১৩ই ডিসেম্বর দিবাগত রাত, এই রাতে পৃথিবীর বুকে জন্ম নেন এক ব্লগার। জন্মের আগে তিনি টানা দুই বছর ব্লগ পড়েছে। তারপর রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্যমে সামহোয়্যার ইনব্লগে তার জন্ম হয়। জন্মের সময় তার প্রোফাইল পিকচারে কি ছিলো এটা তিনি মনে করতে পারছেন না বলে দুঃখিত!
দুঃখিত, যারা বিখ্যাত তাদের নিয়ে অন্যেরা লিখে। আমার লেখার কেউ নাই, তাই নিজের জন্য নিজেই কিবোর্ড হাতে তুলে নিলাম। ১৩ই ডিসেম্বর ব্লগে এক হালি বছর হয়ে গেলো। এক হালি বললে আগে মাথায় প্রথম আসতো ডিমের কথা, এখন আসে আর্জেন্টিনার কথা। সেভেন বললে আগে যেমন লাকির কথা মনে হতো এখন হয় ব্রাজিলের কথা। যাক আর্জেন্টিনা শেষ, আমি ব্রাজিলের দিকে এগিয়ে যেতে চাই!
একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি কর্মশালা করাবার জন্য ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট খুঁজছে। উদ্দেশ্য তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের ব্লগের ব্যাপারে জানানো। কয়েকজন ব্লগার ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ব্লগের ব্যাপারে বলবে। বেশ কাছের পরিচিত একজন জানালো তারা চায় আমি যাতে সেখানে যাই। আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাহলে এই হাল? আমাকেও ব্লগার ভাবে! এমনভাবে না করেছি যেন আমি প্রচার বিমুখ! তারপর তিনি আরেকদিন রিকোয়েস্ট করলেন। বিনয়ের সাথে আবার না করলাম। এর পরেই মনে হলো না যাই, কত সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে থাকবে। আমি চশমার ফাঁক দিয়ে তাদের দেখবো। কিন্তু ভাব করবো আমি আসলে তাদের দেখছি না। মজা হবে খুব। ভাবতে লাগলাম আমি আসলে কি বলবো সেখানে গিয়ে। অবশ্যই ভালো কাপড় চোপড় পরে যেতে হবে। কাপড় চোপড় ভালো না হলে তুমি ব্লগার না বারেক ওবামা হলেও সুন্দরীরা পাত্তা দিবে না। টিশার্ট জিন্স ভালো। জুকারবার্গও টিশার্ট জিন্স পরে নানা জায়গায় গিয়ে কথাবার্তা বলে। দৈনিক এই বিষয়ে ভারী কিছু কথা রেডি করতে থাকলাম মনে মনে। কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। অতএব অপেক্ষা করতে লাগলাম আরেকবার সাধিলে যাইবার। দিন যায়, কিন্তু তিনি রিকোয়েস্ট করেন না। এদিকে ডেটও আসি আসি করছে। একদিন নক দিলাম ভদ্রলোককে। শরীরের অবস্থা জিজ্ঞেস করলাম। বউ বাচ্চা ভালো আছে কিনা জিজ্ঞেস করলাম। উনি ভালো লোক সেটাও বললাম। কিন্তু তিনি তবুও বুঝলেন না আমি কি বলতে চাই! এভাবে একদিন ডেটটা পার হয়ে গেলো। তার কয়েকদিন পর সেই মানুষটার সাথে দেখা হয়ে গেলো টিএসসিতে। কাছে এসে মুখ কালো করে বললেন “আপনি কিন্তু যাইতে পারতেন ভাই”!
আমি আর কিছু বলতে পারিনি!
সামহোয়্যারইন ব্লগ আমার কাছে বড় আবেগের নাম! ছোটবেলায় খেয়ালের বসে লেখালেখির কথা বাদ দিলে, দীর্ঘ ব্রেকের পর আমি প্রথম সামুতেই লিখেছি। কত কত ভালো ভালো লেখকের লেখার হোমপেজে আমার ছাইপাশও ছিলো! এটাই বোধহয় উৎসাহ। সে উৎসাহটা প্রিয় সামুর। লেখার একটা জায়গা দরকার ছিলো খুব। তারপর ঘুরতে ঘুরতে রসালো, বিচ্ছু। তারপর বাংলাদেশ প্রতিদিন, আমাদের সময়। এই ঘুরতে ঘুরতে এই বই মেলায় বই! আমি স্বপ্নের কাছাকাছি, আমাকে দাঁড়াতে দিয়েছে সামু।
বইয়ের নাম ঠিক করেছি “অদ্ভুত তুমিহীনতায় ভুগছি”! মানে তোমাকে খুব মিস করছি। শব্দটা একদিন স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম ফেসবুকে। কয়েকদিন পর দেখলাম এটা অন্যের নামে দেদারছে ব্যবহৃত হচ্ছে। অতীত ইতিহাস মনে রেখে দ্রুত ঠিক করে নিলাম এই নামে একটা গল্প লিখবো। লিখে ফেললাম। সেটা বইতে দিলাম। ১৩টি গল্পের অদ্ভুত তুমিহীনতায় ভুগছি আসবে জাগৃতি প্রকাশনী থেকে। প্রচ্ছদ করছেন ধ্রুব এষ। (প্রচ্ছদের কাজ চলছে, শেষ হয়নি)
উপরের লেখাটা কি দিয়ে শেষ করবো বুঝতে পারছি না। সামুতে অনেকদিন পোস্ট দিই না। ঠিকমত আসা হয় না। এজন্য ক্ষমাপ্রার্থী। প্রায় ভাবি কাল থেকে আবার নিয়মিত ব্লগিং করবো। কিন্তু পড়ালেখাও যেমন কাল থেকে করবো বলে কালেভদ্রে করেছি, ব্লগিংও বোধহয় এমন হয়ে গেলো। সবাই ভালো থাকবেন। প্রচ্ছদ কমপ্লিট হলে দেখাবোনি
ব্যাক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত