ঈদের জন্য যতোটা না অপেক্ষা করতাম,তার চাইতেও অপেক্ষা করতাম চাঁদরাত এর জন্য।চাঁদরাতটা ছিলো সবচেয়ে আনন্দের।রোযার ঈদের সময় শেষ রোযার দিন ইফতারী শেষ না করেই দৌড় দিতাম নিচে,মাঠে খেলার সাথীরা তখন আকাশের দিকে চাঁদ খোঁজায় ব্যস্ত।অতি উৎসাহী অনেকে সবার আগে চাঁদ দেখে ফেলে দাঁতের পাটি বের করে ফেলতো।আমরা যারা দেখতে পাইনি,তারা আতিপাতি করে খুঁজতাম মনটা খারাপ করে।চারিদিকে তখন অল্প অল্প পটকাবাজি শুরু হয়ে যেতো।
খুঁতখুঁতানি মনে শেষ ভরসা বিটিভির আশ্রয় ।স্ক্রীনের নীচ দিয়ে যদি দেখাতো "দেশের কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি",তখন খুব ভাব মেরে আবার মাঠে যেয়ে চাঁদ দেখে ফেলা পার্টিদের ধরতাম।কই রে তোদের চাঁদ কই?যা চাঁদ দেখা কমিটির সাথে যোগাযোগ কর।
আর মাথায় ঘোমটা দেয়া ভদ্রমহিলা যদি ক্লোজআপ হাসি দিয়ে বলত "ঈদ মোবারক",তাহলে একছুটে পটকা আর ফুলঝুরির প্যাকেট টা নিয়ে মাঠে যাইতাম।আমি পটকা ভয় পাই।আমার কাছে ফুলঝুরি-ই ভালো লাগতো।একসাথে অনেকে মিলে আগুনের কাছে ফুলঝুরি ধরতাম।সবার ফুলঝুরিগুলো ধরে গেলে গোলগোল করে ঘুরাতাম।কি যে ভালো লাগতো


ঈদ কনফার্ম হবার পর তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত চাঁনরাতের মেহেদী দেবার জন্য। মেহেদী পাতা বাটা হতো।তখন তো আর এইসব টিউব মেহেদীর চল ছিলোনা।বাটা মেহেদী দুই হাতে গোল গোল করে দিতাম,দেবদাস মুভির পার্বতীর মতো করে।মাঝে মাঝে ডিজাইন করে নামের আদ্যক্ষর লেখা হতো।সবাই দেবার পরে যদি মেহেদী বাটা বেশি থাকতো,তাহলে আন্গুলে নখের কাছে উঁচু উঁচু করে দিতাম।রং গাঢ় করার জন্য মাঝে মাঝে চায়ের লিকার দেয়া হতো বাটা মেহেদীতে।এর পরে দু'হাত ভর্তি মেহেদী লাগিয়ে ঘুমুতে যেতাম,সকাল হবার অপেক্ষায়...

সত্যি ছেলেবেলার সেই দিনগুলো যদি ফিরে পেতাম আবার

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:১৯