আজ আলোচনা করতে চাই এমন কিছু উদ্ভিদ নিয়ে যারা সভ্যতার ইতিহাসে শুধু বড় অবদানই রাখেনি বরং ইতিহাসই পালটে দিয়েছে।
গম (wheat) :
গম বা সম্ভবত মানুষের প্রথম চাষকৃত ফসল।শ্বেতসার আর অন্য উপাদানে ভরা সোনালী দানার এই সুস্বাদু ফসল যাযাবর মানব জাতিকে স্বায়ী আবাস দিয়েছে করেছে নগর সভ্যতার সূচনা।অনেক প্রাচীন প্রত্নস্থান গম বা গমের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে। ফারটাইল ক্রিসেন্ট নামে পরিচিত টাইগ্রিস ইউফ্রেটিস নদীর তীরে মেসোপটেমিয়া,নীলনদ বিধৌত মিসর ও আরো কিছু অঞ্চলে গম চাষ শুরু হয়।তবে একেবারে প্রথমে তুর্কি ও জর্ডান এলাকায় এর চাষ শুরু হয়েছিল বলে একটি গবেষনায় জানা গেছে।
ফারটাইল ক্রিসেন্ট
নব্যপ্রস্তরযুগে গম চাষ অঞ্চল কেন্দ্র করে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে গ্রাম তারপর উন্নত নগর।ব্যাবিলন আর আসিরিয় সভ্যতাও গড়ে উঠেছে এই শস্যকণা চাষকে কেন্দ্র করে।তখন পলিযুক্ত উর্বর ভূমিতে সহজেই গম চাষ করা যেত,খাদ্য হিসাবে এটা ছিল চমৎকার তাছাড়া বহুদিন ধরে সংরক্ষন করা যেত সহজেই।তাই এটি ছিল সভ্যতার ইতিহাসের প্রথম ফসল।গমের বৈজ্ঞানিক নাম (Triticum aestivum) ট্রিটিকাম এস্টিভাম।এটি মূলত এক ধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ।যদিও তখনকার গম ঠিক এখনকার মত ছিল না।বুনো প্রজাতি থেকে বার বার বাছাই আর সংকরায়ন করে চাষের ফলে গম বর্তমান অবস্থায় এসেছে।প্রকৃতিতে এখনও গমের নানা বুনো প্রজাতি পাওয়া যায়।বর্তমানে পৃথিবীতে গম চাল এবং ভুট্টার পর ৩য় প্রধান খাদ্যশস্য।
গম
চোখ জুড়ানো গমের মাঠ
প্যাপিরাস (Papyrus) :
আহ!সেই প্রাচীন মিসর, ফারাও, ক্লিওপেট্রা, নেফারতিতি,মমি,পিরামিড আর প্যাপিরাস!!! প্যাপিরাসকে বলা যায় পেপার বা কাগজের পূর্বপুরুষ।কাগজের আবিষ্কার মানব সভ্যতার ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা অংশ।আর এর সাথে জড়িয়ে আছে যে উদ্ভিদটির নাম তার নামও প্যাপিরাস। বৈজ্ঞানিক নাম (Cyprus papyrus) সাইপেরাস প্যাপিরাস।এটি মূলত শর বা হোগলা জাতীয় উদ্ভিদ যা আফ্রিকা,মাদাগাস্কার ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে জন্মে।নীলনদের কর্দমাক্ত তীরে উজ্জ্বল সূর্যালোকিত স্থানে প্যাপিরাস ব্যাপকহারে জন্মাত।এটি মূলত জলাভূমির উদ্ভিদ।ঘাসের মত গুচ্ছ গুচ্ছ কান্ড ও মূল হয় প্যাপিরাসের।কান্ডগুলো প্রায় ১৩ থেকে ১৬ ফুট লম্বা হয়।ত্রিকোণাকৃতি কান্ডের গায়ে কোনো পাতা থাকে না।কান্ডের শীর্ষদেশে সবুজাভ বাদামী গুচ্ছাকার শস্যবীজ হয়।শুধু কাগজ তৈরিতেই নয় প্যাপিরাসের শক্ত নমনীয় কান্ড বুনে চেয়ার,নৌকা,মাদুর ইত্যাদি আসবাব বানানো হতো।তবে দু:খের কথা এই যে প্যাপিরাস এখন নীলনদের তীর থেকে প্রায় বিলুপ্ত।হয়ত অতি আহরণ আর অসচেতনতার জন্যই এই অবস্থা।অনেক জায়গাতে প্যাপিরাস শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসাবে লাগানো হয়।
প্যাপিরাস গাছ
প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো প্যাপিরাস
যেভাবে বানানো হত প্যাপিরাস পেপার
প্যাপিরাস এর কান্ডগুলিকে টুকরা করে কেটে নিয়ে বাইরের সবুজ ছাল ছাড়িয়ে নেয়া হত।তারপর ভেতরের হলুদ পাতলা অংশগুলি লম্বা লম্বা স্ট্রিপ এর মত কেটে পানিতে ভিজিয়ে রাখা হত।তারপর এই স্ট্রিপগুলি পরপর সাজানো হতো এমন ভাবে যেন একটার উপর অন্যটার শুরুর অংশ উঠানো থাকে।এভাবে এক পরত দিয়ে তার উপরে আড়া আড়ি আরেক পরত সাজানো হতো।এবার এর উপরে পাথরের স্লাব বা ভারি কিছু দিয়ে চাপা রাখা হতো কয়েকদিন।এর ফলে স্ট্রিপগুলি একে অন্যের সাথে লেগে মোটা টেকসই একধরনের কাগজে পরিনত হতো।স্ট্রিপগুলো আটকাতে কোনো আঠা ব্যবহার করা হত না কারন এদের নিজস্ব আঠাতেই চাপের ফলে এগুলো পরষ্পর লেগে যেত।এবার প্যাপিরাসগুলোকে একটার শেষে একটা আঠাদিয়ে লাগিয়ে দুপ্রান্তে দুটি কাঠের খন্ড দিয়ে পেঁচিয়ে প্যাপিরাস স্ক্রোল তৈরী করা হতো।স্ক্রোলগুলো সাধারনত এক ফুট চওড়া কিন্ত অনেক লম্বা এমনকি ১০০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতো।এগুলো এভাবে সংরক্ষণ করা সহজ ছিল।
প্যাপিরাস কাগজ
যেভাবে বানানো হত কাগজ
জলপাই (Olive):
অলিভ এর বৈজ্ঞানিক নাম (Olea europea)অলিভা ইউরোপীয়া।অয়েল কথাটাই এসেছে অলিভ থেকে।যদিও নব্যপ্রস্তরযুগ থেকে অন্য তেল উৎপাদনকারী ফসল যেমন তিল বা তিশি চাষ শুরু হয়েছে কিন্ত অলিভ অয়েল সভ্যতার ইতিহাসে ধরে রেখেছে বিশেষ স্থান।
অলিভ মূলত ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের ফসল।ছোট আকারের এই চিরহরিৎ বৃক্ষের সমগ্র ফল পিষে তৈরী হয় অলিভ অয়েল।এটি প্রাকৃতিকভাবে জন্মায় এশিয়া, ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে।প্রাচীন গ্রিসে অনেক আগে থেকেই অলিভ অয়েল তৈরি হত।ঐতিহাসিক ক্রিট দ্বীপে প্রচুর অলিভ জন্মাত।বর্তমান বিশ্বে অলিভ অয়েল উৎপাদন ও রপ্তানিতে স্পেন ও ইটালির পরেই গ্রিসের স্থান।
অলিভ উৎপাদন অঞ্চল
প্রাচীন গ্রিসের একটি অলিভ পেষার যন্ত্র
অলিভ গাছ ও তেল
প্রাচীনকাল থেকেই ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে অলিভ অয়েল উতপাদনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক কারখানা।এসময় জলপথে বিভিন্ন দেশে অলিভ অয়েল রপ্তানি হতো।বিভিন্ন দেশের মধ্যে বানিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার পেছনে এর অনেক ভূমিকা আছে আছে ঐতিহাসিক নানা গল্প তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ হচ্ছে নেভী বা নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠার বিষয়টি।ক্লাসে আমাদের এক শ্রদ্ধেয় স্যার বলেছিলেন প্রাচীনকালে আমেরিকা ও অন্যান্য দেশে অলিভ অয়েলের ব্যপক চাহিদা ছিল।তখন ব্যবসায়ীরা কাঠের বেরেল ভরে ভরে অলিভ অয়েল নিয়ে নৌপথে বানিজ্য করতে যেত।তখন এসব অঞ্চলে জলদস্যুদের খুব দৌরাত্ব ছিল।তারা প্রায়ই বাণিজ্যিক নৌবহরে হামলা করে মালামাল ছিনিয়ে নিত।এইসকল দস্যুদের আটকাতে তখন অস্ত্রসজ্জিত গার্ড রাখার ব্যবস্থা করা হয়।সেটাই একসময় নৌবাহিনী বা নেভীতে পরিনত হয়।ইন্টারনেট থেকে জানতে পারলাম ১৭৭৫ সালে ইউ এস নেভীর পদচালনাও শুরু হয় মূলত বানিজ্য জাহাজ গুলোকে জলদস্যুর কবল থেকে বাঁচাতে।
জলদস্যুর সাথে বানিজ্য জাহাজের সংঘাত চিত্র
তুলা(Cotton):
আমরা যে আরামদায়ক সুতি কাপড় ব্যবহার করি তুলা ছাড়া তা কল্পনা করা যায় না।তুলার চাষ ও ব্যবহার মানব সভ্যতার বস্ত্রের ক্ষেত্রে বিপ্লব ডেকে এনেছে।প্রাচীন কালে নানা প্রয়োজনে মানুষ গাছের বাকল পশুর ছাল ইত্যাদি দিয়ে নিজেকে আচ্ছাদন করত।আরো পরে আঁশ হয় এমন সব গাছ যেমন তিশি,গাঁজা গাছ বা পাট জাতীয় গাছ থেকে তন্তু নিয়ে কাপড় তৈরি করেছে।তবে তুলার ব্যবহারটাও একেবারে নতুন নয়।তুলার নানা প্রজাতি এশিয়া,আমেরিকা এবং আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই জন্মাত।৫০০০ বিসি তেও ইন্ডিয়াতে সুতি কাপড় তৈরি হতো বলে জানা যায় কারন সিন্ধু সভ্যতার ধংসাবশেষ থেকে তুলার সুতা পাওয়া গেছে।চীনদেশ সম্ভবত তুলার চাষাবাদ প্রথম শুরু করে এখনো তুলা উৎপাদনে চীন শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে যদিও রপ্তানিতে আমেরিকাই প্রথম।
তুলা গাছ ছোট গুল্ম জাতীয় একবর্ষজীবী গাছ।গাছের মাথায় বলের মত প্রায় গোলাকার ফল হয়।সেই ফলের বীজের গায়ে লেগে থাকা অবস্থায় থাকে শুভ্র নরম সূক্ষ্ম তন্তুময় তুলা।পরিপক্ক ফল ফেটে গেছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা মেঘের মত তুলা গাছের মাথায় ফুটে থাকে।এই তুলা থেকে তৈরি হয় সুতা এবং তা থেকে কাপড়।
তুলা গাছ ও মাঠ
গ্রিক পণ্ডিত ও ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস তার বইয়ে লিখেছেন ইন্ডিয়াতে একধরনের গাছ পাওয়া যায় যাতে উল হয়!
বোঝা যায় ইউরোপে তুলার ব্যবহার ছিলনা বলেই এই ভ্রান্ত ধারনা সৃষ্টি হয়েছে।এমনকি ১৩৫০ সালের দিকে এক ভদ্রলোক লিখেছেন ইন্ডিয়াতে একধরনের গাছে ছোট ছোট ভেড়া বাস করে যা থেকে উল হয়।তিনি একে বলেছেন ল্যাম্ব ট্রী এবং তুলাকে বলেছেন ট্রী উল!!!!বোঝা যায় সে সময় এনিয়ে অনেক আজগুবি গল্প প্রচলিত ছিল।এমনকি কি ছবিও আঁকা হয়েছে।
ইন্টারনেটে তুলা গাছের ভাল ছবি পেলাম না।বান্দরবন এ তুলা ক্ষেতে ট্যুরের সময় তোলা চমৎকার কিছু ছবি ছিল তা এখানে দিতে পারছিনা বলে খারাপ লাগছে।তুলার অনেকগুলো প্রজাতি চাষ হয় তবে ইন্ডিয়ান তুলার বৈজ্ঞানিক নাম (Gossypium arboreum) গসিপিয়াম আরবোরিয়াম।কৃত্রিম সব ফাইবারের যুগেও তুলা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত তন্তু।
তুলার ফল
নীল(Indigo):
মনে পড়ে ব্রিটিশ শাসনের দুইশ বছর?মনে পড়ে ধানের জমিতে জোর করে নীল চাষ করানো,নামে মাত্র দাদনের টাকা,নীলচাষীদের উপর কোম্পানির অত্যাচার,ঘরে ঘরে অসহায় মানুষের ক্রন্দন?না ভুলে যাওয়ার কথা নয় সেই ইতিহাস।এখন আলোচনা করবো সেই উদ্ভিদ নিয়ে যার জন্য এত হাঙ্গামা।নীলের উদ্ভিদবিজ্ঞানের নাম (Indigofera tinctoria) ইন্ডিগোফেরা টিংকটোরিয়া।নিরীহ দেখতে গাছটি বীন গোত্রের মানের মটরশুঁটি আর কৃষ্ণচূড়ার পরিবার ভুক্ত।লম্বায় এক থেকে দুই মিটার হয়।হাল্কা গোলাপি বা বেগুনি চমৎকার ফুল হয় এতে।
ইন্ডিগো এমন একটি রঙের শেড যা রংধনুর সাতটি রঙের একটি।রংধনুর বেগুনী এবং আকাশী রঙের মাঝের রংটিই নীল।নীল গাছের পাতা থেকেই এই নীল রঙ পাওয়া যেত।এজন্য পাতাকে পানি ভিজিয়ে রাখা হতো ফারমেন্টেশন এর জন্য।পাতা পচলে পাত্রের নিচে গাঢ় নীল অধঃক্ষেপ পড়ে যা কিছুটা প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হত প্রাকৃতিক নীল।এখন বেশিরভাগ রংই কৃত্রিম কিন্ত ইন্ডিগো এখনও পাওয়া যায় এবং যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।কাপড়,কাগজ ইত্যাদি রঙ করতে নীল ব্যবহৃত হয়।যে ডেনিম জিন্স এর চাহিদা পৃথিবীজোড়া তার জন্যও লাগে এই নীল।অনেক জায়গাতে এর চাষ হয় বর্তমানে।এত চাহিদার কারনেই ব্রিটিশ কলোনিয়ালরা ঘাড় ধরে মানুষকে নীল চাষ করাত।যার ফলে তৈরি হয়েছিল শোষণ এর ন্যাক্কারজনক এক ইতিহাস।
নীল রঙ এবং রঙিন সুতা
সিনকোনা (Cinchona) :
মশা নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহ্য সৃষ্টিগুলোর একটা।আর মশার কথা মনে আসলেই মনে আসে ম্যালেরিয়ার নাম।আর ম্যালেরিয়ার কথা মনে হলেই নাম আসে কুইনাইন এর।কুইনাইন আবিষ্কার মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ আবিষ্কার এর একটি।ঘন্টায় ঘন্টায় পালা করে জ্বর আসা, ঠকঠক কাঁপুনি, দিনের পর দিন বিছানায় শুয়ে থাকা এই সব কিছু নিয়ে ম্যালেরিয়া বড় বড় বীরপুরুষকেও কাবু কতে ফেলত।এই সবকিছু থেকে মানুষকে মুক্তি দিয়েছে কুইনাইন।কুইনাইন এক ধরনের এলকালয়েড যা ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্লাজমোডিয়ামকে মেরে ফেলে,সেই সাথে জ্বর ও কাঁপুনি কমায়।সিনকোনা গাছের বাকল থেকে কুইনাইন তৈরি হয়।এর বৈজ্ঞানিক নাম(Cinchona officinalis) সিনকোনা অফিসিনালিস।৫-১৫ মিটার লম্বা বৃক্ষ বা গুল্ম যাতে সাদা বা গোলাপি ফুল হয়।এর আদি নিবাস দক্ষিন আমেরিকার আন্দিজ পর্বত ও আসে পাশের অঞ্চলে।
সিনকোনা গাছ ও বাকল
সিনকোনা গাছের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই ছিল দক্ষিন আমেরিকার কিছু আদিবাসি গোত্রে।১৬৩৮ সাথে পেরুর ভাইসরয় এর স্ত্রী ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হয়।তখন তাকে কুইচুয়া (Quechua) আদিবাসিদের কাছে নেয়া হয় চিকিৎসার জন্য।গোত্রের চিকিৎসক তাকে তেতো স্বাদের এক পানীয় খেতে দেন।এর কিছুদিন পরেই তিনি ম্যালেরিয়া মুক্ত হন।তখন থেকেই এটি সভ্য জগতের নজরে আসে।পরে ১৭৪২ এর দিকে দ্বিপদী নামকরণ এর জনক ক্যারোলাস লিনিয়াস এই গাছের নামকরণ করেন লেডি ভাইসরয় কাউন্টেস অব সিনকোন এর নামের সাথে মিলিয়ে।তবে ১৫০০ সালের দিকের জার্নালেও সিনকোনা গাছের উল্লেখ পাওয়া যায়।তখন পেরু,চিলি,বলিভিয়া,ইকুয়েডর এসব দেশে প্রচুর সিনকোনা জন্মাত এবং আদিবাসি গোত্রগুলি এসব ব্যবহার করত।মজার ব্যপার হচ্ছে পেরু ও ইকুয়েডর এর জাতীয় বৃক্ষ সিনকোনা।অনেক প্রাচীন একটা চিত্র আছে যেখানে দেখা যাচ্ছে কুইচুয়া আদিবাসি আধুনিক বিজ্ঞানের হাতে সিনকোনা তুলে দিচ্ছে।
সিনকোনা এখনও পর্যন্ত কুইনাইন এর একমাত্র উল্লেখযোগ্য উৎস।১৯৪০ সাল পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার জন্য এটাই ছিল সবচেয়ে কার্যকরী ঔষধ।তারপর ক্লোরোকুইন নামক ঔষধ কম সাইড ইফেক্ট এর কারনে ব্যবহার করা হয়।বেশি কুইনাইন সেবনে রক্তক্ষরণ,লিভার ও কিডনির সমস্যার ঝুঁকি থাকে।তবুও মারাত্বক ম্যালেরিয়া হলে এখনও কুইনাইন দিয়েই চিকিৎসা করানো হয়।কুইনাইন ছিল জলকাদায় ভরা বঙ্গভূমির সবচেয়ে পরিচিত ঔষধ।এমনকি রবীন্দ্রনাথও তার গল্পে কুইনাইনের মারাত্বক তেতো স্বাদের কথা উল্লেখ করেছেন।
ব্লগটি লিখতে গিয়ে বুঝলাম এটি এক পর্বে শেষ করা সম্ভব নয় তাই দ্রুতই আরেকটি পর্ব দিয়ে শেষ করব ইনশাল্লাহ।
পরের পর্ব এখানে
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, ছবি:ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:৫৭