ঘোড়ার চলন (Gait) মূলত দুই ধরণেরঃ একটি হলো স্বাভাবিক (Natural) আর অন্যটি স্বচ্ছন্দ (Amble)! স্বাভাবিক চলন প্রায় সব ঘোড়ার ক্ষেত্রেই জন্মগত। কিন্তু স্বচ্ছন্দ চলনের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দরকার হয় প্রশিক্ষণের। এই স্বাভাবিক চলনকে আবার চারটি শ্রেণীতে ফেলা হয়েছেঃ হাঁটা বা কদম চলন (Walk), Trot, Canter এবং Gallop।
ঘোড়ার হাঁটা
হাঁটার (Walk) সময় একটি মাত্র পা উপরে ওঠে আর বাকি তিন পা থাকে মাটিতে। হাঁটাকে বলে চতুর্স্পন্দিত চলন। অর্থাৎ প্রতি পদক্ষেপে চারটি beat শোনা যায়। এক্ষেত্রে চলার গতি হয় প্রতি ঘন্টায় ৪ মাইল।
ঘোড়ার দুলকি চলন
দুলকি চাল (Trot) একটি দ্বিস্পন্দিত চলন। এই চলার গতি হলো প্রতি ঘন্টায় ৮ মাইল। এটার ঘোড়ার জন্য সবচেয়ে ভালো চলন, শক্তি খরচ হয় অনেক কম। অনেক সময় ধরে ঘোড়া চলতে পারে। এই চলনে কর্ণ বরাবর পা জোড়া ব্যবহৃত হয়। বিশেষ এক ধরণের দুলকি চালকে বলে Piaffe. এক্ষেত্রে ঘোড়া সাধারণত একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে অর্থাৎ লেফট-রাইট করে আর কি!
ক্যান্টারবেরি চার্চ, ইংল্যান্ড
এবার আসা যাক অর্ধবল্গিত বা Canter চলনে। ইংল্যান্ডের ক্যান্টারবেরিতে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক চার্চের নাম Canterbury Cathedral। এই চার্চে যখন পুণ্যার্থীরা দর্শনে আসতো তখন তারা ঘোড়া যে গতিতে চালাতো সেই গতিকে বলা হয় Canter.
ঘোড়ার অর্ধ-বল্গিত চলন
এটি দুলকি চালের চেয়ে দ্রুত। এক্ষেত্রে চলার গতি হয় প্রতি ঘন্টায় ১০-১৭ মাইল। এটি একটি ত্রিস্পন্দিত গতি। ঘোড়াসওয়াররা তাদের ঘোড়াকে এই গতিতে চালাতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। পাশ্চাত্যে এই চলনের একটু ভিন্ন ধারা দেখা যায়। সেটাকে বলে Lope (লাফিয়ে লাফিয়ে খরগোশের মতো চলা আরকি!)
ঘোড়ার বল্গিত চলন
আর সবার শেষে বল্গিত চলন (Gallop). সম্ভবত walopথেকে এই শব্দের উৎপত্তি। অর্থাৎ well (ভালো) leap (লম্ফন)। এটিও একটি চতুর্স্পন্দিত চলন। এর গতি সবচেয়ে বেশি। প্রতি ঘন্টায় প্রায় ২৫-৩০ মাইল। মুভি গুলোতে যতোই যুদ্ধক্ষেত্রের দৃশ্যে ঘোড়ার gallop দেখানো হোক না কেন, বাস্তবে কিন্তু এই গতিতে ঘোড়া ১-২ মাইলের বেশি যেতে পারে না।
এছাড়া আরেক ধরণের চলন আছে। সেটাকে বলে Pace. এক্ষেত্রে একই পার্শ্বের দুই পা ব্যবহৃত হয়।
এবার আসা যাক স্বচ্ছন্দ (Amble) চলনের কথায়। এই চলন কার্যক্ষেত্রে বর্তমানে শুধু আমেরিকাতে ব্যবহৃত হয়। কারণ বিশাল কৃষি জমি বা ফার্ম দেখাশোনা করতে গেলে দরকার customized চলন। আর যারা শখের বশে ঘোড়া চালায় তারাও এই চলন
পছন্দ করে। স্বচ্ছন্দ চলনের আবার আছে নানা ধরণের ভঙ্গি, কিন্তু সে কথা হবে অন্য কোনোদিন।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ইংরেজি উইকিপিডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৭