মেনে নেয়া যাচ্ছে না। কিছুতেই না। কোন ভাবে আপোষ করতে চায়ছে না মন। বিবেক বাধা দিচ্ছে। সুক্ষ্ণ এক অশান্তি চড়ে বেড়াচ্ছে মনের অলিগোলি। নিদারুণ অস্থিরতার মধ্যে কাটছে আমার চল্লিশছোঁয়া যৌবন। এ এক মধুর অশান্তি। অনুভব করে চলেছি নিরবে। অথচ এই আমি জীবনে বহুবার অসিম ধৈর্য্যর সাথে মোকাবেলা করেছি নিগুঢ় বাস্তবতা। পরিস্থিতি অনুযায় মানিয়ে নিয়েছি সবকিছু। কেবল আমি, তা নয়। বাঙালি সমাজের প্রতিটি পুরুষ মানুষের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা তাই। বাস্তবতাকে আলিঙ্গন করতে করতে এগিয়ে যেতে হয়। ‘উপযুক্ত’ হিসাবে গড়ে ওঠার শিক্ষা নিতে হয়। বংশের বাতি জ্বালাতে হয়। সে জমিদারের সন্তান হোক, বা দিনমুজুরের ছেলে হোক না কেনো, তাকে উপার্জনক্ষম হতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে। জন্মের পর থেকেই নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পুরুষ মানুষকে পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে খাপখাইয়ে নেয়ার কৌশলটা শিখতে হয় যত দ্রুত সম্ভব। কিন্তু এই খাপখাওয়ানোর বিষয়টি আর ভাল লাগছে না। বাস্তবতাকে সমিহ করে চলতে ইচ্ছে করছে না আর। চুড়ান্ত একটি সিদ্ধান্তে পৌছাতে হবে। যত আগে, ততই মঙ্গল। নতুবা লোক জানাজানি হবে। মানুষ হাসাহাসি করবে। বাজে কথা বলবে। নিজেদের মত গল্প বানাতে থাকবে কাছের মানুষজন।
পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়টিকে দুষ্ট মনের ভাবনা হিসাবে মনে করা যাচ্ছে না। সন্দেহ, অনুমনা, ধারণা বা খটকা লাগা উপসর্গ গুলো হয়ে গেছে অর্থহীন। অপ্রয়োজনীয় এবং বেমানান। যদিও সন্দেহবাতিক আমার পুরানো রোগ। সন্দেহপ্রবণতা থেকে জন্ম নেয়া অশান্তির আগুনে অতীতে অসংখ্যবার জ্বলেপুড়ে মরেছি। লজ্বিত হয়েছি। আবার সন্দেহজনক এমন অনেক ঘটনার রহস্য উন্মোচন শেষে দেখা গেছে আমার অনুমান সত্য। তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছি শব্দহীন।
আয়না আমার খুব ভাল বন্ধু। প্রকৃত শুভাকাঙ্খী। অন্তরে লুকায়িত হাসি-আনন্দ, দু:খ-বেদনা, সবকিছু সে দেখতে পায়। কিন্তু কি আশ্চর্য্য! একটি জড় পদার্থ হয়েও মানুষের চেয়ে অনেক বেশি সহমর্মিতা লালন করে আয়না। আমি যখন কষ্টমাখা মন নিয়ে ওর সামনে দাড়ায়, ও ভাল মত বুঝতে পারে আমাকে। অন্তত আমি কাঁদলে সে হাসে না। কিন্তু ইদানিং আয়না আমার দিকে তাকিয়ে মুচকে হাসছে। সে বলছে, “খারাপ কি! মেনে নাও। সত্য-মিথ্যা যা কিছু হোক না কেনো, মেনে নিলে হারাবার কিছু নেই। ভিন্ন আমেজ পেলেও পেতে পারো। ওরা দ্বিমত করবে না শিহরণ জাগাতে তোমার প্রতিটি লোমকুপে। প্রশান্ত ! নগ্নতায় হও তুমি মগ্ন।”
নগ্নতা, যৌনতা, ভোগ-বিলাস বা কোন ধরণের আনন্দ-ফূর্তি সম্ভাবত আমার ধাচে নেই। হয়নি গত উনোচল্লিশ বছরে। পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ বোধ হয় আসে আমোদ প্রমোদ ছাড়া নিরলস জীবন ধারণের জন্য। এদের অন্তরটা আমোদ পিপাসায় ফেটে যায়, আকুপাকু করে, কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি তাদেরকে সে সুযোগ দেয় না। যদিও উঠন্ত যৌবনে যৌনতার সুযোগ মিলে ছিল দু’একবার। তবে সাহস করেনি মন। থেকেছি মৌনবদ্ধ। তাছাড়া শারীরিক খেলার সুখকর অনুভূতি কেনো জানি বিয়ের আগে নিতেও ইচ্ছে করেনি। এ বিষয়ে নিজের কাছে নিজেই ছিলাম অঙ্গিকারবদ্ধ। মনের ভেতরে একটি জিনিস কাজ করতো, আমি যেমন অস্পর্শী কোন নারীকে সহধর্মীনি হিসাবে প্রত্যাশা করছি, তেমনই নিজেও একজন অনভিজ্ঞ, আনাড়ি পুরুষ হিসাবে উপস্থিত হতে চাই।
কিন্তু বিয়ে করতে দেরিই যখন হলো, না করলেও চলতো। স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে ওঠা জীবনে অহেতুক নেমে আসলো অশান্তির ছায়া। কি যে হলো আমার! যখন ঘরে থাকি, ড্রেসিং টেবিলের সামনে যাই, অফিসের ওয়াশ রুমে আয়নার সামনে দাঁড়াই, সে আমাকে বলতে থাকে ; নিজের জীবনটাকে একটু উপভোগ্য করে তোল প্রশান্ত। সে হয়তো আমার মনের কথাগুলো বলে। কিন্তু গত ছ’মাসে সে এ ধরণের কোন কথা বলেনি। ওর দিকে তাকালে শুধু বলতো, “কি প্রশান্ত বাবু, বুড়ো বয়সে কচি মেয়ে বিয়ে করে বেশ মজাই আছো দেখছি। খুশি খুশি লাগে? লাগবেই তো! সুন্দরী বউ। শিক্ষিতা। শ্বশুরের টাকা কড়ি আছে। একমাত্র মেয়ে। তোমার চেয়ে সুখী মানুষ আর কে আছে বাবু!”
আসলেই কি আমি সুখী?
সুখী না। স্ত্রী সুস্মিতা আমার চলমান অস্থিরতার কারন। সে একা না। আরও একজন আছে। আমার মধুর অশান্তির কেন্দ্রবিন্দুতে। সে হচ্ছে জয়া। নিঃসন্দেহে সে খুব ভাল মেয়ে। অনেক বেশি সহনশীল। সে আমার অস্থিরতা জয়া নিয়ে সন্দেহ শুরু হওয়ার পর থেকেই তার কথায় এসেছে পরিবর্তন। মাসও পার হলো না। সন্দেহ জন্ম নেয়ার এক মাসের মধ্যেই চাক্ষুস প্রমান পেলাম। তারপর থেকেই মস্তিস্কে কাম ও বাসনার নানা চর্চা শুরু হলো। ওদেরকে যখন একই ফ্রেমে বন্দি করি, উদভট অশ্লীলতা ভর করে কল্পনায়। যে পর্যন্ত দেখেছি, তারপর থেকে বহুদূর পর্যন্ত আমার ভাবনা পৌছে যায়। দেখতে পাই আধো আলো আঁধারে নগ্ন পায়ে দাঁড়িয়ে আছে দুইজন নারী। গোটা ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তাদের পরিধেয় পোশাক। সেখানে এগিয়ে এলেন একজন পুরুষ। উচ্ছাসিত নারীদ্বয় মগ্ন হলেন গভীর আলিঙ্গনে। বুজে থাকা তিন জোড়া চোখে তখন রাজ্যের সুখ। আমি আর ভাবতে পারিনা। বাস্তবে ফিরে আসি। কি ভাবছি আমি! আমার সাথে জয়ার সম্পর্ক যে ছোট বোন বা শ্যালিকার মত। বন্ধত্বপূর্ণু। বউয়ের বান্ধুবী মানে তো তাই। জয়াও তো আমাকে অনেক ভক্তি করে। যথেষ্ট সম্মান করে। বড় ভাইয়ের মত দেখে। তবুও জানিনা কেনো এক ধরণের যৌনদোলার মৃদ্যু কম্পন অনুভত হতে থাকে গোটা শরীর। কিন্তু এইসব উত্তেজনাকর কল্পনায় আমার লালসার নদীতে আসে না কামত্বের জোয়ার। কেবলই মনে হয় চাক্ষুস যা দেখেছি, তা চুপচাপ মেনে নিয়ে না জানার ভাব করে থাকা বোধ হয় হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আবার মনে হয়, কট্টোরপন্থি হয়ে এসপার ওসপার কিছু একটা করে ফেলা হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
আট মাস আগে অগ্নি দেবতাকে সাক্ষী রেখে সাত পাকে বাঁধা পড়েছি। পারিবারিক ভাবে দেখাদেখি করেই হয়েছে। ওর মা নেই, আমার বাবা নেই। শৈশবে অনাথ হয়েছি দু’জনে। ওর জ্ঞাতিগুষ্টি অনেক বড়। অবস্থাপূর্ণ। সবাই ভাল ভাল জায়গায় আছে। ওর এক পিসির ছেলে আমার কলিগ। একই ব্যাংকে আছি। আর জয়া হচ্ছে ওর একমাত্র বান্ধবী। চাকরি করে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে। থাকে বাবা মায়ের সাথে গ্রিন রোড এলাকায়। সে বিয়ে করেনি। বিয়ে করতেও চায়না। তার ফ্যামিলি এ বিষয়ে কিছু আর বলেও না।
আমার স্ত্রীর আর কোন বন্ধু আছে কিনা জানা নেই। কারোর সাথে সাক্ষাতের সুযোগও হয়নি। নেই হয়তো বা। একটু চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে বলে বন্ধু-বান্ধব কম। আড্ডাবাজি বা হৈ হুল্লোরের ভেতরে নেই। এদিক থেকে জয়া আবার খুব মিশুকে। ইয়ার্কি ফাজলামি করতে জানে। ওদের দুইজনের মিল মহব্বত ঈর্ষা করার মত।
বিয়ের পরপর ওদের মধ্যে আন্তরিকতা দেখে ভাল লাগতো খুব। মজা করেই ঈর্ষান্বিত হওয়ার ভাব দেখাতাম। মাঝের মধ্যে মনেও হতো স্বামীর চেয়ে বন্ধুর প্রতি সুস্মিতার মহব্বত একটু বেশি বোধ হয়! অবশ্য এ নিয়ে কোন দুঃখবোধ ছিল না। জয়া তো ওর ছেলে বন্ধু না! মেয়ে বন্ধু। মেয়েতে মেয়েতে যা খুশি হোক। তখনও বুঝিনি শেষ পর্যন্ত বউয়ের বান্ধবীর প্রতি আমার বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব জেগে উঠবে। এটি অবশ্য এক দিনেও হয়নি। শুরুটা কক্সবাজারে। বিয়ের একমাস পর আমরা যখন হানিমুনে যাবো বলে ঠিক করলাম, সুস্মিতা বললো জয়াও যেতে চায়ছে। সাথে ওর স্কুলে পড়া ছোট ভাইও যাবে। ঠিক আছে ভাল কথা, চলো। ইনানি বিচের কাছে আমরা ডবল বেডের দুইটা রুম নিয়েছিলাম ফাইভ ষ্টার মানের একটি হোটেলে। রাতে আমরা স্বামী-স্ত্রী এক রুমে থাকবো, ওরা ভাই-বোন অন্য রুমে ঘুমাবে, এটাই স্বাভাবিক। অথচ হলো এর উল্টোটা। দুই বান্ধবী অনুরোধ করলো ওরা একসাথে ঘুমাতে চায়। অনেক নাকি গল্প জমে আছে! আমরা একসাথে অনেক রাত পর্যন্ত গল্পগুজব করলাম ঠিকই, কিন্তু হানিমুনে গিয়ে নিজের বউকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ঘুমানো হলো না। ঘটনা আরও আছে, যা ক্রমান্নয়ে আমার মনটাকে বিষিয়ে তুললো।
একটা বিষয় কিছুতেই আমার মাথায় ঢোকে না, সমলিঙ্গের দুই নারী বা পুরুষ কিভাবে পারস্পরিক আলিঙ্গনের মধ্য দিয়ে রতিকার্যের ক্ষুধা নিবারণ করেন। তারা কি তৃপ্তি খুঁজে পান, তারাই ভাল জানেন। তবে আমার দৃষ্টিতে এটি ঘৃণ কাজ। যদিও মানুষের অধিকার আদায়ে বিশ্বাসি আমি। ইচ্ছা আকাঙ্খার স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেই। আমি যে বাপমরা ছেলে ! অনেক কষ্টে বড় হয়েছি। শৈশবের কোন শখ আল্লাদ পূরণ হয়নি। ইচ্ছা অনিচ্ছার প্রশ্নে তাই আপত্তি করি না কখনও। সুস্মিতার বিষয়েও আপত্তি করবো না। যার যেটা ভাল লাগে। সে যদি লেসবিয়ান লাইফের প্রতি বেশি অনুরক্ত হয়ে থাকে, স্বামীর স্থানে যদি স্থান পায় বান্ধবী, সেখানে জোরাজুরি করবো না। সে তাই করুক। তাকে মুক্ত করে দিতে আমার খারাপ লাগবে না একটুও। এখনও তো বিয়ের বছর পূর্ণ হয়নি। ছেলেপুলে হয়নি। আগেভাগে টের পাওয়া গেছে, এই অনেক করুণা তোমার ভগবান!
কিন্তু ভগবানকে ডেকে কী হবে! ভগবান নিজেও তো আমোদ-ফূর্তি পছন্দ করেন! তা না হলে দূর্গাদেবীর সামনে ঢাক ঢোল পিটিয়ে ধুনচি নৃত্য কেউ করতো। বাস্তব জীবনেও দেখেছি, আমার যেসব বন্ধু-বান্ধব আমোদ ফূর্তি করে বেড়িয়েছে আজীবন, তারা এখনও ভাল আছে। বাবার টাকা অঢেল নষ্ট করেও খারাপ অবস্থার মধ্যে পতিত হয়েছে হাতেগোনা দু একজন। ভগবান তাদের সাথেই থেকেছেন। আর যারা সারা জীবন দূর থেকে দেখে গেছে লস্কর বাড়ির রাশ উৎসব, ভগবান কখনও তাদের দিকে ফিরেও চাননি। কাধের ওপর অদৃশ্য নিরাকার হাত রেখে বলেছেন, “দেখিস তোরাও একদিন। তবে সেটি এখন নয়, স্বর্গে!”
স্বর্গের কথা থাক। ফিরে আসি সুস্মিতা ও জয়ার কথায়। দিনে দিনে ওদের মেলামেশা একটু বেশি মাত্রায় খোলামেলা হতে শুরু করলো। বিশেষ করে ওদের মধ্যে যখন একে অপরকে বিদায় জানানোর মুহূর্ত আসতো, প্রকাশ্যে এমন ভাবে চুম্বন করতো যেন তা খুবই স্বাভাবিক এবং সাধারণ ঘটনা। আমার উপস্থিতির বিষয়ে কখনও কখনও সংকোচ বোধ করতো, কখনও আবার আমলে নিতো না। আমার মনে হতে লাগলো, তারা ধীরে ধীরে আমাকে তাদের এই গোপন প্রণয়ের বিষয়ে অভ্যাস্ত করে তোলার চেষ্টা করছে। আবার আমার অনুমান সঠিক নাও হতে পারে। তবে এতে যে আমি বিব্রতবোধ করি এবং তাদের এই ন্যাকামি যে পছন্দ হচ্ছে না, তা আকার ইঙ্গিতে সুস্মিতাকে বুঝিয়েছি।
তারপর কিছুদিন জয়া এ বাড়িতে আসা বন্ধ রাখলো। আমার বউ মন খারাপ করে থাকতে লাগলো। কোন কিছুতে ওর মনযোগ ঠিকমত থাকছিল না। তাকে কোথাও বেড়াতে নিয়ে গিয়ে স্বস্তিও পেতাম না। কোন পারিবারিক আড্ডায় বা অনুষ্ঠানে গিয়ে সে এমন ভাবে মুখটা বেকিয়ে কালো করে রাখতো, যে কেউ দেখে সহজে বুঝে ফেলতো তার মন খারাপ। চেহারায় ফুটে উঠতো অসুখী ভাব। শেষে আমি নিজেই হার মানলাম। তার মনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে জয়াকে ফোন করে বাসায় আসতে বললাম। এ সবই আমি করেছিলাম তার দূরাবস্থা বিবেচনা করে একজন মনরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে। ডাক্তার সাহেবের কথা মত নিজের আচরণ গত কিছু বিষয়ের পরিবর্তন ঘটালাম। কিন্তু আমার নমনিয়তার ফল ভাল হলো না। ঘুরে ফিরে সেই তাই হলো। দুইজনের যোগাযোগ বাড়লো। আমার অগোচরে আমার বাসাতেই চলতে থাকলো ওদের অবাধ সমকামিতা। সবকিছু আঁচ করেও মনের রাগ, ক্ষোভ, কামনা বাসনা গোপন রেখে স্বাভাবিক মেলামেশা চালিয়ে যেতে লাগলাম। এবং লক্ষ্য করলাম, মনের অজান্তে জয়াকে নিয়ে লোভাতুর হয়ে উঠতে শুরু করেছে আমার কাম রিপু।
সাধারণত ছুটির দিনগুলোতে জয়া আসতো আমাদের বাসায়। দুই বান্ধবী মিলে একসাথে রান্না করা, ঘর গোছানোসহ যাবতীয় কাজ সেরে নিরিবিলি যখন গল্প করতো ঘরের দরজাটা হাল্কা ঠেলে দিয়ে, নোটিশ ছাড়াই আমি ওদের ঘরে ঢুকে পড়তাম। আমি যে ইচ্ছে করে কোন না কোন অযুহাতে রুমে প্রবেশ করতাম, তা বেশ বুঝতে পারতো সুস্মিতা। যদিও আমার এই বেহায়াপনা আচরণের সাথে ওদের পরিচয় ছিল না, তাই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতচকিয়ে যেত। আমার চাহনিতে যৌন বাসনা নিবারণের অভিপ্রায় যে ফুটে উঠতো, তা বুঝতে পারতো জয়া। পরে নিজের মতিগতি নিয়ে যখন ভাবতাম, লজ্বা পেতাম এই ভেবে যে, আমি তো ওই ধরণের অভদ্র লোক নই। তাহলে কেনো অভদ্রতাকে আমার ভেতরে বসবাসের সুযোগ দিচ্ছি !
এই যে সুস্মিতা ও জয়ার সম্পর্ক, সমলিঙ্গের প্রতি একে অপরের দূর্বলতা, কেবলই কি শরীর কেন্দ্রিক ?
নিশ্চয় তা নয়, মনের ওপরেও তা ক্রিয়া করে। একে অপরের প্রতি টান, মায়া-মহব্বত ও ভালবাসা অনুভূব করে। স্বামী-স্ত্রী’র মত একই ছাদের নিচে বসবাসের বাসনা জাগে। ইতিহাসের আদিকাল থেকেই সমকামিতা বিরাজমান। এ ধরণের মানসিকতা ধারণ করে এমন অসংখ্য মানুষ আছে বাঙালি সমাজে। বিভিন্ন ঘটনা ও গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাঙালি সমাজে এমন নারী বা পুরুষের সংখ্যা শতকরা নয়-দশ ভাগ, যারা মনে মনে সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। এদের মধ্যে সমকামী এবং উভকামী আছে। এই দশ জনের দুই-তিনজন আছে যারা যৌন প্রবৃত্তি নিবারণে সমলিঙ্গের প্রতি নিজের আগ্রহ প্রকাশ করে। নানা ভাবে সংকেত দিয়ে ”কামিং আউট” হয় বা আত্নপ্রকাশ করে । সে অনুযায়ী বলা যায়, সমকামী, গে, লেসবিয়ান, বাইসেক্সুয়াল, ট্রন্সজেন্ডার মানুষদের যৌনজীবনের ভিন্নতাকে স্বীকৃতি দেয়ার মানসিকতা ও পরিবেশ এখনও গড়ে ওঠেনি। তবে এরা সংঘব্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রচলিত যাবজ্জীবন কারাদন্ড আইনটি সংশোধন বা বিয়োজন হলে প্রকাশ্যে এদের সাংগঠনিক তৎপরতা দেখা যেতো। জয়াও জার্মান ভিত্তিক এমন একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত। অবশ্য সে প্রকাশ্যে কিছু করে না। যা কিছু করে ঘরে বসে অন লাইনে। তবে সব গল্পই সুস্মিতার সাথে শেয়ার করে। লেসবিয়ান ক্লাবের মেম্বর হওয়া, কর্মসূচি পালন, সাফল্য, পরিকল্পনা তথা সমকামী সংক্রান্ত নানা বিষয়ে ওদের মধ্য আলোচনা হয়। টুকটাক কথা আমার কানেও আসে।
এর মধ্যে একদিন সুস্মিতাকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমাদের এই অভ্যাসটা কত দিনের?
সে খুব সহজে উত্তর দিলো, ছোট বেলা থেকেই।
এখান থেকে বের হওয়া কি যায় না?
সুস্মিতা কোন উত্তর দেয় না।
আমি ফের বলতে শুরু করি; দেখো তোমাদের এই ব্যাপারটা আমার আর ভাল লাগছে না। তোমাকে যেকোন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগে নিজেকে প্রশ্ন করে নিশ্চিত হও তুমি কি চাও। সমকামী না বিপরীতকামী। এবং অবশ্যই উভকামী না। আমি চাই না একজন সমকামী বা উভকামী মায়ের গর্ভে আমার সন্তানের জন্ম হোক । এটাই আমার শেষ কথা।
সুস্মিতা সেদিন কোন কথা বলেনি। সে আর কোন দিন কথা বলবে কিনা জানা নেই। সেদিন চিবুকটা শক্ত করে কেবলই এক দৃষ্টিতে চেয়েছিল। আমি তার চাহনির ভাষা বুঝিনি। তবে গভীর একটা রহস্য যে লুকিয়ে ছিল, সেটি এখন টের পেলাম। ভয়ঙ্কর রকমের এক আপদের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে জীবন। সবকিছু অনিশ্চিত। এমন কি বাঁচা-মরা!
দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয় জয়া। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে খুন হওয়ার দশ মিনিট আগে আমার বাসা থেকে বের হয়। মাসখানেক আগে হঠাৎ করে চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর থেকে মেয়েটি প্রায় বাসায় এসে সুস্মিতার সাথে সারাদিন কাটাতো। ওইদিন সকালে এসেছিল। বিকালে আমি অফিস থেকে ফেরার পর বের হয়ে যায়। বাড়ির কাছে বৌদ্ধ মন্দিরটা পেরিয়ে মেইন রাস্তায় উঠতে হঠাৎ দুই যুবক তাকে ঘিরে ধরে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে জয়ার মাথায় ও বুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মানুষের ভিড়ের মধ্য মিশে যায় দুবৃত্তরা। সে খুন হওয়ার দুদিন পর ফলোআপ নিউজে কিছু পত্রিকায় তার সমকামী কার্যকলাপের গপ্পোসপ্পো উঠে আসে। এদিকে জঙ্গি কানেকশনের দাবি তুলে দেশের প্রথম শ্রেণীর একটি দৈনিক সংবাদ প্রকাশ করলে মানবাধিকার ও নারী সংগঠনগুলো সোচ্চার হয়ে ওঠে। পুলিশও হাফ ছেড়ে বাঁচে। তদন্তের একটা কুলু পেয়ে যায়। অথচ ঘটনার পরপরই বিরক্তিকর পুলিশি জেরার মধ্যে পড়তে হয়েছিল আমার ও সুস্মিতার। এতে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে সে।
ঘটনার দু সপ্তাহ পরেই সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ দাবি করে জঙ্গিগোষ্টির হাতে খুন হয়েছেন সমাজকর্মী জয়া। প্রকারন্তে তার সমকামী পরিচয়টিও তুলে ধরে। এটির কারণে জঙ্গিগোষ্টি তাকে হত্যা করেছে বলে তথ্য প্রমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জয়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা দুইটি ল্যাপটপে পাওয়া তথ্য, আলোকচিত্র এবং বেশ কিছু আর্টিকেল রয়েছে যা তদন্তে সহায়ক হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে আমার স্ত্রী সুস্মিতা। বেশ কিছুদিন ধরে তাকে খুবই ভীতগ্রস্থ দেখাচ্ছিল। প্রিয় বান্ধবীর নির্মম মৃত্যুর শোক সামলে নেয়ার মত মানসিক দৃঢ়তার অভাব ছিল তার। সে এতটাই ভেঙে পড়ে যে তাকে সবসময় চরম অস্থির এবং উদভ্রান্ত দেখা যেতো। হঠাৎ সে বাকশক্তি হারিয়ে ফেললে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, প্রচন্ড মানসিক আঘাতে এমনটি হয়েছে। এমন কি তার ব্রেন থেকে অনেক স্মৃতি হারিয়েও যায়। একটু সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে মানসিক হাসপাতালে নেয়া হয়। গত দুই মাস ধরে সেখানেই চলছে তার চিকিৎসা। কথা বলতে পারে না। পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। জানবো বা কি করে, তিনদিন হলো পুলিশ প্রহরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার কাটছে যন্ত্রণাদায়ক বন্দি জীবন।
জয়া হত্যার ঘটনায় প্রথম থেকেই আমি সন্দেহভাজন একজন আসামি। যদিও জঙ্গি ইস্যুতে হঠাৎ করে তদন্তের হাওয়া ঘুরে যায়। আমি স্বস্তিও পেয়েছিলাম। মাঝের মধ্যে টুকটাক ডিস্টার্ভ করতো পুলিশ। বুঝতে পারতাম টাকা খাওয়ার ধান্দায়! কিছু দিয়ে খুশি রাখার কথা চিন্তাও করছিলাম। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এস আই মনিরের সাথে সখ্যাত গড়ে তোলার জন্য নিজে থেকে যোগাযোগ শুরু করলাম। তদন্তের খোঁজ খবর নিতাম। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাতাম। দেশ থেকে জঙ্গি ও মৌলবাদ উৎখাতে পুলিশের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার প্রশংসাও করতাম। কিন্তু জানিনা কেনো, এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ আমার অফিসে হাজির হয় ঢাকা সবুজবাগ থানার একজন সাব ইন্সপেক্টরসহ একদল পুলিশ। জয়া হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় যেতে হবে বলে তারা জানায়। তখন এস আই মনির ভাইয়ের খোঁজ জানতে চাইলে আমাকে বলা হয় উনি থানায় আছেন। আপনাকে যেতে বলেছেন। আমি তখন মনির ভাইকে ফোন করলে মোবাইলটা বন্ধ পায়।
শুধুমাত্র টাকার জন্য পুলিশ কত সহজে “টিনের চশমা” পড়তে পারে তা জয়া হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসাবে আমাকে আদালতে চালান দেয়া না হলে জানা হতো না। আমাকে এক প্রকার ভয় ভীতি দেখিয়ে অনেকটা জোর জবরদস্তি করেই বলাতে বাধ্য করা হচ্ছিল, আমি প্রশান্ত ; জয়া হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। বউয়ের বান্ধবীর সাথে পরকীয়া প্রেম এবং সেটি নিয়ে দাম্পত্য কলহের কারণে জয়াকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পেশাদার খুনি ভাড়া করে আমি নাকি এ কাজটি করেছি !! এস আই মনির সরাসরি বললেন, দ্রুত দশ লাখ টাকার ব্যবস্থা করেন। নতুবা আপনাকে বাঁচানোর কোন পথ থাকবে না আমার। ওসি স্যারের কাছে এ বিষয়ে তথ্য প্রমান আছে। আমি তো আকাশ থেকে পড়ি! কাঁদবো না, হাসবো। ক্যামনে এরা গল্প বানায় ভগবান?
যেহেতু আমি ব্যাংকার এবং ভদ্রলোক, পুলিশ আশা করেছিল আমি আমার সমস্ত গচ্ছিত টাকা অথবা লোন করে হলেও তাদরে দাবি পূরণ করে দেবো। তাদের ধারণা ছিল আমার পয়শাওয়ালা শ্বশুর জামাইয়ের মুক্তির জন্য টাকা ঢেলে দেবেন। পুলিশ যা বলবে, তাই শুনবে। কিন্তু আমার হাড়কিপ্টে শ্বশুরের দ্বারা সেটা সম্ভব হয়নি। তিনি কোন টাকা দেয়ার আগ্রহ দেখাননি । তিনি নিজের মেয়ের চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে যেভাবে টাকার প্রতি মায়া দেখাচ্ছিলেন, তাতে করে আমার ইচ্ছে করেনি কিপ্টে লোকটার সাহায্য নিতে। তাছাড়া আমার ভয় পাওয়ারও কিছু ছিল না। আমি তো খুন করিনি বা খুনের পরিকল্পনাও করিনি।
জয়া খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদনে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা। বিজ্ঞ বিচারক মঞ্জুর করনে সাতদিন। তারপর সারা রাত শাররীক ও মানসিক নির্যাতন। ভোরের দিকে বুকে ব্যথাসহ রক্তবোমি শুরু হলে এক পর্যায় অচেতন হয়ে যাই। তারপর কিছু মনে নেই। ফের যখন জ্ঞান ফিরলো, চারপাশের সবকিছু ঝাপসা দেখা যাচ্ছিল। অনেক পরে ঝাপসা ভাবটা কেটে গেলে বুঝতে পারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছি। খাটের লোহার রডের সাথে আমার হাতকড়া বাধা রয়েছে। দুইজন পুলিশ বসে আছে খাটের দু’পাশে। বিছানায় রাখা একটি খবরের কাগজ। কোন রকম একহাত দিয়ে কাগজটা বুকের ওপর মেলে ধরি। শরীর নাড়াতে পারছিলাম না। ব্যাথায় টনটন করছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। আমি চোখ খুলে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলাম। ঝাপসা চোখে নজরে এলো একটি নাম ‘জয়া।’ ভাল করে তাকালাম সেদিকে। দুই কলামের একটি নিউজ। পড়লাম ; জয়া হত্যার ঘটনায় কিলিং মিশনের এক সদস্য আটক।
ধুপ করে যেন আমার শরীরের সমস্ত শক্তি ফিরে এলো। এক ধরণের প্রশান্তি খেলে গেলো গোট শরীরে। জয়ার খুনি ধরা পড়ে গেছে। ও ভগবান, তোমার অনেক দয়া। মুক্তির সম্ভাবনা জেগে উঠলো মনের ভেতর। মাথাটা উচু করে ফের পড়তে শুরু করলাম; সমকামী জয়া হত্যা মিশনে অংশ নেয়া পেশাদার খুনি জাহাঙ্গিরকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার সাব ইন্সপেক্টর মনির। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত জাহাঙ্গির জয়া হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, এ হত্যা মামলায় ইতিপূর্বে আটক সুস্মিতার স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা প্রশান্ত চ্যাটার্জির সর্ম্পিক্ততার প্রমান মিলেছে।
কি বলে! মাথাটা ঘুরে উঠলো আবার।
চোখ বেয়ে জল পড়ছে। নিউজটা পড়তে শুরু করলাম। পুলিশ বলছে, হত্যাকান্ডের দশমিনিট আগে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার মোবাইল ফোন থেকে কিলার জাহাঙ্গিরের কাছে দুবার ফোন করা হয়। খুনিরা তার বান্ধবী জয়ার বাড়ির কাছেই এ্যাম্বুশ করে ছিল। পুলিশ আরও জানায়, দুপুরে জাহাঙ্গিরের মোবাইল থেকে ওই নম্বরে কল আসে। ব্যাংক কর্মকর্তা প্রশান্তর মোবাইলের কললিষ্টের সুত্র ধরে তদন্তে নেমে মূল কিলারকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুবজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। কিন্তু কি কারণে স্ত্রীর বান্ধবীকে খুনের পরিকল্পনা করলেন প্রশান্ত, সে বিষয়ে মুখ খোলেননি অভিযুক্ত প্রশান্ত। তিনি পুলিশ প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আরও কি কি কথা যেন লেখা আছে ওই সংবাদে। বাকিটুকু পড়ার মত শক্তি নেই শরীরে। গা দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছে। আমার শয্যার দু পাশে দুই পুলিশ কনস্টেবল চেয়ে আছে। আরও কয়েকজন মানুষ দুর থেকে চেয়ে দেখছে ; খবরের কাগজ পড়ছে একজন খুনি। আমাকে জড়িয়ে কি সব আজগুবি গল্প বানানো হয়েছে! এ অসম্ভব ! হারামির বাচ্চা মনির! আরে কিলারের কললিস্টে আমার মোবাইল নম্বর কি করে আসবে বেকুব! আমি কি কোন কিলারকে চিনি ?
হাসপাতালের বিছানায় অসহায়ের মত যখন আমি হাজারটা প্রশ্নের জবাব খুঁজছিলাম, ঠিক তখনই মনে পড়লো; জয়া হত্যার দিন তো ভুলে মোবইল ফোনটা ফেলে গিয়েছিলাম বাসায়। হ্যা মনে পড়েছে, বাসায় রাখা ছিল। অফিসের ল্যান্ড ফোন দিয়ে নিজের নম্বরে কল দিয়ে সুস্মিতাকে বলেছিলাম, আমার ফোন বাজলে রিসিভ করো। অনেক দরকারি ফোন আসতে পারে।
তারমানে ? সুস্মিতা তুমি !
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৪৯