-আফা মণি...
কাজের লোক মফিজের ডাক শুনে চমকে উঠল নীলা। বাগানের দোলনায় বসে আনমনে দোল খাচ্ছিল সে। মূহুর্ত মাত্র আবার আনমনা হয়ে পড়ল সে নীলা।
মফিজ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবারও ডাকল,
-আফা মণি?
সম্বিত ফিরে পেয়ে মফিজের দিকে তাকিয়ে নীলা দেখল একটি নীল খাম নিয়ে দাড়িয়ে আছে সে। নীলা বলল,
-কিছু বলবে?
-আফনের চিঠি। অহন পিওন দিয়া গেছে।
-ঠিক আছে দাও।
মফিজ চিঠি দিয়ে চলে গেল।
আজ রবিবার। নীলা চিঠি পেয়ে অবাক হতে গিয়েও হলনা। কারণ চিঠিটা প্রত্যাশিত না হলেও অপ্রত্যাশিত ছিলনা। গত একমাস যাবত প্রত্যেক রবিবার তার কাছে এরকম চিঠি আসতে শুরু করেছে। চিঠির ষ্টাইলটাও আলাদা। মোটা নীল খামের ভিতর একটা নীল কাগজ। খাম খুললেই পারফিউমের মিষ্টি একটি ঘ্রাণ আসে নাকে। কাগজের উপরিভাগে আটা দিয়ে লাগানো থাকে একটি ফুলের পাপড়ি, যার উপর লেখা থাকে নীল। আর কাগজের মধ্যভাগে তিন-চার লাইনের মধ্যে লেখা থাকে চিঠির বিষয় বস্তু। হাতের লেখা ও দারুণ। চিঠি দেখলেই বুঝা যাই প্রেরক খুব রুচিশীল মানুষ।
এইমাত্র পাওয়া চিঠিটা নীলা আস্তে আস্তে খুলল। ভাজ খুলতেই প্রথমে চোখে পড়ল গোলাপের পাপড়িতে লেখা নীল।
নিচে লেখা-
কেমন আছেন?
আপনাকে বিরক্ত করার জন্য দূঃখিত। কিন্তু অবুঝ মনটাকে শান্ত করার জন্য আমার সামনে অন্য কোন পথ খোলা ছিলনা। আশা করি ক্ষমাই পাব।
ভাল থাকুন।
নীলা ভেবে পায়না এ চিঠি কোত্থেকে আসে, কে বা দেয়। সে তার বন্ধুদের মাঝে এরকম কাউকে খুজে পাইনা। তার দাদার বন্ধুরা প্রায় তাদের বাসায় আসে, সেখানে কেউ থাকলে একমাসের মধ্যে নিশ্চিত ধরা পড়ত।
কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনা সে। চিন্তিত মনে সন্ধ্যায় বাগান হতে বাসায় ফিরল সে।
( চলবে)