ফেব্রুয়ারি আসলেই ভাষা আর ভাষা শহিদদের জন্য আমাদের দরদ উতলে উঠে। আমিও এর ব্যাতিক্রম নই। সেই দোষ আর দায়টুকু স্বীকার করেই, গোল্ডফিস মেমরির অধিকারি স্বজাতির সামনে ছবির মাধ্যমে সেই মহান ইতিহাসকে স্মরণ করছি।
এই সেই ঐতিহাসিক আমতলা যেখান থেকে ভাষা আন্দোলনের সুত্রপাত। শুধু ভাষা আন্দোলন নয়, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষি এই আমতলা ।
ঐতিহাসিক সেই আমতলায় ছাত্রদের মিটিং, ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সাল ।
১৪৪ ধারা ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত, ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সাল।
[অনেক চেস্টা করেও পুলিশের গুলি করা বা শহিদদের ছবি যোগাড় করতে পারিনি। কেউ কি লিংক দিতে পারেন?]
দেশের জন্য ভাষার জন্য আত্মদান করাটা খুব খুবই কঠিন কাজ। সেই কাজটি যারা দেশকে ভালোবেসে করে গিয়েছেন, তাদের উত্তরসুরি হয়ে আমাদের এ কি আচরণ?
যুগের দোহাই পেড়ে খোদ মাতৃভাষাকে অবমাননা করা, বিজাতিয় ভাষা আর সংস্কৃতিকে মাথায় তুলে একদিকে নৃত্য করা, অন্যদিকে ২১শে ফেব্রুয়ারি আসলেই পাকা ভাষাপ্রেমিক হয়ে যাওয়া, এই দ্বিমুখিতা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে।
ভাষা কি কেবল ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রিক? বাংলা একাডেমি নামের একখানা শ্বেত হস্তিকায় আতেলের কারখানা আছে বটে। সেখানকার তিনারা এক মাস বই বেচার মেলা নিয়ে যেমনটি ব্যস্ত, তাতে বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণায় তার সময় কোথায়?
এ রকম চললে, এমন দিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন সিং সাহেবরা দিল্লি থেকে উড়ে এসে বলবেন, হিন্দি একমাত্র হিন্দিই হবে রাস্ট্রভাষা। আমাদের ঘরে ঘরে যেভাবে হিন্দি বাসা বেধেছে, যেখানে শিশু থেকে বুড়ো পর্যন্ত হিন্দি প্রেমে পাগল, সেখানে কোন একজন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এম পির সেই দেশপ্রেমিক সাহসি প্রতিবাদি কন্ঠ পার্লামেন্টে শোনা যাবে না। কোন ভাষাপ্রেমিকদের আমতলায় মিছিল মিটিং করতে দেখা যাবে না। ১৪৪ ধহারা ভঙ্গ করার মত সৎ সাহসে কোন ছাত্র ছাত্রি বিক্ষোভে উত্তাল হবে না।
যে কাজ পাকিস্থানিরা লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালিকে হত্যা করেও করতে পারেনি, বিনা রক্ত ক্ষয়ে বিনা একটি বুলেট খরচ ব্যাতিরেকেই ইন্ডিয়ানরা সেই কাজ করে ফেলছে।
আপন ইচ্ছায় পরাধীনতার শৃংখলে বন্দি হলে, শিকারির কি দোষ?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:০১