বাংলাদেশে এখন পেইড ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মেয়াদকাল দীর্ঘায়িত করার। তিনি বিগত সাত মাসে অনেক সাফল্য দেখেছিয়েন তাই আগামী ৩-৪ বছর ক্ষমতায় প্রধান উপদেষ্টা কে দেখতে চায় মানুষ। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায় না। ইন্টেরিম সরকার এতই সফল যে তাদের ঘাড়ের কাছে এখন একটি শ্রেনী নিশ্বাস ফেলছে। এই শ্রেনী চায় ড. ইউনূসের ইমেজ কাজে লাগিয়ে সমাজের মধ্যে অতি রক্ষণশীল মনোভাবের চাষাবাদ করতে । সমাজের মানুষের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও চলাফেরার স্বাধীনতা কে নিয়ন্ত্রণ করা। ইন্টেরিম সরকারের ইমেজ খারাপ হওয়ার জন্য এই ঘটনা যথেষ্ট। জুলাই অভ্যুত্থানের পর আশা করা হয়েছিলো মিডিয়া স্বাধীন হবে কিন্তু বেশিরভাগ স্বৈরাচারের দোসর মিডিয়া নিজেদের পিঠ বাচাতে এখন সরকারের প্রেস্ক্রিপশনে চলছে। এর পাশাপাশি চলছে বট বাহিনীর মাধ্যমে মিডিয়ার কমেন্ট সেকশন দখলবাজী। লিবারেল থিংক করে এমন মানুষজন কে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। ড. ইউনূসের ফেইস ভ্যালু জানে ধূর্তরা। তাই উনার প্রশাসনের ছত্রছায়ায় শিকড় বিস্তার করছে ভেড়ার পোশাকধারী শেয়াল সমাজ !
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসে হুক্কা হুয়াদের উত্থান নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সরকার যেভাবে রিয়াক্ট দেখালো তাতে নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়া যাবে ? প্রকাশ্যে কতলের ডাক, অসংখ্য মাজার ভাঙা, নারী ফুটবলে বাধা ও ফেকু জনতার ব্যানারে একজন পটেনশিয়াল রেপিস্টের মুক্তির জন্য থানা ঘেরাও আপাত দৃষ্টিতে সাময়িক ঘটনা মনে হলেও উহার প্রভাব সমাজে দীর্ঘমেয়াদে পড়তে পারে। হুক্কা হুয়ারা বারবার বাধাদানের মাধ্যমে মানুষ ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও চলাফেরার স্বাধীনতার উপর সেনসরশীপ আরোপের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার হুক্কা হুয়াদের প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটনে ইন্টারেস্টেড নয়। ইহাতে মনে হয় সরকার হুক্কা হুয়াদের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে। সরকারের উপদেষ্টাদের কঠিন ব্যবস্থা নেয়ার হুংকার কেবল মিডিয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। উহার ইফেক্ট সমাজে পড়ছে না। হুক্কা হুয়ারা ভয় পাচ্ছে না। এমনকি নিউইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনেও তারা ভীত নয়।
গাজীপুর কাপাসিয়ায় গীতিনাট্য 'আপন দুলাল' বন্ধ করে দিয়েছে একদল হুক্কা হুয়া। উহারা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য কিনা তা জানা যায় নি। তবে পেশায় তারা নিজেদের হুক্কা হুয়া সমাজের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি হিসাবে পরিচয় দেন। উদ্বেগ্নের বিষয় হচ্ছে হচ্ছে এরকম গীতিনাট্য বিগত ৫২ বছর ধরে আয়োজন করা হলেও কারো বাধা নিষেধের সম্মুখীন হয় নি। এই গীতিনাট্যে কোনো নারী চরিত্র নেই। কোনো অশ্লীলতা নেই। হুক্কা হুয়ারা সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়বে বিধায় তা চিরদিনের জন্য বন্ধ রাখার শপথ নিয়েছেন । পুলিশ ও স্থানীয় জেলা প্রশাসক কিছুই জানেন না। আয়োজক কমিটির ঘাড়ে কয়টা মাথা যে অভিযোগ জানাবে ?
সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হতে পারে এই ধরণের ঘটনা। তাই হুক্কা হুয়া দের আইনের আওতায় আনা জরুরি ছিলো। দুই চারটি মামলা ও গ্রেফতার করেই সরকার হাত গুটিয়ে নিয়েছে। এর ফলে হুক্কা হুয়াদের মধ্যে এমন ঘটনা বারবার ঘটানোর সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই এই শ্রেনী চায় প্রধান উপদেষ্টা আরো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকুক। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হুক্কা হুয়াদের সেইভ করছেন নিজের পিঠ বাচাতে। এর বিনিময়ে সরকার কি হুক্কা হুয়াদের নিজের পক্ষে ক্যাম্পেইন চালানোর আশা করতে পারে না ?
সাধারণ মানুষের মধ্যে এসব হুজ্জাতি কর্মকান্ড নরমালাইজ করার জন্য হলেও দীর্ঘদিন এই সরকার প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ বারবার বাধাগ্রস্ত হলে একসময় রণে ভঙ্গ দিবে । এভাবে ধীরে ধীরে নতুন ধরণের সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নব্য ফ্যাসিবাদের পায়ের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে !
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:৩৪