এক দুপুরের ঢেউ
আজ আর ফেরার তাড়া নেই
পথের উপর ডাকাত পড়েছে
ঘরও নিশ্চয় ডাকাতময়।
তুমি বরং স্নান করে নাও
এইখানেই ডেকে আনব হলুদ দুপুর
জানো তো—
পৃথিবীর পায়ে আজ নেই সোনার নূপুর।
শিস বাজাও, শিস। শরীরে জাগাও কাম
শরীর ছাড়া মানুষও ভুলে যায় নিজের ধাম।
কার দিকে ফেরাব এ মুখ
কার উপর আস্থা রাখি
কোথায় রাখি এ হাত?
বিষাক্ত নখ খামছে ধরেছে অগ্নিদগ্ধ প্রেমিকার মুখ
আমি কেবলি এইসব দেখি, আর পড়ি মানুষের মন।
পৃথিবীতে গাঢ় হচ্ছে মানুষের কান্না।
কার উপর আস্থা রাখি।
কোথায় রাখি এ হাত?
কাকে ভালোবাসবো?
কার দিকে ফেরাব এ মুখ?
বিলবোর্ড, প্রচার সেল কিংবা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম
প্রতিদিন পড়ে যাচ্ছে মিথ্যার সরল নামতা।
কোথাও কেউ নেই
নেই অসংখ্য দরজাময় প্রশান্তির প্রাসাদ। তারপরও ...
অগণিত মানুষ হাঁক ডাকে- ঘরমুখো হয়।
কাকে ডাকব?
কাকে জড়িয়ে ধরবো বুকের পাশে।
প্রেমিকা লুকিয়েছে মুখ বেদনার আস্তিনে।
কার উপর আস্থা রাখি।
কোথায় রাখি এ হাত?
কাকে ভালোবাসবো?
কার দিকে ফেরাব এ মুখ?
তারপরও মনে হয় দেখি না!
প্রতিদিনই তোমাকে দেখছি। তারপরও মনে হয়
কতদিন দেখি না।
তবে কি আমি অন্ধ! নাকি চোখজোড়া
লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছে?
অথচ দেখো-
তোমাকে না দেখার অসুখ ছায়ার মতো জড়িয়ে রেখেছে।
আমার ঘুম নেই। চোখের প্রতি আস্থাহীনতা কেবলি বাড়ছে!
তোমাকে ছাড়া কার ওপর আস্থা রাখি বলো-
নদীও এখন ভাগাড়। আর পাখিরা?
তাড়িত মশার মতো দূর অতীতের গান শোনায়।
তবে কি আস্থাহীনতার সংকটে মানুষ?
যদি আর ফিরে না আসি
যদি আর ফিরে না আসি- কী এমন হবে?
পথের বাঁকের মতো কত কিছুই তো মিলিয়ে যায়!
তারপরও তোমাকে বলি-অধীর আগ্রহে কেউ নিশ্চয়
ডানাভাঙ্গা পাখির মতো পথে বসে আছে-আর?
আমি না হই হারিয়ে গেলাম!
বস্তুত আমার বা তোমার জন্য কিছুই আসে যায় না।
দূরে আছি কিংবা কাছাকাছি কোথাও
দূরে আছি কিংবা কাছাকাছি কোথাও
অন্যখানে অন্যভাবে- পরস্পর দেখি!
আমরা হয়তো ভুলে গেছি
ফেলে আসা সেইসব দিনরাত্রির কথা!
এখনো কাছাকাছি আছি কিংবা নেই
কারো কি খুব বেশি কিছু আসে যায়?
ঘামের গন্ধ শরীরে কেবল লেপ্টে থাকে
বুঝিবা সবকছিু আবার কিছুই না
তবুও আছি-দূরে আছি কিংবা কাছাকাছি কোথাও
অন্যখানে অন্যভাবে- পরস্পর দেখি
নিজের উপর রাগ করার পর
০১.
এখন না ফিরলে এমন কিছুই হবে না!
তুমি বরং একটু জিরিয়ে নাও।
খুব বেশি গরম পড়লে
খুলে নিতে পারো গতরের কাপড়!
লজ্জার কিছু নেই।
আয়নার উপর পর্দা ঝুলছে। আর
মানুষ নিজেকে দেখার কথা ভুলে গেছে
অনেকদিন আগেই।
০২.
অফিসপাড়ার দেয়ালের রঙ দালালের মুখের মতো
বিশ্বাস না হলে একবার দেখে নিতে পারো
অন্তত আমাকে অবিশ্বাস করে আগে।
০৩.
কিছুই বলার নেই। তবুও অপেক্ষা করি
কেন জানি মনে হয়-
কেউ একজন ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে!
০৭.০৭.১৫
আগারগাঁও, ঢাকা
কন্যার প্রতি
জন্মদিন এলেই নিজের একাকিত্বের কথা মনে করো
মনে করো- মায়ের কথা।
তোমার জন্মের সময় মা একমুঠো স্বপ্নের বিনিময়ে
মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেছিল।
আর আমি?
হাসপাতালের বারান্দায় আলিঙ্গন করেছি
মূর্হুমুহু করতালি!
তোমার জন্মদিনে কাক ছাড়া একটা পাখিও গান ধরেনি।
তুমি হয়তো জানবেই না এ কথা কোনোদিন।কেননা,
তোমার জন্মের বহু আগেই এ শহরের বনদস্যুরা
ভূমিদস্যু হয়ে গিয়েছিল।
এমন অনেক বিষয় আছে-
যা তোমার মাকে জিজ্ঞেস করলেও হয়তো উত্তর পাবে না
কেবল মাকড়সার জালের মতো রহস্য বাড়বে।
সুতরাং এইসব কখনো জানতে চেও না।
যেমন জানতে চেও না
তোমার জন্মোৎসবে কারা এসেছিল?
কারা আসেনি?
শুধু মনে রেখো-
যারা এসেছিল সবাই তোমার স্বজন!
যারা আসেনি তারাও তোমার স্বজন!
আর একটা কথা-জীবন ছোট্ট বলে
কখনো আফসোস করো না
আফসোস করো না জীবন জটিল বলে
শুধু মনে রেখো-
সবকিছুকে ছাপিয়ে আনন্দটাই বড়কথা। আর
আর সবচেয়ে বড় কি জানো?
মানবিক মন!