ডোলি। ক্লাবের জুনিয়র দলের এক ম্যাচে একাদশ সাজাতে গিয়ে একজন কম পড়ে গেল। কোচ পড়ে গেলেন ঝামেলায়। ওই দলেই খেলতেন তার বড় ভাই রদ্রিগো। কোচ অগত্যা রদ্রিগোর মায়ের শরণাপন্ন হলেন। মা রাজি হলেন না। ছেলের বয়স যে মাত্র চার। অথচ যাদের সঙ্গে খেলবে তারা পিচ্চিটার চেয়ে দুই-তিন বছরের বড়। তবে রাজি হলেন শাশুড়ির চাপাচাপিতে। কিন্তু দেখা গেল, তার সঙ্গে বড়রা কেউই পারছে না! তবে গোল দেয়া হয়নি ওই ম্যাচে। গোল দিল পরের ম্যাচে। এরপর থেকে আর কোনো বিশ্রাম নেই। খালি গোল আর গোল! তখন থেকেই ওর সঙ্গে খেলার জন্য সবাই ব্যতিব্যস্ত। ক্লাসের ফার্স্ট বয়টার সঙ্গে এক বেঞ্চে বসতে কে না চায়। তবে অন্যদের লক্ষ্যটা ছিল ওকে হারানোর। কিন্তু যে শক্তি প্রকৃিতদত্ত, সে শক্তি আটকাবে কে?
ছাত্র হিসেবেও ছেলেটা নজর কেড়েছিল। সব বিষয়েই ভালো নম্বর পেত। সঙ্গীত ও অঙ্কনে আরেকটু ভালো। কিন্তু সবসময়ই বেশি নম্বর পেত শারীরিক শিক্ষায়। শতকরা একশ ভাগ। শিক্ষকরা বলতেন, সাত বছরের এ ছেলেটা সবার চেয়ে আলাদা। পড়ালেখা, খেলাধুলা এবং অবশ্যই তার মানবীয় আচরণে। সবকিছুর গড় হিসেবে স্কুলের অন্যতম সেরা ছাত্র।
আট বছর বয়স থেকে খেলা শুরু হলো বড় পরিসরে। শহরের ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েসে। তার খেলা এমনই মনোমুগ্ধকর ছিল, কোচরা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হতেন এ ছেলেকে আমরা কী শেখাব, ওই তো বরং সবাইকে শেখাতে পারে! প্রতি মৌসুমে তার গোল সংখ্যা ১০০-এর ওপর থাকত! ক্লাবে তার মতোই আরেকজন অসাধারণ ফুটবলার ছিল। গুস্তাভো রোজা। কিন্তু রোজা তার থেকে পিছিয়ে পড়েছিল মানসিক দক্ষতা ও পারিবারিক উৎসাহহীনতার কারণে। যেটা জর্জ ও সেলিয়ার পরিবার তাদের সন্তানের জন্য সুনিশ্চিত করেছিলেন।
১১ বছর বয়সে ছেলেটার জীবনে শুরু হলো এক আলাদা সংগ্রাম। ধরা পড়ল শারীরিক সমস্যা। গরিব বাবা-মায়ের অভাবের সংসারে ঝড় নামিয়ে দিয়ে গেল সোমাটোট্রপিন। ছেলের শরীরে উচ্চতাবর্ধক হরমোনের অভাব, কিন্তু মাসে প্রায় ৯০০ মার্কিন ডলার খরচ করার ক্ষমতা তো তাদের ছিল না। চিন্তিত বাবা-মাকে রক্ষা করলেন চার্লস রেক্সাস। তার ফুটবলীয় জ্ঞান দেখেই ক্রীড়া পরিচালক রেক্সাসকে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার স্কাউটিং ক্যাম্প তাকে নেওয়ার জন্য 'ইয়েস' বলে দিল। রেক্সাসও বার্সেলোনার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জর্জকে জানিয়ে দিলেন। জর্জের পুরো পরিবারই চলে এল স্পেনে। আর তার ছেলের সময় কাটতে লাগল বার্সার ট্রেনিং ক্যাম্পে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতি ঘটতে থাকল ছেলেটার শারীরিক গড়নেরও। এরপর ২০০৪ সালে উত্থান। প্রথমে রোনালদিনহোর ছায়ায় থাকতে হয়েছিল। কিন্তু নিজেকে আলোয় আনতে মোটেও সময় লাগল না। ২০০৬ সাল থেকেই পুরো বিশ্ব তাকে চিনে ফেলল। লিওনেল আন্দ্রেস মেসি নামে বার্সেলোনায় খেলা 'আগামী'র বিশ্ব কাঁপানো আরেকজন আর্জেন্টাইন ফুটবলার তৈরি হচ্ছে। তার উত্থানের ছয় বছর পর আজকে যখন চলছে বিশ্বকাপের উন্মাদনা-আনন্দযজ্ঞ, তখন পুরো বিশ্বের কাছে তিনি এক মহাতারকা। পুরো বিশ্বই হয়তো এজন্য কুর্ণিশ করছে বার্সেলোনাকে। সেটা বার্সার প্রাপ্যও। অবশ্য মেসির প্রতিভা না থাকলে তাদের মূল্যায়নটা কেমন হতো সেটা আর কোনো দিনই জানা সম্ভব হবে না। এমন বিতর্কে তারা জড়াবে কেন? তবুও হয়তো এ জানাটাই সান্ত্বনা_ প্রতিভাবানদের স্থান তাদের অসাধারণত্বের মাঝেই তৈরি থাকে!
(দৈনিক সমকাল থেকে কপি করা হয়েছে)


(শুভ হোক তোমার ২৩তম জন্মদিন
বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে স্মরনীয় করে রাহ তোমার ২৩তম জন্মদিন
আজকের পৃথিবীতে যতফুল ফুটবে সব তোমার জন্য)
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসরায়েলকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশীর মত থাকাই দরকার।

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:১৮



একটি জনগণ কিভাবে নিজেদের জন্য নরক ডেকে আনতে পারে-
গাজার জনগণ তার জ্বলন্ত প্রমান। এরা হামাসকে নিরংকুশ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে কারণ হামাস ইসরায়েলের ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক অস্ত্বিত্বে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্প: শেষ রাতের সুর

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:০১

রাফি সাহেবের বয়স এখন সত্তরের কাছাকাছি। ঢাকার অদূরে, গাজীপুরের একটি ছোট্ট গ্রামে তাঁর বাড়ি। শেষ রাতে তিনি আজও কান খাড়া করে শুয়ে থাকেন। কে গায়? কোথা থেকে যেন একটা অদ্ভুত... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ: মৃতদেহ সৎকার এবং সঙ্গীতসৎকার....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৪৯

প্রসঙ্গ: মৃতদেহ সৎকার এবং সঙ্গীতসৎকার....

কথা সাহিত্যিক শরতচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বহু বছর আগে তার “শ্রীকান্ত” উপন্যাসে ইন্দ্রকে দিয়ে সর্বকালীন এবং সর্বজন গৃহীত একটি উক্তি করিয়েছিলেন, সেটি হলো,- ”মরার আবার জাত কি”!

মৃতদেহ সৎকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্প: শেষ রাতের সুর (পর্ব ২)

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫০

রাফি সাহেবের পড়ে যাওয়ার খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল দ্রুত। সকালের মিষ্টি রোদ গাজীপুরের এই ছোট্ট গ্রামে যখন পড়ছে, তখনই কাজের লোক রহিমা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকল। সিঁড়ির নিচে রাফি সাহেব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপসকামী বিরোধী রাজনীতিবিদদের জন্য পাঁচ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়.....

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১১:০১


..... বলেছেন নাগরিক জাতীয় পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ মিয়া বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস ও ফখরুল সাহেব কে উদ্দেশ্য করে এই মন্তব্য করেছেন। নাগরিক জাতীয় পার্টির নেতারা নিজেদের পচানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×