চায়না অতীত পৃথিবীর সব থেকে উন্নত দেশ বা জাতী যেটাই বলি না কেন সব গুলির সাথেই নিজেকে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত। মানব ইতিহাসের মধ্য যুগে যখন নৌ যানবাহনের বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটেছিল তখন থেকেই মানুষ নিজের সীমানা ছাড়িয়ে নতুন বিশ্বকে খুঁজে বের করতে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে পাড়ি দিয়েছে বিশাল আর ভয়ংকর সব সমুদ্র পথ। সারা বিশ্ব যখন নিজেদের উন্মুক্ত করেছে সকলে সামনে তখন মানব সভ্যতার সব থেকে উন্নত জাতী নিজেদের করেছিল কেন্দ্রভূত। অনেকটা সাড়া বিশ্ব থেকে নিজেদের আলাদা করে ফেলেছিল তারা। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে আবার তারা উন্মুক্ত করেছে নিজেদের সাড়া বিশ্ব দরবারে। যদিও খুব কড়া নিয়মের মধ্য দিয়ে তারপরেও করেছে।
তাই বলা হয় পৃথিবীর ইতিহাসের যত কিছু আবিস্কার করা বাকি আছে তার বেশির ভাগ আছে এই চায়নাতে। আর আজ আমি এই চায়না নিয়েই লেখা লিখব। তবে এই বিশাল ভান্ডারের মধ্যে দিয়ে আমি আজ শুধু মাত্র আলোচনা করব চায়নার পিরামিড নিয়ে। "চায়নায় পিরামিড এবং এলিয়েন" লেখায় চায়নার পিরামিড এবং ভীনগ্রহবাসিদের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ আলোচনা করব এই পিরামিড আবিস্কার করা নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক রোমাঞ্চকর সেই ইতিহাসের কথা,
সালটা ১৯২০, ইতিহাসবিদ Henri Cordier লেখেন, "China’s ancient past is denied both to us and its population. Its grand past is slowly unveiled, similar to how Egypt’s was revealed. Later on, one learned of buildings, standing stones and other monuments that were not mentioned by the Chinese historians"।
মনে করা হয়ে থাকে সাড়া বিশ্বে আবিস্কৃত পিরামিডের সংখ্যার থেকে বেশি সংখ্যক পিরামিড আছে শুধু মাত্র চায়নাতে। চায়নায় অনাবিস্কৃত পিরামিড গুলির মধ্যে সর্ব প্রথম একটি পিরামিডের ছবি তোলেন কর্নেল Maurice Sheehan, ১৯৪৭ সালে একটি সামরিক পর্যবেক্ষন বিমান থেকে। চাইনিজ পিরামিডের অস্তিত্ব এবং একই সাথে পিরামিডের এই ছবিটি সহ কর্নেল Maurice Sheehan এর ঘটনাটি সবার প্রথমে জনসম্মুক্ষে প্রকাশ করে The New York Times একই সালের মার্চ মাসে। এই প্রতিবেদনে কর্নেল Maurice Sheehan বলেন যে পিরামিডটি ৩০০ মিটার উচু এবং ৪৫০ মিটার চওড়া।
এর পরের দিন এই ছবিটি পুনঃরায় প্রকাশ করে Los Angeles Daily Express, কিন্তু ছবিটি প্রকাশ করার ক'দিনের মাথায় Los Angeles Daily Express এবং The New York Times একটি লিগাল নোটিশ পান চায়নার নানকিন প্রদশের প্রশাষন থেকে যেখানে তারা উল্লেখ করেন, "the existence of such pyramids is not backed up by evidence"। অর্থাৎ তারা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে এই পিরামিডের অস্তিত্বের কোন প্রমান নেই, মানে এক কথায় এরকম কোন পিরামিড নেই এলাকাতে। এখানে বলে রাখা ভাল কর্নেল Maurice Sheehan যে পিরামিডের ছবিটি তুলেছিলেন সেটি ছিল চায়নার এই নানকিন প্রদেশের।
চায়নার এই লিগাল নোটিশ পাবার পরে বাধ্যবাধকতা থাকায় পত্রিকা গুলি পরের দিন এই নোটিশের একটি প্রতিলিপি ছাপাতে বাধ্য ছিল। যেহেতু তৎকালীন সময়ে কেউ চাইলেই চায়নাতে যে দেখে আসতে পারত না যে এগুলি আছে কিনা তাই এই পিরামিডের অস্তিত্ব প্রমানের কোন উপায় ছিল না কারো কাছে। অনেকেই এটা বিশ্বাস করে নেন যে কর্নেল Maurice Sheehan এর তোলা ছবিটি ভূয়া আর তার দেওয়া ভাষ্য সম্পূর্ন মিথ্যা।
আর তৎকালীন সময়ে ক্যামেরার অবস্থা কেমন ছিল তাতো জানেন। তখনকার ক্যামেরা গুলির ছবি আসলে বর্তমান সময়ের মত এত স্পষ্ট ছিল না। আরেকটু মনে করিয়ে দেই সালটা কিন্তু ১৯২০ সাল। এই ছবি নিয়ে ফ্রান্সের লেখক Patrick Ferryn বলেন যে, "the photographs do not reveal any markings that would allow us to measure the true dimensions. Its height was probably an incorrect estimate. It is probably a burial vault; it definitely looks like one”। যেহেতু জ্ঞানি মানুষ, তাই তার কথা কিন্তু সকলেই বিশ্বাস করেছিল। কেননা আসলেই ছবিটি দেখে এই পিরামিডের অস্তিত্ব জোড়ালো কন্ঠে কেউই স্বীকার করার সাহস দেখায়নি। অনেকেই ভেবেছিল এটি আসলে আলোছায়ার খেলা মাত্র আর সাথে যেহেতু চায়নার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য রয়েছে যে এমন কোন পিরামিড নেই তার মানে এই পিরামিড আসলেই নেই।
তারমানে, চায়নায় কোন পিরামিড নেই আর সাড়া বিশ্ব তা অকপটে বিশ্বাস করে নেয়।
ধীরে ধীরে বছর গড়াতে থাকে। ৫০ এবং ৬০ এর দশকে চায়না মোটামুটি ক্ষমতাধর কিছু দেশের মানুষের ভ্রমনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে এই সময়ের মধ্যে ধর্মীয় আচার পালনের জন্য চায়নায় মানুষ নির্মিত টিলার সংখ্যা বেশ বৃদ্ধি পায়। এই টিলা গুলি আবার অনেকটাই এই সব পিরামিডের মত। ফলে এই সব টিলার মধ্য থেকে এই পিরামিড গুলিকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা বেশ দুঃসাধ্যকর বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
এই সময়ে Bruce Cathie নামে এক নিউজিল্যান্ডের পাইলটের এই সকল পিরামিড নিয়ে লেখার আগ্রহ জন্মে। এসময় তিনি এই পিরামিড নিয়ে লেখেন "The Bridge to Infinity"। অনেক দিন পরে তিনি আবার চাইনিজ পিরামিডের বিষয়টি সকলের সামনে নিয়ে আসেন। অবশ্য তিনি এই পিরামিডের অস্তিত্বের পক্ষে ছিলেন ভাবলে তা একান্ত আপনার ভুল ধারনা। তবে চায়নার পিরামিড এর কথা তিনি আবার সকলের সামনে নিয়ে আসেন যেটা বলতে গেলে মোটামটি সকলেই ভুলতে বসেছিল। তার লেখা বইটিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, চায়নার দূতাবাসের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মতা তাকে বলেছেন যে এখানে কোন পিরামিডের অস্তিত্ব নেই তবে পুরাতন কিছু কবর আছে যেগুলি বেশ উচু করে বানানো। তবে সেগুলি কোন ভাবেই পিরামিডের পর্যায়ে পরে না।
বেচারা Bruce Cathie, তখন যদি তিনি জানতেন যে কত বড় ভ্রান্ত ধারনা নিয়ে আছেন, তাহলে নিশ্চই এরকম কিছু লিখত না বা পিরামিডের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিত না। অবশ্য তার মৃত্যু হয়েছিল ২০১৩ সালে। তাই বলা যায় তার এই ভ্রান্ত ধারনা থেকে তিনি বেড়িয়ে আসতে পেরেছিলেন।
অনেক ভাবেই এই সকল পিরামিডের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে চায়না কিন্তু তাই বলে কি ইতিহাসকে আর বদলে দেওয়া যায়। না তা যায় না তাহলে কি আজ আর এই সকল পিরামিড আবিস্কার করা সম্ভব হত? না মোটেও হত না।
Bruce Cathie এর বই প্রকাশ হবার পরে যখন সাড়া বিশ্বের সামনে আবার এই চাইনিজ পিরামিডের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন চলে আসে তখন শুরু হয় আবার বিভিন্ন গবেষনা আর অনুসন্ধান। আর এই উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় "Segalen Mission" নামে একটি অনুসন্ধান দল। আর এই অনুসন্ধানের মধ্যে দিয়েই আবিস্কৃত হয় Ts’in বংশের প্রথম বাদশার কথা।
এই বাদশা কিন্তু যেনতেন বাদশা না, বলতে গেলে বর্তমান চায়নার এমন এক বাদশা যার অতীত ইতিহাস এখন পর্যন্ত চাইনিজরা গর্বের সাথে স্বরন করে। কেন করে আর কি করেছিল তা শুনতে নিশ্চই পেটের মধ্যে মোচড় দেওয়া শুরু করে দিয়েছে?
এই বাদশার নাম "Che Houang ti"। তিনি তার রাজত্ব্য আমলে পন্ডিতদের ভবিষ্যতবাণীতে জেনেছিলেন যে ১৯৭৪ সালের দিকে বাইরেক কোন এক হিংস্র জাতী গোষ্টি চায়নায় আক্রমন চালাবে আর তাতেই ধ্বংস হবে চাইনিজ সভ্যতা বা জাতী। আর নিজের জাতীকে বাঁচাতেই তার নির্দেশে তৈরি হয়েছিল "চায়নার মহাপ্রাচীর"। বোঝেন এবার শুধু মাত্র পন্ডিতে ভিবিষ্যত বানী শুনেই এই কাজ তাহলে আরো কত কিছু করেছেন। আর করবেন না কেন? তার হাত ধরেই তৈরি হয়েছে বর্তমান চায়না। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? এবার যা যা বলব তা শুনলে নিজেই বিশ্বাস করতে বাধ্য হবেন। আগে চায়না ভিন্ন ভিন্ন খন্ডে বিভক্ত ছিল আর সেই সকল খন্ডে চালু ছিল ভিন্ন ভিন্ন ভাষা। তিনি তার রাজত্ব আমলে চায়নার সব ভূখন্ড এক করে বিশাল চায়না প্রতিষ্ঠা করেন এছাড়াও সকল ভাষা বিলুপ্ত করে চাইনিজ ভাষার প্রবর্তন করেন যাতে সকলেই এক ভাষায় কথা বলে। তার এই সকল কাজের জন্য বিভক্ত চায়না এক হয়েছিল আর গড়ে তুলে ছিল এক চায়না।
তবে তিনি মারাত্মক ভাবে কল্পকথা বিশ্বাস করতেন। তিনি এটাও বিশ্বাস করতেন যে তার মৃত্যুর পরে আবার তিনি পুনঃরায় জীবন ফিরে পাবেন। যদি তার মৃতদেহ অক্ষত থাকে। আর একারনেই তিনি বানিয়েছিলেন পিরামিড আর সাথে যা করেছিল তা শুনলে আপনার মাথায় বিশাল বড় একক্ষান বাজ পরবে। তার মৃত দেহকে পাহাড়া দেবার জন্য তিনি বানিয়েছিলেন বিশাল পোড়া মাটির সেনাবাহিনী। যারা তাকে মৃত্যুর পরেও পাহাড়া দিবে। এনিয়ে আরো বিস্তারিত জানতে "মাটির সেনাবাহিনী" লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন। অবাক না হয়ে যে পারবেন না তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরো অবাক করার মত কথা কি জানেন তার জনয় তৈরি করা পিরামিড বিশ্বের মধ্যে যত পিরামিড আছে তার মধ্যে ৪র্থ বড় পিরামিড। ১৯১৩ সালে প্রথমবার এই পিরামিড এর উচ্চতা আর আয়তন মাপা হয়। এই পিরামিডের উচ্চতা ৪৮ মিটার আর দৈর্ঘ ৩৫০ মিটার যা ইজিপ্টের গ্রেট পিরামিড থেকেও ১২০ মিটার বেশি।
আমি এই বাদশার কর্মকান্ড আলোচনা করতে যেয়ে মূল লেখা থেকে কিঞ্চিৎ সরে গেলাম। চলুন আবার মুল লেখায় ফিরে যাই,
Bruce Cathie বই প্রকাশের পরে যখন আবার এই পিরামিড সকলের আলোচনার বিষয়ে পরিনত হল, তখন Segalen Mission খুঁজে বের করল প্রায় ১১৫ খ্রীষ্টপূর্বের ইতিহাসবিদ Sseuma Ts’ien ( জীবনকাল ৮৫ থেকে ১৩৫ খ্রীষ্টপূর্ব) এর একটি লেখা। যেখানে প্রথম বারের মত বাইরের দুনিয়ার কাছে পরিচিত হলেন মহান বাদশা Che Houang ti। তার এই লেখা থেকেই জানা যায় যে Che Houang ti মারা যান ২১০ খ্রীষ্টপূর্বে। শুধু যে এই মহান বাদশার জীবন সম্পর্কে জানা যায় তা নয়, এই মহান বাদশার মৃত্যু পরবর্তী সময়ের কিছু ঘটনাও জানা যায় Sseuma Ts’ien এর লেখা থেকে। মহান বাদশা Che Houang ti এর মৃত্যুর পরে চায়নায় ক্ষমতার জন্য বেশ মারামারি শুরু হয়। এসময়কার ক্ষমতাধর জেনারেল Hiang Yu আক্রমন করে বসেন Che Houang ti এর পিরামিডে আর Che Houang ti এর পরবর্তী জীবনের জন্য সংগ্রহ করে রাখা সোনা সহ মূল্যবান সব জিনিষ লুট করে নিয়ে যায়, শুধু রেখে যায় পোড়ামাটির তৈরি মূর্তি। এই ঘটনাটি ঘটে ২০৭ খ্রীষ্টপূর্বে।
Segalen Mission এই পিরামিড সহ খুঁজে বের করে আরো অনেক পিরামিড, তাদের ধারনা চাইনিজ সরকার যেগুলিকে শুধু মাত্র কবর বলছে আসলে সেগুলির মধ্যেও অনেক গুলি পিরামিড হতে পারে। তখন থেকেই একটি কথা মুখে মুখে চলে আসছে যে চায়না হচ্ছে পিরামিডের স্বর্গ।
Segalen Mission তৈরি করার পরের থেকেই চায়নায় খোঁজ মিলতে থাকে একে একে অনেক গুলি পিরামিডের। কিন্তু এখানেই শেষ না। এই Segalen Mission বাদেও অনেকে অনেক পিরামিড আবিস্কার করেছে তবে তা Segalen Mission গঠন করে পিরামিড খোঁজাখুঁজির পরে। এর পরে চায়নার সরকার সরাসরি এই সকল পিরামিডের কথা অস্বীকার করা বন্ধো করে দেয়। তাই বলে যে একদম সকলের সামনে নিজেদের মেলে ধরে তাও কিন্তু না। মাঝামাঝি একটা অবস্থান নেয়, এই আর কি। তবে ২০০০ সালের দিকে ঘোষনা দিয়ে নিজেদের অনেকটাই উন্মুক্ত করে দেয় বহির্বিশ্বের কাছে। কিন্তু ততদিনে প্রায় সব পিরামিড আবিস্কার করা হয়ে যায়।
এখন আপনাদের আরো কয়েকটি পিরামিড আবিস্কারের ইতিহাস শুনাবো, যেগুলিও কোন অংশেই কম রোমাঞ্চকর না।
একদম প্রথমে বলেছিলাম, ১৯২০ সালে ইতিহাসবিদ Henri Cordier মাধ্যমে বহির্বিশ্বে প্রথমবার চায়নার এই সকল পিরামিড সম্পর্কে সকলকে অবগত করেন। কিন্তু এবার আপনাদের নিয়ে যাব আরো পিছনে, সালটা ১৯১২, Fred Meyer Schroder এবং Oscar Maman নামে দু'জন ভ্রমন পিপাসুর ডাইরিতে লেখা কিছু কথা নিয়ে। যদিও তখন তাদের এই ভ্রমন কাহীনি কেউ বিশ্বাস করেননি কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে কেউ অকপটে স্বীকার করবেন তাদের লেখা কথা গুলি।
১৯১২ সালে Fred Meyer Schroder এবং Oscar Maman দু'জন ভ্রমন পিপাসু বিশ্ব ভ্রমনে বেড়িয়ে, ঘুরতে ঘুরতে চলে যান চায়নার সানজি অঞ্চলে। এখানে আবার বর্বর মঙ্গোলদের বেশ উতপাত। তারা বুদ্ধি করে তামাক এবং মোমবাতি এই সকল মঙ্গোলিয়ানদের উপহার দিয়ে তাদের খুশি করেন। এর পরে তারা এই মঙ্গোলিয়ানদের সহায়তায় চায়না এবং মঙ্গোলিয়ানদের সীমানা বরাবর অবস্থিত একটি মন্দিরে বসবাসরত সাধু Bogdo এর কাছে যান। Bogdo কিন্তু কারো নাম না। এটি একটি উপাধি, যার ইংরেজি মানে "The Holy One", যিনি এই উপাধিতে নির্বাচিত হন তাকে সবাই Bogdo নামেই ডাকে এবং তাকে সন্মান করে। Bogdo এর সাথে কথা বলার সময় সে Meyer Schroder এবং Oscar Maman কে জানান যে তারা যে পথে এগোচ্ছে এই পথে এগোতে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি তারা কয়েকটি পিরামিডের সন্ধান পাবেন। তবে বেশির ভাগ পাবে Sian Fu শহরের ধারে কাছে। যদিও Bogdo কোন দিন এই মন্দিরের বাইরে থাকেননি কিন্তু Meyer Schroder এবং Oscar Maman এর ভাষ্য মতে তিনি জানতেন যে মিশরে পিরামিড আবিস্কৃত হয়েছে। এছাড়াও Bogdo এর ভাষ্য মতে Meyer Schroder অনুমান করেন যে এই এলাকায় অবস্থিত পিরামিডটি উচ্চতায় ৩০০ মিটার আর আয়তনে ৫০০ মিটারের মত হবে, আর এই সব কথা তিনি তার ডাইরিয়ে নথিভুক্ত করেন।
Meyer Schroder এর ধারনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এই পিরামিড হবে মিশরের গ্রেট পিরামিড থেকে প্রায় ২০ গুন বড়।
Bogdo আরো বলেন যে, "এই সকল পিরামিডের বয়স কমপক্ষে ৫০০০ বছর (১৯১২ সালে), তবে তার কাছে যে নথি পত্র আছে সেগুলোতে এই পিরামিডের বয়স আরো পুরাতন।"
তবে বর্তমানে (১৯১২ সাল) পিরামিডের অবস্থা নিয়ে Bogdo এর ভাষ্য Meyer Schroder নিজের ভাষায় লিপিবদ্ধো করেন, "In the past, they were apparently partly covered with stones, but those have disappeared. A few stones lie at the bottom. It is an earthen pyramid, with giant gullies on its sides. They were the reason why the stones loosened and fell down. Its sides are now partially covered with trees and shrubs. It almost looks a natural hill. We rode around the pyramid, but did not discover any stairways or doors"।
Hartwig Hausdorf আমেরিকার বিমান বাহিনীর উর্ধোতন কর্মকর্তার অধীনে চায়নার এই Sian Fu শহরের ম্যাপ তৈরি করার কাজে হাত দেন। এসময় তারা বিমানে করে অনেক ছবি তোলেন এবং উপগ্রহের মাধ্যমে অনেক ছবি তোলেন। এসময় তারা শুধু মাত্র Sian Fu শহরেই আবিস্কার করেন ১৬টি পিরামিড। ধারনা করা হয় এই Sian Fu শহর থেকেই চায়নার সভ্যতার শুরু হয় আর এই কারনেই এখানে এত বেশি পিরামিডের খোঁজ পাওয়া যায়।
চায়নায় কি পরিমান পিরামিড আছে তার উদাহরন দিতে গেলে Hartwig Hausdorf এর একটি অভিজ্ঞতা উল্লেখ করলেই বোঝা যাবে, তিনি বলেন যে, তিনি এবং তার গ্রুপ যখন শহরের মধ্যে একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন তখন তারা হোটেলের রাস্তার ঠিক উল্টা দিকেই দেখতে পান ছোট একটি পিরামিড।
এবার বোঝেন, কি পরিমান পিরামিড আছে Sian Fu তে। এরকম অনেক পিরামিড জেনে না জেনে চাইনিজরা নিজেরাই ধ্বংস করে ফেলেছে। তা না হলে চায়নায় আরো অনেক বেশি পিরামিডের অস্তিত্ব পাওয়া যেত।
Hartwig Hausdorf চায়নার একজন প্রফেসর Wang Shiping এর সাথে খুঁজে পাওয়া এসব পিরামিড নিয়ে আলোচনা করেন। প্রফেসরের মতে এই সকল পিরামিড মুলত তৈরি করা হয়েছিল পূর্বের দিনের বাদশাদের ড্রাগনের পিঠে করে পৃথিবীতে নামার উদ্দেশ্যে। আর সব থেকে পুরাতন পিরামিডের বয়স প্রায় ১৫০০০ খ্রীষ্টপূর্ব।
এখানে একটা কথা বলি যা আপনার ধারনা একটু হলেও পালটে দিবে। মহান বাদশা Che Houang ti কোন এক সময় তার লেখা একটি ডায়রি বা নিজের গোপন কোন একটি নথিতে লিখেছিলেন তিনি "আকাশ মানব" বা "ঈশ্বর মানব" দের বংশধর"।
আবার সেই এলিয়েন!!!