কোন পুস্তকে যেনো পড়িয়াছিলাম রবীন্দ্রনাথের চিত্ত তাঁহার ভাবীর প্রতি ঈষৎ দূর্বল ছিলো। উহা দেখি আমিও কিঞ্চিত অনুপ্রাণিত হইয়া পার্শ্ববর্তী বাটির ভাবীর সহিত ভাব করিবার তরে মনস্থির করিলাম। কিন্তু ভাবী তাহা খুবই সহজে বুঝিতে পারিলেন। তাহার সন্নিকটে আমারে ডাকিয়া কহিলেন " মাঝে মাঝে এসো বাছা, তোমারে দেখিলে আমার নিজ কনিষ্ঠ ভ্রাতার কথা মনে পড়িয়া যায়।"
ভাবিলামঃ রবীন্দ্রনাথ আমাকে কি দিয়াছেন
পাইলামঃ ব্যর্থ প্রেমিক হইবার লজ্জ্বা
দাড়ি কাটিবার জন্য মুখে কিছু গোটার মতো উঠিতে থাকিলো। ভাবিলাম এইবার একটু দাড়ি বড় করিয়া দেখি, হয়তো উপকার পাইতেও পারি। কালক্রমে দাড়ি কিছুটা বড়ও হইয়াছিলো। তাহা দেখিয়া আমার পিতা শুধাইলেন, "রবীন্দ্রনাথেরও কিন্তু বড় দাড়ি ছিলো। শুধুই কি দাড়ি বড় করিতেছো, নাকি উনার মতো বিদ্বানও হইতেছো। "
ভাবিলামঃ রবীন্দ্রনাথ আমাকে কি দিয়াছেন
পাইলামঃ বাবার কাছ হইতে কিছু লজ্জ্বা
একদা আমাদের ক্লাসের কিছু ছাত্র মিলিয়া পরামর্শ করিলাম যে ক্লাস হইতে পলায়ন করিয়া একটি ক্রিকেট ম্যাচ খেলিবো। যেইরকম ভাবিয়াছিলাম সেইরকম করিয়াই পলায়ন করিলাম আর চিত্তে আনন্দ লইয়া খেলিতে থাকিলাম। পরদিন স্কুলে পদার্পণ করিয়াই পূর্ব দিবসের কৃতকাজের জন্য ধৃত হইলাম এবং মাস্টার কর্তৃক বেদম প্রহারিত হইলাম। মাস্টার কহিলো, "স্কুল পলায়ন করিলেই রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায় না, বৎস।"
ভাবিলামঃ রবীন্দ্রনাথ আমাকে কি দিয়াছেন
পাইলামঃ মাস্টারের কাছ হইতে কিছু লজ্জ্বা
রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সংগীত আমরা প্রত্যহ ক্লাস শুরু করিবার পূর্বেই গাহিতাম। একদিন আমার আর ইহা সহ্য হইলো না। সকলেই গাহিতেছে "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি" কিন্তু আমি গাহিতে থাকিলাম "জ্বালা জ্বালা জ্বালা, এই অন্তরে" এবং উত্তেজিত হইয়া নাচিতেও থাকিলাম। কিন্তু সারিবন্ধ ছাত্রদের মদ্ধে অসারিবদ্ধ আমি পিটি স্যারের দৃষ্টি হইতে বাচিতে পারিলাম না। আমাকে সকলের সম্মুখে লইয়া গেলেন এবং উত্তম মধ্যম প্রদান করিলেন। ভাবিলাম "জ্বালা জ্বালা জ্বালা, এই অন্তরে" এই সংগীত তিনি রচনা করিলে এই প্রহার আমাকে সহ্য করিতে হইতো না।
ভাবিলামঃ রবীন্দ্রনাথ আমাকে কি দিয়াছেন
পাইলামঃ জাতীয় সংগীত রচনা করিয়া কিয়দ লজ্জ্বা