কাল রাতে আইসিসি বিশ্ব ২০বিশে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে হেরে গেল। ফেবুতে দেখলাম বন্ধুরা খুব ক্ষোভ প্রকাশ করছে। তাদেরকে শান্ত করার জন্য লিখলাম, হেরে গেলেন তো রেগে গেলেন? রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন! একবার হারেন, দুইবার না! কিছু বন্ধু শান্ত হলো।

অতঃপর মধ্যরাতে যখন সা.ইনে লগ ইন করেছি, দেখি যে আমার সর্বশেষ পোস্টটি গায়েব! টাসকি খেলাম! পোস্টটির জন্য তৈরি করা শট লিংকটি ভিজিট করে দেখলাম একটি নোটিশ, 'এই পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে,বিস্তারিত জানতে পোস্টটির লেখকের সাথে যোগাযোগ করুন ।' মস্করা বটে, আমার পোস্ট ডিলিট করে দিয়ে আবার আমার সঙ্গেই যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে! এই প্রথম সা.ইন আমার কোন পোস্ট ডিলিট করলো! তাও কিনা সা.ইনের ভালো চেয়ে লেখা পোস্ট! সা.ইনে পাঁচ বছর সাত মাস ধরে ব্লগিংয়র উত্তম প্রতিদান বৈকি! মনে হলো, সা.ইনের সঙ্গে একটা সম্পর্কের অবসান হচ্ছে। ভাবছেন রেগে গেলাম? না!
এখন পর্যন্ত আমার মডারেশন স্ট্যাটাস কখনও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু পোস্ট যখন গায়েব হলো আশঙ্কা করছিলাম, সেফ থেকে হয়তো জেনারেল হয়ে গেছি। স্ট্যাটাসটি খেয়াল করে দেখলাম, আমি এখনও 'একজন নিরাপদ ব্লগার'! ব্লগে যতোবারই ঢুকি, 'আপনি একজন নিরাপদ ব্লগার' কথাটি দেখে আমার কেন যেন হাসি পেত! এই প্রথম কোন হাসি পেল না। এই প্রথম নিজেকে 'নিরাপদ ব্লগার' হিসেবে অনুভূত হলো! আমি দেখতে পেলাম, কোন এক মডু দাঁত কেলিয়ে হাসছে! ভাবছেন রেগে গেলাম? না!
হঠাৎ কি মনে হতে ব্লগ ইনফরমেশন প্যানেলের দিকে নজর দিলাম। লক্ষ্য করলাম আমার ড্রাফট (২)। কিন্তু আমার ড্রাফট তো ছিল ১টি! ২টি কিভাবে হলো? ভূতক্রিয়া নয় তো! ক্লিক করে দেখলাম, যে পোস্টটি গায়েব হয়ে গেছে সেটি এখন ড্রাফটে! কী চমৎকার দেখা গেল! চেক করে দেখলাম পোস্টটি এখনও অক্ষত আছে। পোস্টটি আবার আমার ব্লগে ফিরিয়ে আনলাম!
ঘটনাটি কি হলো? ঘটনা হচ্ছে ঐ পোস্টটি এমনিতেই কোন নির্বাচক বা মডারেটরের পছন্দ হয়নি, ফলে পোস্টটি নির্বাচিত পাতায় ছিল না। তারপরও ঐ পোস্টে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল তা দেখে মডারেটরের ভালো লাগেনি, পিত্তি জ্বলে যাচ্ছিল। রাতে আলোচনা জমে উঠতে পারে এই আশংকায় মডারেটর পোস্টটি ড্রাফট করে দিয়ে খেয়ে-দেয়ে ঘুমাতে গেলেন। পোস্টটি কোন ব্লগীয় নীতিমালা ভঙ্গ করেনি। কিন্তু মডারেটর বা নির্বাচকদের যে 'নিজস্ব ব্লগীয় ভীতিমালা' আছে সেই 'ভীতিমালার' আওতায় পোস্টটি যেমন নির্বাচিত পাতায় আসেনি, সেই একই ভীতিমালায় পোস্টটি ড্রাফট করে গায়েব করে দেয়া হয়েছিল। মডারেটর আসলে আমাকে একটি অশনি সংকেত দিতে চেয়েছে। বলতে চেয়েছে, 'মামা সাবধান! আজ পোস্ট ড্রাফট করছি, কাইলকা ডিলিটি করমু, পরশু ডাইরেক্ট ব্যান! হাঃ হাঃ হাঃ'! ওরে বাবা, ভয় পাইছি!

ব্লগে এখন নীতিমালার চেয়ে ভীতিমালা, কূটনীতিমালার চর্চা বেশি করছেন কতিপয় মডারেটর, নির্বাচক ব্লগার। নিশ্চিত থাকুন, এই পোস্টটিও অলিখিত ভীতিমালার আওতায় চলে আসবে।
ব্লগীয় ভীতিমালা নিন্দাবাদ! ব্লগীয় ভীতিমালা নিপাত যাক! (এইবার রাগছি!

সামহোয়্যার ইন কর্তৃপক্ষকে একটি কথা আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, সা.ইন আমাদেরকে একটি অসাধারণ ব্লগ প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে, এ জন্য আমরা সা.ইনের কাছে অশেষ কৃতজ্ঞ। তাই বলে সা.ইনের বা কারও এটা ভাববার কোন সুযোগ নেই যে, সা.ইন আমাদেরকে দয়া করছে! গুগল আমাদেরকে দয়া করছে না, সা.ইনও আমাদেরকে দয়া করছে না। আমরা এই সার্ভিসগুলো ব্যবহার করে তাদেরকে বরঞ্চ সফল করে তুলেছি, সমৃদ্ধ করছি। আমরা যেখানেই পেরেছি নিজ থেকে সা.ইনের প্রচার করেছি এর প্রসার বাড়ানোর জন্য। ব্যক্তিগতভাবে আমি পত্রিকায় লেখালেখি ছেড়ে শুধু ব্লগে (সা.ইনে) লিখছি। পত্রিকার তুলনায় এখানে পাঠকসংখ্যা হাজারগুণ কম হলেও, পাঠক/ব্লগারদের সঙ্গে সরাসরি ভাব বিনিময় করা যায় বলে আমি এখানে লিখতেই ভালবাসি। অনেকের মতো অন্য কয়েকটি ব্লগে নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও আমি এখানেই নিয়মিত আছি। অনেক আগে প্রথম আলো ব্লগের আমন্ত্রণ পেলেও ওখানে আমি নিবন্ধন পর্যন্ত করিনি। কারণ আমার প্রেম সা.ইনের সঙ্গে এবং আমি বহুগামী না। কিন্তু এখন আমাকে বিকল্প চিন্তা করতে হচ্ছে। প্রশ্ন উঠতে পারে কেন? উত্তরটি পরের বাক্যে খুঁজুন। আমরা সা.ইনকে যেভাবে দেখি, সা.ইন আমাদেরকে সেভাবে দেখে না কেন? প্রেম একতরফা হতে পারে না!

অনেকে বলবেন আমরা কয়েকজন চলে গেলে শূন্যস্থান পূরণ হয়ে যাবে। আমি বলবো এটা ভুল ধারণা, আমি কখনওই আপনার মতো হতে পারবো না। কোকের স্বাদ আপনি পেপসিতে পাবেন না। কোক হয়তো কাঁচের বোতল থেকে প্লাস্টিকের বোতলে বা টিনের ক্যানে যেতে পারে। কিন্তু কোকের স্বাদ পেতে হলে আপনাকে কোকই খেতে হবে। অ্যাম আই রাইট অর অ্যাম আই রাইট?
_______
এই সেই গায়েব হওয়া পোস্ট: নোটিশবোর্ড ও ব্লগারদের দৃষ্টি আকর্ষণ!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৭