-ওই বান্দরনী শোন, খামচি না দিলে একটা কতা কইতাম।
--- ছড়াডা ইয়াদ আছে? "খোকন হাসে ফোকলা দাঁতে, চাঁদ হাসে তার সাথে সাথে।" চড়ায়া খোকন বানায়া দিমু শালা।
-বস, বেজায় দিগদারির মইদ্দে আছি, ইট্টু মন দিয়া শোন।
--- লক্ষণ সুবিধার না, প্রেম নিবেদন করতে চাস নাকি?
-করলে খামচি দিবি?
---ব্যাটা ট্রাই কইরা দেখ, আলুর পরোটা বানায়া মালয়শিয়া সাপ্লাই দিমু।
-তুই তো জানস, আমি শর্টহ্যান্ড শিখছিলাম। তখন থিকা সব শর্টকাটে কওয়ার অইব্বাস হয়া গেছে।
---তো?
-দেখ, আমি অনেক চিন্তা করে দেখলাম তোর যেরকম খাইমচানির অইব্বাস, বা চেহারা সুরতের যে অবস্থা, না বুঝস তো এখন আর আগের দিন নাই। বা ধর পাংগাস মাছের বুদ্ধি নিয়া এই যে তুই হরহামেশা বিপদে পড়তাছস,......এম্নে তাকাইস না ভইন, রোস্ট হয়া যামু
---কথা শেষ কর। কয়সিকা লাত্থি দিমু হিসাব কইরা নেই।
-আম্মা, একটু শোন। একটা পোলা কী চায়, বল? শান্ত, লক্ষ্মী, সুবোধ, এটলিস্ট মাইনষের সমাজে লয়া চলা যাইব এমন একটা মাইয়ারে বিয়া করতে।
---আক্কাইসসা, আমার ঘিলু কিন্তুক গলিং হয়া যাইতাছে
-এইযে ধর তর মাঝে মাঝে পাগলামি চিড়িক দিয়া উঠে...না আমি বউত দিন ধইরা তর লগে আছি, দশজনে জিগাইলে কইতে পারুম, নারে ভাই এইটা সামুইক, জোরে ঝাঁকি দিলে ঠিক হয়া যাইব। সবতে তো আর এমুন ভাব্বনা। দিনরাইত বেতের বাড়ি খাওন লাগব।
---পাগলামি তোরে আইজকা গুইলা খাওয়ামু শালা
-দেখ বউত দিন ধইরা পাশাপাশি আছি। তোর উফ্রে একটা মায়া জন্মাইছে। একটা বিয়াইত্যা মাইয়া সারাজীবন অবিবাহিত থাকব, নাইলে জামাইর মাইর খাইব - এইটা দেখলে আমার নিজেরো একটু খারাপ লাগব। চিন্তা কইরা দেখ তুই সমানে পাখি ভাইর লগে সিটিং দিতাছস, কিন্তু নানাবিধ আশংকায় পোলারা তোর ধারে ভীড়তাছেনা......না সবারই তো জীবনের একটা মায়া আছে। তুই যেমনে সমানে হুমকি ধামকি দিয়া বেড়াস, মাইনষে লেডী কমাণ্ডাররে বিয়া করব কোন দুক্কে?
---অই শালা, আমি সারাজীবন তোরে বান্ধবীর মত দেখছি। কেউ জিগাইলে কইতাম, আমরা দুই সই, নইড়া চইড়া বই। তুই তলে তলে আমারে বিয়া করার স্বপ্ন দেখস, আমি পুরা আইশ্চযয অয়া গেলাম । তোর সাহস দেইখা......অসম্ভব। তুই সারাজীবন আমার লগে বান্দ্রামি করছস। তোরে কোন সাহসে আমি জামাই বানামু? তাছাড়া, আমার এক ঝাড়ি খাইলে তুই প্যান্ট নষ্ট কইরা দেছ। ইরাম ক্যালাস পোলা...আমি তো কুনুমতেই বাটে আনতে পারতেছিনা।
-তোরে আমি আগেও কইছি, এখনো কই। আমার ভালো লাগা না লাগার বিষয়ে আমি একটুও ভাবতাছিনা। আমারো তো শখ হইতারে একটা মাইয়ারে বিয়া করার। হাফেজেন্টস একটারে আমি কুন দুক্কে ক' ঘরে তোলার চিন্তা করুম? জাস্ট তুই ফ্রেন্ড আছিলি, সারাজীবন হা কইরা পরপুরুষের দিকে চায়া থাকবি, বিয়া অইবনা, তাই তোর একটু উপকার করতে চাইতাছি।
---কতা ঘুরাইস না। ৬৪ ফালায়া দিমু
-দাঁত তো ৩২ টা। আরো ৩২ টা কই পাইলি? যাইহোক শোন, দিনারে তো তুই চিনস। ম্যাথের ফার্স্ট গার্ল। বেশ আদব লেহাজ করে আমারে। কাইল্কাও আমি রিকশা ডাইকা দিলাম।
---কখন ডাকলি? আমি তো জানিনা।
-আরে, ক্যাম্পাস থিকা ফিরার সময়। হের ভাবেসাবে আমি বুঝি, কিছু কইতে চায়। তর মত বান্দরনীর লগে থাকায় আমার ফিল্ড এম্নেই নষ্ট হইতাছে। ভালা লাগ্লেও কেউ কিছু কইতারেনা। বা ধর, সোহেলী, অই যে মারাত্মক গান গায়, ফিজিক্স ১-২......
---তোর কি ধারণা আমি তোর হগল জিএফ এর বায়োডাটা মুখস্ত কইরা রাখছি?
-সোহেলী মাইয়াডাও খারাপ না, আইজকা একটা নীল ড্রেস পরছে। তুই এমন কিছু পরলে পুরা নীলপেত্নী লাগত। আর দোস্ত, বর্ণার হাসি রে। বর্ণারে খালি জিগা আমার নাম, হেহ, বোঝা যায় বুঝছস। কেউ পছন্দ করলে ফিল করা যায় ।
---কারে তুই রিকশা ডাইকা দেছ, কে সুন্দর গান গায়, কারে নীল ড্রেসে কেমন লাগে, এইসব বয়ানের লিগা আমারে ডাকছস?
-এখন কইলে তো অসুবিদা নাই। তুই তো আমার লগে গামছা গলায় দিতাছস না। রেহানার কথাটা শোন...
---ছি ছি তোর যে রুচি। রেহানা, নাম শুনলেই তো গাউয়া গাউয়া লাগে ......
-আরে নাম রাখ, মাইয়ার আবৃত্তি শুইনা আমি পুরা কাইত রে।
---তুই আমার আবৃত্তি শুনছস কুনুদিন? কাইত হস নাই?
-না মানে, হেলাল হাফিজের কবিতার ভাষণ শুনছি তোর কন্ঠে...ওরে মারে, মারিস না রে, আরেকটু শোন...
আমি আগেই ঠিক কইরা রাখছিলাম। আইজকা ফাংশনে রেহানার একটা আবৃত্তি আছে। আমি একটু আলাদা থাকতে চাই ওই সময়, বুঝলি? ফেউ-র মত লাইগা থাকিছনা আমার পিছনে।
---আইচ্চা, আর কী কী করতে চাস
-আমি এখন থিকা দিনার সাথে এক রিকশায় যামু
---আর?
-সোহেলীর গান শুইনা কনগ্রাটস জানামু
---আর?
-রেহানার লগে একলগে আবৃত্তির ক্লাস করুম
---আর?
-বর্ণার হাসিমুখ দেখার লাইগা লেডিস হলের নীচে খাড়ায়া থাকুম
---শালা অখখন কাজী অফিস চল। তোরে আজীবন খামচানির সিস্টেম করতাছি
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০০৮ সকাল ১০:১৩