পৃথিবীর মহা বিজ্ঞানীরা যাদের বুদ্ধির ছোঁয়ায় পাল্টে গিয়েছিল আমাদের হাজার বছরের লালিত বিজ্ঞান আর ইতিহাস ব্যাপকভাবে। সে সকল বিজ্ঞানীদের মধ্যে থেকে প্রথম সারির ৫ জন সম্পর্কে আজকের আমার এই লেখনি। আসুন তাহলে শুরু করা যাক।
আলবার্ট আইনস্টাইনঃ
e
বিশ্বজগত্ সম্পর্কে আমাদের ধারণায় যাঁরা আমূল পরিবর্তন সাধন করেছেন, তাঁদের একজন আলবার্ট আইনস্টাইন। তিন পাতার একটি পেপার লিখতে তার জীবনের ১০ টি বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন , সেই বিখ্যাত আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্য তিনি বিশ্বখ্যাত। আইনস্টাইন বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞানকে নবজীবন দান করেছেন। ১৯১৯ সালে যখন তার রিলেটিভিটি থিওরি প্রমাণিত হল। তিনি ১৯২১ সালে নোবেল প্রাইজ ও পান।
এক নজরে-
জন্ম- মার্চ ১৪, ১৮৭৯
মৃত্যু- এপ্রিল ১৮, ১৯৫৫ (৭৬ বছর)
বাসস্থান- জার্মানি, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
নাগরিকত্ব- জার্মান (১৮৭৯-৯৬, ১৯১৪-৩৩), সুইজারল্যান্ডীয় (১৯০১-৫৫), মার্কিন (১৯৪০-৫৫)
কর্মক্ষেত্র- পদার্থবিজ্ঞান
পরিচিতির কারণ- সাধারণ আপেক্ষিকতা, বিশেষ আপেক্ষিকতা, ব্রাউনীয় গতি, আলোক তড়িৎ ক্রিয়া, ভর-শক্তি সমতুল্যতা, আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণ, একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্ব, বসু-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান, ইপিআর হেঁয়ালি
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার- Nobel prize medal.svg পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯২১), কপলি মেডেল (১৯২৫), ম্যাক্স প্লাংক মেডেল (১৯২৯)
স্যার আইজ্যাক নিউটনঃ
সেই যে একটা আপেল পড়ল মাথায় , আর তিনি দিলেন তার law of gravity আর সূচনা করলেন ক্লাসিকাল ফিজিক্স এর। স্যার আইজ্যাক নিউটন বিশ্বের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। ১৬৪২ সালের বড়দিনে ইংল্যান্ডের উলসথ্রপে তাঁর জন্ম। ১৬৮৭ সনে তার বিশ্ব নন্দিত গ্রন্থ ফিলসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা প্রকাশিত হয় যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন। বলবিজ্ঞানের ভিত্তিভূমি রচনা করেছেন নিউটন। রৈখিক এবং কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রের মাধ্যমে তিনি এই ভিত্তি রচনা করেন। আলোকবিজ্ঞানের কথায় আসলে তার হাতে তৈরি প্রতিফলন দূরবীক্ষণ যন্ত্রের কথা এসে যায়। একই সাথে তিনি আলোর বর্ণের উপরএকটি তত্ত্ব দাড় করান যা একটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন।
এক নজরে-
জন্ম- জানুয়ারি ৪, ১৬৪৩
মৃত্যু- মার্চ ৩১, ১৭২৭ (৮৪ বছর)
বাসস্থান- ইংল্যান্ড
জাতীয়তা- ইংরেজ
কর্মক্ষেত্র- ধর্মতত্ত্ব, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, প্রাকৃতিক দর্শন, এবং আলকেমি।
পরিচিতির কারণ- নিউটনীয় বলবিজ্ঞান, সর্বজনীন মহাকর্ষ, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ক্যালকুলাস, আলোকবিজ্ঞান, দ্বিপদী উপপাদ্য, ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা।
টমাস আলভা এডিসনঃ
টমাস আলভা এডিসন ছিলেন মার্কিন উদ্ভাবক এবং ব্যবসায়ী। তিনি গ্রামোফোন, ভিডিও ক্যামেরা এবং দীর্ঘস্থায়ী বৈদ্যুতিক বাতি সহ বহু যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। যে যান্ত্রিক সভ্যতার সূচনা হয়েছিলো এডিসনকে সেই সভ্যতার জনক বলা হয়। ডিসনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী আবিষ্কার হল বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার। যদিও তিনি আসলে ৫০ বছরের পুরনো আইডিয়া কে ইম্প্রভ করেছেন ফিলামেন্ট ব্যবহার করে। তার পরও বলা যায় এটি একটি যুগান্তরই আবিস্কার। তিনি বলতেন "প্রতিভায় আমি বিশ্বাস করি না,পরিশ্রমই হল প্রতিভার মুল কথা"।
এক নজরে-
জন্ম- ফেব্রুয়ারি ১১, ১৮৪৭
মৃত্যু- অক্টোবর ১৮, ১৯৩১ (৮৪ বছর)
জাতীয়তা- অ্যামেরিকান
কর্মক্ষেত্র- আবিষ্কারক, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী
পরিচিতির কারণ- গ্রামোফোন, ভিডিও ক্যামেরা এবং দীর্ঘস্থায়ী বৈদ্যুতিক বাতি
গ্যালিলিও গ্যালিলিঃ
ইতালির পিসা শহরে ১৫৬৪ সালে এক দরিদ্র পরিবারে গ্যালিলিও গ্যালিলি জন্মগ্রহন করেন। তিনিই প্রথম বিজ্ঞানী যার হাত ধরে আধুনিক বিজ্ঞান আর বিজ্ঞানীরা বেড়িয়ে আসতে লাগল এরিস্টটলীয় ভাবধারা থেকে। আধুনিক বিজ্ঞানের জন্মের জন্য যে কোনো একক ব্যক্তির চেয়ে গ্যালিলিওর অবদান সবচেয়ে বেশি। তিনি চিরায়ত পদার্থবিদ্যার প্রধান প্রতিষ্ঠাতা। গ্যালিলিও প্রথম বিপ্লব আনেন বল বিদ্যায়।প্রায় দুইহাজার বছর ধরে চলে আসা মতবাদ," পৃথিবী স্থির রয়েছে"। সূর্যসহ সব গ্রহসমূহ তাকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু তিনি বললেন তার বিপরীত কথা। তাকে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক এবং এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানের জনক হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।
এক নজরে-
জন্ম- ফেব্রুয়ারি ১৫, ১৫৬৪
মৃত্যু- জানুয়ারি ৮, ১৬৪২ জাতীয়তা- ইতালীয়ান
বাসস্থান- গ্র্যান্ড ডুচি অফ টুস্কানি
কর্মক্ষেত্র- জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত।
পরিচিতির কারণ- গতিবিজ্ঞান, দূরবীন, সৌর জগৎ।
চার্লস ডারউইনঃ
তিনিই সর্বপ্রথম অনুধাবন করেন যে সকল প্রকার প্রজাতিই কিছু সাধারণ পূর্বপুরুষ হতে উদ্ভূত হয়েছে এবং তার এ পর্যবেক্ষণটি সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এটি অনেক বিতর্কিত।
এক নজরে-
জন্ম- ১২ ফেব্রুয়ারি ১৮০৯
মৃত্যু- ১৯ এপ্রিল ১৮৮২ (৭৩ বছর)
বাসস্থান- ইংল্যান্ড।
নাগরিকত্ব- ব্রিটিশ নাগরিক ।
কর্মক্ষেত্র- প্রকৃতিবিদ।
পরিচিতির কারণ- বিগলের সমুদ্রযাত্রা, প্রজাতির উৎপত্তি সম্পর্কে, প্রাকৃতিক নির্বাচন।
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার- রয়েল মেডেল (১৮৫৩), ওলাস্টন মেডেল (১৮৫৯), কপলে মেডেল (১৮৬৪)।
অনেক তো হল এইবার একটা বোনাস- বাংলা কবিতার সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই কবির কিছু লাইন ।