শেরপুরের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে গজনী এবং লাউচাপড়া অনেক আগেই দেখা হয়েছে আমার। গজনী পড়েছে শেরপুরের মধ্যেই। আর লাউচাপড়া জায়গাটি আসলে জামালপুরের বকশীগঞ্জ-এ অবস্থিত। দেখার বাকী ছিল শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলায় অবস্থিত মধুটিলা ইকোপার্ক। এবার সেটিও ঘুরে এলাম গত ২৬ জুলাই।
মধুটিলায় ঢোকার প্রবেশমুখে
মধুটিলায় ঢোকার সময়
মধুটিলা ইকোপার্ক মূলত: একটি পিকনিক স্পট। শেরপুর শহর থেকে মাত্র ৩৬ কিলোমিটার দূরে এই মধুটিলাতে ছোট ছোট অনেকগুলো পাহাড়ী টিলা রয়েছে। চারিদিকে এখন সবুজের সমারোহ। খুব একটা মানুষ-জন দেখলামনা। এ সময়টি পিকনিকের জন্যে খুব একটা উপযোগী নয়। কিন্তু পিকনিকের সিজনে এখানে দলে দলে লোকজনের সমাগম ঘটে।
পাহাড়ী টিলা থেকে নামার জন্যে সিঁড়ি
চারিদিকে সবুজের সমারোহ।
গেস্টহাউজ
মধুটিলার লেক
মধুটিলাতে গাড়ি নিয়ে ঢুকতে হলে ১২০ টাকা দিয়ে প্রথমে টিকেট কাটতে হবে। এর ভিতরে রয়েছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা। আর রয়েছে অসম্ভব সুন্দর একটি কৃত্রিম লেক এবং একটি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে দূরবীণ দিয়ে দূরে ভারতের বেইস ক্যাম্প দেখতে পাবেন।
দূরবীণ দিয়ে দূরে ভারতীয় বেইজ ক্যাম্প দেখছেন পর্যটকরা
দূরে ভারতীয় বর্ডার
পাহাড়ী টিলাগুলো বেয়ে ওঠা এবং নামার জন্যে সিঁড়ি রয়েছে। সব সময় সাথে ক্যামেরা থাকলেও এবার যেটা বড় ভুল হয়েছে, ক্যামেরা নিয়ে যাওয়া হয়নি। কাজেই মোবাইলের ক্যামেরাই ছিল ভরসা। তাই খুব একটা ভালো মানের ছবি তুলতে পারিনি বলে মনটা খারাপ হয়েছে।
ওয়াচ টাওয়ার
টিলার উপরে ইট বিছানো রাস্তা
ওয়াচটাওয়ারের উপর থেকে দেখা দৃশ্য
ওয়াচটাওয়ারের উপর থেকে তোলা ছবি
ওই দূরে ভারতীয় সীমানা
মধুটিলা পিকনিক স্পটের একেবারে ভেতরের বড় গেস্টহাউজটির ভাড়া পড়বে দৈনিক ৪৫০০ টাকা। আর ছোট ছোট পিকনিক স্পটগুলোর ভাড়া দৈনিক ৬৫০ টাকা। সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত থাকতে পারবেন এখানে। সপ্তাহে সাতদিন খোলা। পিকনিক স্পট ভাড়া নেবার জন্যে যোগাযোগ করতে পারেন জনাব এনায়েত সাহেবের সাথে যিনি এখানকার রেঞ্জ অফিসার। তাঁর ফোন নম্বরটি হলো: ০১৭১২২৭২০২৪।
ভেতরের বড় গেস্টহাউজটি
লেকের ওপরের দর্শনীয় ব্রীজ
ব্রীজ থেকে দেখা লেক
কিভাবে যাবেন: শেরপুর শহর পর্যন্ত যেতে সাধারনত ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটই ভালো। তবে এখন এই রুটে ভয়াবহ জ্যাম। জ্যামের কারণ হলো রাস্তা ঠিক করা হচ্ছে। তাই ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা হয়ে শেরপুর যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এই রুটে নিজস্ব গাড়িতে সাড়ে পাঁচ ঘন্টার মতো সময় লাগবে। আবার দুপুর ১.১০ মিনিটে মহাখালীর টাঙ্গাইল বাসস্ট্যাণ্ড থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে ’এসি সুপার’ বাসে’ও যেতে পারেন। দুপুর ২.৩০ এ রয়েছে ’এসি ডিলাক্স’। জনপ্রতি ২৫০/= টাকা করে ভাড়া। এসি ডিলাক্স বাসের সিট বুকিং-এর জন্যে জনাব মোস্তাক-কে ফোন দিতে পারেন এই নম্বরে: ০১৭৩৪১৯০৬৬৫।
শেরপুর শহরে থাকতে হলে: পিকনিকের জন্যে যদি যেতে চান, তাহলে খুব ভোরে রওনা দিয়ে দুপুর নাগাদ মধুটিলা পৌঁছাতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে জার্নির ধকলটা বেশি পড়বে। তাই শেরপুর শহরে '’হোটেল সম্পদ’'-এ কাটাতে পারেন এক রাত। ’হোটেল সম্পদ’-এর নম্বর: ০১৭১৮২৯০৪৪৭।
শেরপুর শহর থেকে যদি গাড়ি ভাড়া করতে চান: হযরত ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন রেন্ট-এ কার-এর জন্যে। ফোন: ০১৭১৪৯৯০৩৪৭। অথবা সুমন ভাইয়ের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন: ০১৭৩৪১৮৩০৩৫।
আমার অন্যান্য ভ্রমণকাহিনীগুলো পড়ার জন্যে এখানে ক্লিক করুন।