এই লেখাটার জন্য লেখককে স্যালুট।।।।
বিষয়বস্তু খুবই সময়োপযোগী। তার চেয়েও ভালো হয়েছে উপস্থাপন। সমস্যা আর বয়াবহতাটা বুঝানো হয়েছে শৈল্পিক ভাবে। এই লেখাটা খুব দরকার ছিল। আমার মনে হয় কিছু সংখ্যক কুরুচিসম্পন্ন ভদ্রবেশী(!) এর মুখ বন্ধ হবে ব্লগে। এই লেখার পরও যদি কেউ এ নিয়ে আরও খারাপ কথা বলে তাহলে তাকে আর কিছু বলার নেই।
আবারও স্যালুট লেখককে।
পল্লব মোহাইমেন | তারিখ: ০৮-১০-২০১০
* ২ মন্তব্য
* প্রিন্ট
*
ShareThis
পরের সংবাদ»
অলঙ্করণ: তুলি
*
‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিস্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।’
এটি বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (২০০৯ সালে সংশোধিত)-এর ৫৭ নম্বর ধারার ১ নম্বর উপধারা। এই ধারায় অপরাধ করলে তা শাস্তিযোগ্য। ৫৭ (২) ধারায় বলা হয়েছে—‘কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক দশ বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সাইবার অপরাধ পৃথিবীর সব দেশেই আলোচিত। অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড চুরি, ওয়েবসাইটে আক্রমণ, হ্যাকিং, ই-মেইলে হুমকি, অনলাইনে অন্য কারও ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি ছড়িয়ে দেওয়ার হার বাড়ছেই। বাংলাদেশেও সাইবার অপরাধের হার বাড়ছে। বিশেষ করে, মেয়েদের ছবি বা ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া এখন একটা সামাজিক সমস্যাই। প্রথম আলোর মঙ্গলবারের ক্রোড়পত্র নকশায় সামাজিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার পরামর্শের বিভাগ ‘সুবন্ধু সমীপেষু’সহ বিভিন্ন পত্রিকার এ ধরনের পাতায় ইদানীং এ সমস্যাগুলো দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে, বিয়ে করতে না পেরে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আগে অর্থাৎ সম্পর্ক থাকার সময় ধারণ করা ছবি বা ভিডিওচিত্র দেখিয়ে মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। আবার ইন্টারনেটেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব ছবি কখনো গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয়, যা এমনিতেই আইনের পরিপন্থী; কখনোবা প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীর সম্মতিতে একান্ত ব্যক্তিগত ছবি তোলা হয়। ছেলে বা মেয়েটি পরস্পরকে বিশ্বাস করে ছবি ধারণ করতেই পারে। তা তাদের নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছবি যে কারণেই তোলা হোক না কেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন ২০০৬ অনুযায়ী সেই ছবি ইন্টারনেটে বা অন্য কোনো মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই ছবি ছড়ানোর ব্যাপারে যার ভূমিকা থাকবে, সে অপরাধী।
সাম্প্রতিক সময়ে একজন তারকার ব্যক্তিগত কিছু ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট থেকে অসংখ্য ব্যক্তিগত কম্পিউটারে সেসব সংগৃহীত হতে থাকে। ফলে বিষয়টি এখন আলোচনায়। সাধারণ অনেক মেয়ের ছবিও এভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। সেই মেয়েটি ও তার পরিবার সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী আইনের পথে পা বাড়াতে চায় না সমাজ-সংসারের কথা ভেবে।
প্রযুক্তির অগ্রগতিতে ছবি তোলা, তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া এখন কোনো ব্যাপারই না। কিছু অপরাধী ও প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষ যেকোনো প্রযুক্তির মতো তথ্যপ্রযুক্তিকেও অপরাধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সাইবার আইনের আরও কঠোর প্রয়োগ এবং সাইবার অপরাধীর বিচার হওয়াটা জরুরি।
শাস্তি হওয়া প্রয়োজন
‘এখন পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে কোনো শাস্তি হয়নি। কিন্তু অন্তত একটা শাস্তি হওয়া উচিত। শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন হলে পরবর্তী সময়ে এমন অপরাধ করার হার কমে যাবে’—এমনটা মনে করেন এই আইনের খসড়া প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত আইনজীবী তানজীব-উল আলম। আইসিটি আইনে এসব অপরাধ অ-আমলযোগ্য (নন-কগনিজ্যাবল) হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে [ধারা ৭৬(২)]। ফলে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অভিযোগ দায়ের করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইসিটি আইনের অপপ্রয়োগ রোধেই এ ধারাটা রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।
তানজীব বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটলে যে কেউ মামলা করতে পারেন। রাষ্ট্রও স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করতে পারে। বাংলাদেশে আইসিটি আইন যা আছে, তা দিয়ে এসব অপরাধের বিচার করা যাবে। এখন এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ দরকার। প্রয়োজন আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় সাইবার অপরাধ বিষয়ে শক্তিশালী আলাদা শাখা গঠন; যেখানে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা থাকবেন।’
সাইবার ট্রাইব্যুনাল দ্রুত গঠন করা উচিত
২০০৬ সালে আইসিটি আইন অনুমোদনের সময়ই এতে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলা হয়েছে (ধারা ৬৮)। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়নি। আইনটির ৭৪ নম্বর ধারায় আছে, সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এ আইনের অধীন অপরাধগুলো দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার্য হবে।
যেহেতু সাইবার অপরাধ প্রযুক্তিনির্ভর, তাই বিশেষায়িত ট্রাইব্যুনাল হলে সাইবার অপরাধের বিচার আরও সহজ হয় বলে আইনবিদেরা মনে করেন। তাঁদের মতে, প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিচার বিভাগের সাধারণ আদালতের পক্ষে বোঝা একটু দুষ্কর। তানজীব-উল আলম বলেন, ‘সাইবার ট্রাইব্যুনাল হলে সেখানে প্রযুক্তি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে অপরাধ বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিতরা থাকবেন। শুধু ঢাকায় একটা হলেও সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা জরুরি।’ একইভাবে সাইবার আপিল ট্রাইব্যুনালও (ধারা ৮২) গঠন করা প্রয়োজন।
আইনের কঠোর প্রয়োগে প্রয়োজন বিশেষ উদ্যোগ
ক্রমেই বেড়ে চলা সাইবার অপরাধ দমনের জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় চলতি বছরই চালু হয়েছে সাইবার থানা। প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধির তথ্যমতে, কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজারে সাইবার থানা নামে একজন উপকমিশনারের নেতৃত্বে একটি আলাদা শাখা গঠন করা হয়েছে। এই সাইবার থানায় প্রশিক্ষিত কর্মীরা কাজ করছেন। প্রযুক্তিগত অবকাঠামোও রয়েছে এই থানায়।
বাংলাদেশ পুলিশে সাইবার অপরাধ দেখার জন্য আলাদা শাখা রয়েছে। ই-মেইল প্রতারণা, ই-মেইল হুমকি, মানহানিকর লেখা বা ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা ইত্যাদি বিষয়ে তদন্ত করে পুলিশ।
সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশ বিভাগে প্রযুক্তিগত অবকাঠামো বা বিশেষজ্ঞ নেই। সাইবার অপরাধ দমনে বা তদন্তে বাইরের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া হয় বলে জানালেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, সাইবার অপরাধের তদন্তে বেশ কিছু সফলতাও আছে পুলিশের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগত ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল, ইন্টারনেটে ছবি প্রকাশ পেলে সামাজিকভাবে বিব্রত হওয়ার ভয়ে ভুক্তভোগী বা তার পরিবার মামলা-মোকদ্দমায় যেতে চায় না। তবে এসব ক্ষেত্রে পুলিশ নীরবে-নিভৃতে অনেক ঘটনার সমাধান করে দিয়েছে।
চাই সাইবার-জগতের ওয়াচডগ
ক্রেডিট কার্ড চুরি, বড় কম্পিউটার নেটওয়ার্কে হামলা থেকে শুরু করে কম্পিউটার ভাইরাস, ছবি, ভিডিও ছড়ানো—নানা ঢঙে প্রতিনিয়ত সাইবার অপরাধ চলছে দুনিয়াজুড়ে। এসব অপরাধ প্রতিরোধ বা অপরাধী শনাক্ত করার অনেক উদ্যোগও আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আছে কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি—সার্ট)। বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে সার্ট। সার্টের কাজ হলো কম্পিউটার নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণ করা। যখনই ইন্টারনেটে বা যেকোনো নেটওয়ার্কে অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে, সার্ট সে ব্যাপারে জানতে পারে। জানার সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানায়। ফলে নেটওয়ার্কের কোনো ঘটনাই অজানা বা অদেখা থাকে না। আন্তর্জাতিক সার্টের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশেও সার্ট গঠিত হয়েছে। তবে সরকার সেটাকে এখনো অনুমোদন দেয়নি। এ কারণে শুধু আন্তর্জাতিক সার্টের কোনো প্রয়োজনে বিডি-সার্ট এখন কাজ করে।
বিডি-সার্টের চেয়ারম্যান এবং বিডি কম অনলাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ বা র্যাব চাইলেই আমরা সহযোগিতা করব। যেকোনো ঘটনায় তদন্ত করলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। আমাদের পুলিশ সাইবার অপরাধ বিষয়ে আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে।’
সাইবার-জগতে অপরাধী শনাক্ত করা সব সময়ই সম্ভব। সুমন জানান, ইন্টারনেটে আপনি যা-ই করেন না কেন, তার স্বাক্ষর আপনি রেখে যাবেন। ফলে সাইবার অপরাধীকে ধরা সম্ভব। ইন্টারনেট প্রটোকল ধরে ধরে এগিয়ে গেলে কোথাও না কোথাও মূল অপরাধীকে শনাক্ত করা যাবে। ভুয়া ই-মেইল, হুমকি, ছবি ছড়ানো—সবকিছুরই উৎস বের করা সম্ভব। প্রশাসন চাইলেই এ কাজ হবে। এই প্রক্রিয়ায় অপরাধী শনাক্ত করার উদাহরণ বাংলাদেশেও রয়েছে।
বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ ধীরে ধীরে বাড়ছে। তাই সব সময় সাইবার-জগৎ পর্যবেক্ষণ করার জন্য কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার স্বীকৃত সার্ট গঠিত হলে যেকোনো ঘটনাই নজরে আসবে। এ ক্ষেত্রে অপরাধ প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। পরে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে। অপর দিকে আইসিটি আইনে অভিযোগ বা মামলা দায়েরের যে বিষয়টা আছে, সার্টের মাধ্যমে তাও করা যাবে। যেহেতু প্রযুক্তিগতভাবে অপরাধী শনাক্ত করার বিশেষজ্ঞ ও দরকারি জ্ঞান বাংলাদেশেই আছে, তাই সার্টের মতো দল গঠন করা ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে।
ক্ষতিটা মেয়েদেরই হয়
নাট্যব্যক্তিত্ব সারা যাকের ‘সুবন্ধু সমীপেষু’ বিভাগে পাঠকের ব্যক্তিগত নানা সমস্যার পরামর্শ দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তাঁর মতে, ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে পরে ব্ল্যাকমেইল করা বা সেই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই ছেলেরা ঘটিয়ে থাকে। অপরাধটা ছেলেরাই করে। আর পুরো ক্ষতি মেয়েদেরই হয়। তিনি বলেন, ‘একটা সম্পর্ক তৈরি হয় বিশ্বাস ও আস্থার ভিত্তিতে। মেয়েটি তো তখন তার সঙ্গীকে বিশ্বাস করে। এখানে তো তাকে বলার কিছু নেই। পরে ছেলেটি সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করলে মেয়েটি বিপদে পড়ে। তাই বিপদের কথা ভেবে মেয়েদের সচেতন থাকতে হবে। সঙ্গীর মেজাজ, মানসিকতা, আচার-আচরণ বোঝা দরকার।’
শাস্তির দৃষ্টান্ত শুরু করতে হবে এখনই
সাম্প্রতিক ঘটনাটা শুধু নয়; মোবাইল ফোন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কারোরই ব্যক্তিগত ছবি ছড়িয়ে পড়তে পারে। ছড়িয়ে পড়ছেও। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেয়েরা ভিকটিম হওয়ায় যত দ্রুত সম্ভব সামাজিক কারণে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। ইন্টারনেটের ওয়েবসাইট থেকে ছবি হয়তো অপসারণ করা যায় দ্রুতই, কিন্তু মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে অসংখ্য কম্পিউটারে, মোবাইল ফোনে সেটি ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু শাস্তির কোনো নজির নেই, তাই পরবর্তী সময়ে আরেকজন একই কাজ করে কোনো মেয়ের, তার পরিবারের সর্বনাশ করে সহজেই।
চার দেয়ালের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী বা বাগদান হওয়া প্রাপ্তবয়স্ক কোনো নারী-পুরুষ কী করবে, কী করবে না—সেসব তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। পরে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক না-ও থাকতে পারে। নতুন কারও সঙ্গে সম্পর্ক হতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে তোলা ছবি যখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে, তখন সেটি অপরাধ। আইন তা-ই বলে। অনেক সময় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমেও এসব ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এমন সব ঘটনারই আইনি তদন্ত হওয়া উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক যে ঘটনা—তার পরম্পরা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, দুজন মানুষের সম্পর্ক, প্রত্যাখ্যান ও নতুন সম্পর্ক এখানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সামাজিক, পেশাগত ও মানসিকভাবে বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। অপরাধটি যেখানে স্বচ্ছ, তাই পরবর্তী পদক্ষেপ তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীর গ্রেপ্তার এবং শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আইনি প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার বা জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি আটকে আছে শুধু একটি অভিযোগ বা মামলার অভাবে। মামলাটি করবে কে? রাষ্ট্র কি কোনো দায়িত্ব নেবে না? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কি কোনো উদ্যোগ নেওয়ার নেই? ভবিষ্যতে অসংখ্য মেয়ের কথা ভেবে এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত এখনই।
সূত্র: প্রথম আলো।