somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কানাডা দিবস.....১ জুলাই ২০১০ এর পাঁচালী........

০২ রা জুলাই, ২০১০ সকাল ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকালে ঘুম ভাঙলো যখন,জানালা দিয়ে একটু আলো এসে খেলা করছিলো ,সেই আলো দেখে বুঝলাম আজ মেঘলা দিন। আজ ১ জুলাই ,কানাডা ডে।কাল রাতে রাশীক বলেছিল পার্লামেন্টের ওখানে যাবে।কিন্তু সকালে এ্যালার্ম বাজলো যখন,বন্ধ করে আবার ঘুম।আমি তখন ওর রুমে ,কম্পিউটারের সামনে বসে।সামহোয়ার ইন এ বিভিন্ন জনের ব্লগ বাড়িতে ঘুরছি।জিমেইল এর ইনবক্স এ দেখি কিছু নাই।এমন মেঘলা সকালে কোন মেইল আসলে বেশ হতো। এটাও ঠিক, নিজে না লিখলে মেইল আসবে কোত্থেকে?আকাশের মেঘলা মেঘ এসে মনটাকে ছেয়ে রেখেছে।
রাশীকের বাবা আজ নাস্তা বানালো।রাশীক রাইয়ানের সামার ভ্যাকেশন শুরু হয়েছে । তাতে কি? রাইয়ান হলো ভোরের পাখি।সাত সকালে ঘুম ভাঙে তার।একটু পরই ক্ষুধা লেগে যায়।আরো কত কি! নাস্তার মেনু ভালোই ছিলো।তবে সকাল সকাল দেশের মত আম ও খেতে হলো! কি আর করা! প্রিয় আমের আঁটি তো আর ফেলে দিতে পারিনা।আমি না খেলে পুরাটাই গার্বেজে চলে যাবে।
চা খেতে খেতে টিভি দেখছি।হঠাৎ দেখি আকাশ পরিষ্কার।কয়েক মিনিটের মধ্যে তৈরী হয়ে নিলাম সবাই।রাশীক,রাইয়ান আর আমি যাচ্ছি।।ওদের বাবা নামিয়ে দিয়ে চলে আসবে।ও পায়ের আঙ্গুলে ব্যথা পেয়েছে।তাই হাঁটতে পারছে না বেশি।ওদিকে আজ ডাউন টাউনে গাড়ি পার্কিং পাওয়া আর লটারী পাওয়া একই কথা।
আমাদের যাত্রা হলো শুরু……………………redeau street এর কাছ থেকে।ওভার ব্রীজের নীচে অজস্র মানুষ।চারিদিকে শুধু লাল সাদার ছড়াছড়ি।
কয়েকটা মেয়ে দারুণ নাচছিল।একজন আফ্রিকান।কথায় জানলাম সে এখানে বেড়াতে এসেছে।


এক জায়গায় সাইকেল খেলা হচ্ছিল।একজন শুয়ে আছে রাস্তায়।অন্যজন তার উপর দিয়ে সাইকেল চালাচ্ছে।চারিদিকে গোল হয়ে বসে ,কেু কেউ দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলো।



আর একটু এগুতেই দেখি টানা রিকশা চালাচ্ছে কয়েকজন।একখানে একটা মেয়ে মূর্তি সেজে হাত পা নাড়ছে।



স্প্যানিশ দুই তিনজন শিল্পি অসাধারন গান গাইছিলো।কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে গান শুনলাম।


পার্লামেন্টের কাছাকাছি যেতে অনেক সময় লাগলো।এত মানুষ আগে দেখিনি।এবার অবশ্য ভীরের কারন আছে।ইংল্যন্ডের রানী এসেছে।ঊনার কারনেই ভীরের কারন বেশী মনে হলো।রাস্তায় বেরিকেড ও বেশি।নিরাপত্তার কারনে।



ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বাবার কাঁধে বসে ঘুরছিলো।অনুষ্ঠান দেখছিলো।খুব ভালো লাগছিলো।একটা ছোট্ট মেয়ে এত নিশ্চিন্ত হয়ে বসেছিলো।ওর দিকে তাকিয়ে নিজের ছোটবেলা মনে পড়ছিলো।আব্বাকে মনে পড়ছিলো ভীষন।আকাশে ছুটে চলা মেঘের মতন মেয়েটা একদিন বাবার কাছ থেকে কত দূরে থাকবে হয়তোবা।কি অদ্ভুত এই জীবনের হিসাব নিকাশ!




পার্লামেন্টের ঘড়িটা আকাশের মেঘের সাথে মিশে দারুণ দেখাচ্ছিলো।পার্লামেন্টের সামনের মাঠে এবার আর যাওয়া হলোনা।


একটা ভীড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকলাম অন্ততঃ ৩০ মিনিট।আমার বা পাশে হুইল চেয়ারে বসা একজন বয়স্ক মহিলা।রাইয়ান কে ঊনি একটা পতাকা দিলেন।রাইয়ান একটু পর একটা পতাকা খুঁজে পেয়ে ঊনাকে ঊনারটা দিয়ে দিলো।
কানাডার জাতীয় সংগীত গাইছিলো যখন মেইন স্টেজে একটা শিল্পী।চারিদিকে আকাশে বাতাসে বাজছিলো সেই সংগীত।আমি নিমেষেই হারিয়ে গেলাম।বাংলাদেশ ………………আমার প্রিয় জন্মভূমি।
“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।“
দেশ প্রেম ও দেশাত্মবোধ এগুলো হৃদয়ের কোন যে মূলে থাকে!

রাইয়ান একসময় খুব ক্লান্ত হয়ে গেলো।


একটা ছোট্ট মেয়ে মুখে পতাকা আঁকছিলো।ছবির মজার বিষয় হলো ছবিটা ব্যাঙ্গাত্মক হবে।


রানী যাবে যেই পথ দিয়ে,সবাই তার পাশে ভীড় করেছিল।


একজন খেলা দেখচ্ছিল।রাইয়ান দেখি সামনে যেয়ে খেলা দেখছে।


আরো কিছু ছবি তুলতে তুলতে ফিরে আসলাম নির্দিষ্ট জায়গায়।যেখানে ও এসে অপেক্ষা করছে।




ফিরে আসতে আসতে কত কথা ভাবছিলাম।ছবি তোলার সময় মনে হচ্ছিল একটা লেখা লিখবো, এই দেশে অনেক বছর অভিবাসী জীবনে কিছু ঋণ তো জমা হয়েছেই।
যেই দেশ আমার জন্মভূমি তার জন্য তো আমার নাড়ীর টান তো আছেই। আবার এই দেশ,কানাডা .....যেখানে আমার রাশীক রাইয়ানের জন্ম।সেই দেশটার প্রতিও ভীষন একটা দূর্বলতাও জন্ম নিয়েছে।
সবার সাথে তাই আবারো বলি,
Happy Birhtday Canada.





সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১০ সকাল ১০:৪২
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ড. ইউনুসের বক্তব্যের ব্যাবচ্ছেদ

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৩:২০

আজ সন্ধ্যায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ শুনলাম। প্রায় ৩৫ মিনিটের এই বক্তৃতা অনেকের কাছে হয়তো ঘ্যানঘ্যানানি আর প্যানপ্যানানির মতো মনে হতে পারে, কিন্তু আমি একজন রাজনৈতিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৪৯

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:২৯



আজ ২৫ রোজা।
এই তো সেদিন রোজা শুরু হলো। দেখতে দেখতে ২৪ টা রোজা শেষ হয়ে গেলো। সময় কত দ্রুত চলে যায়! আগামী বছর কি রমজান... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবগুণ্ঠন (পর্ব ২)

লিখেছেন পদাতিক চৌধুরি, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৩৯



অবগুণ্ঠন (পর্ব ২)

ওসির নির্দেশ মতো ডিউটি অফিসার রাঘবেন্দ্র যাদব লাশ পরিদর্শনের সব ব্যবস্থা করে দিলেন। গাড়ির ড্রাইভার সহ তিনজন কনস্টেবল যথাস্থানে তৈরি ছিলেন। বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ওনাদের।খানিক বাদেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগে বিচার , সংস্কার তারপরেই নির্বাচন

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:২২



জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন এক ঝাক তরুনদের রক্তের উপড় দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এ জ্বালাময়ী কর্মসুচী দিচ্ছিল , তখন বিএনপির... ...বাকিটুকু পড়ুন

It is difficult to hide ল্যাঞ্জা

লিখেছেন অধীতি, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১

এক গর্দভ ইউটিউবার ৭১কে ২৪এর থেকে বড় বলতে গিয়ে আমাদের শিখায় যে ৭১ বড় কারণ সেটা ভারত পাকিস্তানের মধ্যে হয়ে ছিল। আর আপামর জনসাধারণ সেটায় অংশগ্রহণ করেনি। এই হলো যুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×