জা-শি এবং জানাপা সমস্বরে ম্যাতকার করে- "বিএনপি সংস্কার চায়না!" আমাদের ম্যাড মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টা চাউর হয়েছে। এটাই টক অফ দ্যা কান্ট্রি! এবার দেখা যাক- বিএনপি কোন কোন সংস্কার চায়না?
(১) কেউ যদি বাংলাদেশের কোনো নাগরিককে জিজ্ঞেস করে- আপনার দেশের নাম কি?
উত্তরে সিংহভাগ মানুষই বলবে, "বাংলাদেশ"। খুব কম মানুষ আছে যারা বলবে, "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ"!
সংস্কার কমিশন- "গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ" সরকার নাম পরিবর্তন করে 'জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ' করার সুপারিশ করেছে! এই নাম পরিবর্তন হলে রাষ্ট্রের, জনগণের কি উপকার হবে, কি লাভ হবে তার কোনো ব্যাখ্যা নাই।
বিএনপি মনে করে, দেশের নাম পরিবর্তনের কোনো দাবী জনগণ কখনওই করেনি। প্রয়োজনও নাই। বিএনপি মনে করে- রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন করতে, রাষ্ট্রীয় নথি পরিবর্তন করতে রাষ্ট্রের/ সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হবে। লেডি হিটলার শেখ হাসিনা সরকার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের ফলে ১২/১৪ শত কোটি টাকা খরচ করেছে। তখন বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো সাংবাদিকদের জানিয়েছে, বিমানবন্দরের নিয়ন সাইনগুলো, মনোগ্রাম সম্বলিত দাপ্তরিক কাগজপত্র বদলাতে এবং আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন মনোনীত বিভিন্ন জায়গায় নতুন নামকরণে উল্লেখিত অর্থ খরচ হয়েছে।
দেশের একটি বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করতে যদি শতশত কোটি টাকা ব্যয় হয়, তাহলে দেশের নাম পরিবর্তিত হলে এর খরচ কয়েকগুণ বেশী হবে। কিন্তু এর বিপরীতে লাভ কি হবে? আমাদের দেশের নাম 'গণপ্রজাতন্ত্রী' নাকি 'জনগণতন্ত্রী' তা যেখানে আমার দেশের সিংহভাগ মানুষের কাছেই কোনো ম্যাটার করেনা। তারা এই নাম জীবনে জানবেওনা, বলবেওনা, অনুধাবনও করবেনা। তবু এই খরচের হেতু কি? এর বিরোধীতা করাটা কোন অর্থে অযৌক্তিক? জুলাই বিপ্লব কি দেশের নাম পরিবর্তনের জন্য হয়েছে? দেশের নামের সাথে ফ্যাসিজমের কি সম্পর্ক?
(২) সংবিধান পরিবর্তনঃ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আওয়ামী লীগের তথা ফ্যাসিবাদের পতন চেয়েছিলেন। সংবিধান পরিবর্তন করার দাবি কেউ করেনি। তারপরও সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী সংবিধান পরিবর্তন, পরিমার্জন হতেই পারে এবং হয়েও আসছে- বিএনপির তাতে কোনো দ্বিমত নাই। বিএনপি মনে করে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংবিধান পরিবর্তন করার কোনো অধিকার নাই। সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই করতে হবে।
(৩) আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাঃ একটা প্রেসনোট দিয়ে আওয়ামী লীগ কিম্বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা যায়না, বিষয়টা ডক্টর ইউনুস সরকার, স্বাধীনতা বিরোধী জা-শি এবং ফটকাবাজ ছাত্রদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিও ভালো করে জানে। কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার সুযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নাই। সেটা করার ক্ষমতা রাখে জাতীয় সংসদ।
(৪) বিএনপির দোষঃ "বিএনপি শুধু নির্বাচন চাই, নির্বাচন চাই- জিগির করে"!
হ্যা বিএনপি নির্বাচন চায়, বারবার নির্বাচনের কথা বলে। কারণ, গনতন্ত্রের সবচাইতেই শুধু নয়, একমাত্র স্বতসিদ্ধ পথ- নির্বাচন। বিএনপি সেই নির্বাচনের জন্যই বছরের পর বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, নির্বাচনের জন্যই অজস্র প্রাণ দিয়েছে বিএনপি নেতা কর্মী সমর্থক। কিন্তু বিএনপি ছাড়া অন্যকোনো দল নির্বাচন চায়না, তারা নির্বাচন ছাড়া তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৩২