নান্দো প্যারাডো
নান্দো প্যারাডো বর্তমানে
রবার্তো কানেজা
রবার্তো কানেজা বর্তমানে
ফেয়ারচাইল্ড বরফের ভেতর নাক ঢুকিয়ে থেমে যাওয়ার আগেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রথম কয়েক সেকেন্ডেই সাতজন বাইরে ছিটকে যায়। পাঁচজন দুর্ঘটনার সাথে সাথে বা কিছুক্ষণ পরই মারা যায় আর সীটবেল্ট না বাঁধা বাকি দুজনের মধ্যে একজন বাতাসের ঝাপটা সইতে না পেরে মারা যায়। আরেকজন বাইরে ছিটকে পড়ে নরম তুষারের ভেতর ডুবে চিরতরে হারিয়ে যায়। তারপরও প্লেনের ভাঙা অংশে অনেকগুলো প্রাণ তখনও বেঁচে ছিল।
ফেয়ারচাইল্ড যেখানে অ্যান্ডেজের গায়ে ধাক্কা খায় সেখানে পর্বতের চূড়া ছিল প্রায় আশি ডিগ্রি খাড়া। প্রথম আঘাতের সঙ্গে সঙ্গেই পাখা ও লেজের অংশ এদিক-সেদিক ছিটকে যায়। সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ভেতরদিকে সেঁধিয়ে যায়। সামনে থাকা পাইলট কর্নেল জুলিও সিজার ফেরাদাস বেনিটেজ যন্ত্রপাতির প্যানেল ও হুইলের চাপে মারা যান আর বাঁ দিকে বসা কো-পাইলট লাগুরারা বুকে হুইল বিঁধে মারাত্মকভাবে আহত হন। দুর্ঘটনার পর ফিউজিলাজ থামার আগে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ফুট পর্বতের ঢালের দিকে ছুটে যায়। থামার সময় প্লেনের ডানদিকটা প্রায় পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী কোণে তুষারের মধ্যে ঢুকে পড়ে। সে স্থানের উচ্চতা ছিল ১২ হাজার ফুট।
ফিউজিলাজের অবস্থা তখন বর্ণানাতীত। প্লেনের সব সীট দুমড়ে-মুচড়ে সামনে ও ডানদিকে পড়ে আছে। চারিদিকে শুধু রক্ত আর রক্ত। অনেকেই হাত-পা ভেঙে সীটের নিচে আটকে গিয়ে মারাত্মক আহত হয়ে কাতরাচ্ছে। বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা বিস্ফোরণের ভয়ে বা তুষারের নিচে দেবে যাওয়ার ভয়ে ফিউজিলাজ থেকে বেরিয়ে আসে। যদিও তেলের ট্যাঙ্ক পাখার নিচে ছিল বলে আগুন লাগা বা বিস্ফোরণের আশঙ্কা ছিল না।
কিছুক্ষণ পর আরেকজন আহত মারা গেল। বারো হাজার ফুট ওপরে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ খুব কম থাকায় বেঁচে যাওয়াদের শ্বাসকষ্টও শুরু হল। তারপরও তারা হাঁপাতে হাঁপাতে আহতদের উদ্ধারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ল। আহতদের আর সীটের নিচে আটকে থাকা মৃতদেহগুলো টেনে বাইরে নিয়ে আসতে থাকল। ওদিকে বুক ভেঙে হুইল ঢুকে পড়া মারাত্মক আহত কো-পাইলট লাগুরারা মরণ চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন। জীবিতরা তাঁকে টেনে বের করার প্রাণপণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হল। তিনি তখন যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে আত্মহত্যা করার জন্য তাঁর সুটকেসে থাকা পিস্তল বের করে দিতে বললেন। কিন্তু সুটকেসে পিস্তল পাওয়া গেল না। তিনি তখন মুমূর্ষু অবস্থায় প্রলাপ বকা শুরু করলেন যে, 'আমরা কিউরিকো ছেড়ে এসেছি... আমরা কিউরিকো ছেড়ে এসেছি'।
তাঁর এই প্রলাপের কারণে ছেলেরা নিজেদের সম্ভাব্য অবস্থানের ভুল তথ্য পেল এবং বিশ্বাসও করল। কারণ প্লেনটা তিনিই চালাচ্ছিলেন। পাঁচজন ক্রু'র মধ্যে তখনও মেকানিক কার্লোস রোক বেঁচে থাকলেও তার কাছ থেকে অবস্থানের ব্যাপারে কোনরকম সাহায্য পাওয়া গেল না। কারণ মাথায় আঘাত পেয়ে সে তখন একেবারে বোবা হয়ে গেছে। শুধু ফ্যালফ্যাল করে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকছে।
সক্ষম ছেলেরা তারপর মৃতদেহগুলো আহতদের থেকে আলাদা করে ফেলল। মারাত্মক আহতদের যাদের বাঁচার কোন আশা নেই তাদেরকে মৃতদের সাথে বাইরে ফেলে রাখল। কিছুক্ষণ পরই হিমশীতল ঠান্ডা আর পেঁজা তুলোর মত ঝরা তুষারের আক্রমণে সবাই ফিউজিলাজের ভেতর আশ্রয় নিল। বাইরে রাখা দেহগুলো অল্পক্ষণের মধ্যেই তুষারের নিচে চাপা পড়ল। আর ফিউজিলাজের ভেতর বেঁচে যাওয়ারা নিজেদের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লাগেজ, সুটকেস ইত্যাদি থেকে গরম কাপড় বের করে গায়ে জড়িয়ে নিল। মেন্ডোজা থেকে কেনা সামান্য খাবার আর মদের সাহায্যে নিজেদেরকে চাঙা করার চেষ্টা করতে লাগল। তারপর ঘুমোতে যাবার সময় হলে রাতের শূন্য ডিগ্রীর নিচের প্রচন্ড ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য সবাই একে অপরকে জড়িয়ে উষ্ণ হবার চেষ্টা করতে করতে রাত পার করতে লাগল।
তিনটে একত্রিশ মিনিটে সান্টিয়াগো কন্ট্রোল আবার ফেয়ারচাইল্ডকে ডাকাডাকি করে কিন্তু কোন উত্তর পায়নি। কন্ট্রোল মনে করে যে কোন কারণে হয়ত ফেয়ারচাইল্ডের রেডিও কাজ করছে না। কিন্তু সাড়ে চারটে বেজে যাবার পর কন্ট্রোল সর্বশেষ চেষ্টা করার পরও যখন ফেয়ারচাইল্ড থেকে কোন সাড়া পেল না তখন কন্ট্রোল বুঝতে পারল ফেয়ারচাইল্ডের কিছু হয়েছে। তখন কন্ট্রোল এয়ার সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস (এস এ আর) এর ডিউটি অফিসারকে ফেয়ারচাইল্ডের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ জানালো।
এস এ আর কমান্ডার খবর পাওয়ার একঘন্টার মধ্যেই এয়ার সার্চের ব্যবস্থা করলেন। ফেয়ারচাইল্ড বিধ্বস্ত হওয়ার ঠিক দু'ঘন্টা পর প্রথম সার্চ বিমান আকাশে উড়ল। তারপর একে একে আরও তিনটি বিমান সার্চ পার্টিতে যোগ দিল। বিমান চারটি অন্ধকার হওয়ার আগ পর্যন্ত মোট পাঁচ ঘন্টা সাতাশ মিনিট কিউরিকো আর সান্টিয়াগোর মাঝের বিমানপথসহ পরিকল্পিত পথের উভয়দিকের দশ মাইল পর্যন্ত খুঁজে দেখল কিন্তু হারানো ফেয়ারচাইল্ডের কোন চিহ্নই দেখতে পেল না।
ছয়টা বাজার কিছু পরই মন্টেভিডিওর রেডিও-টেলিভিশন এবং পত্রিকা অফিসে ফেয়ারচাইল্ডের হারানোর খবর পৌঁছে যায়। কিন্তু খবরগুলো বেশ বিভ্রান্তিকর ছিল। ফলে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে একে অপরের কাছে আসল খবর জানার জন্য যোগাযোগ করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত রাত এগারটায় টেলিভিশনে চূড়ান্তভাবে সঠিক এবং বিস্তারিত খবর প্রচার করে। ফেয়ারচাইল্ড মেন্ডোজাতে যাত্রাবিরতি করে পরদিন দুটো আঠার মিনিটে সান্টিয়াগোর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার পর তিনটে চৌত্রিশ মিনিটের দিকে প্লানচন গিরিপথে নিখোঁজ হয়ে যায়। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে কান্নার রোল পড়ে যায়। দেশব্যাপী নেমে আসে শোকের ছায়া।
রাতে এস এ আর সদর দফতরে কমান্ডার মেজর জুয়ান ইভানোভিক প্রাক্তন দুই অভিজ্ঞ এস এ আর কমান্ডার কার্লোস গার্সিয়া ও জর্জ মাসসাকে নিয়ে উদ্ধার অভিযানের ব্যাপারে আলোচনা-পর্যালোচনা করেন। তাঁরা বিমানের গতিপথ, ওড়ার সময় ও সম্ভাব্য ক্র্যাশের স্থান নিয়ে আলোচনা করে চারদিকে বিশ মাইল পর্যন্ত এলাকা নিয়ে একটা স্কয়ার আঁকলেন। সেই স্কয়ারের মধ্যে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হল। অনুসন্ধানের এলাকা চিহ্নিত করার পর আরেকটি অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারী সংস্থা রেসকিউ প্রুপ অভ চিলি (সি এস এ)'র সাথে যোগাযোগ করল এস এ আর। এর আগেও দুই সংস্থা একত্রে বহু দুর্ঘটনা কবলিত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। তাই দুই সংস্থা মিলে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল। তারা কেউ জানল না যে তাদের পরিকল্পিত ও অংকিত স্কয়ারের মধ্যেই পশ্চিমে টিংগুইরিরিকা ও পূর্বে সসনেইদো পর্বতশৃঙ্গের মাঝে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ফেয়ারচাইল্ড।
পরদিন ১৪ অক্টোবর শনিবার এস এ আর চিলি বিমান বাহিনীর কাছ থেকে ধার করা তিনটে বিমান নিয়ে দুই ঘন্টা পাঁচ মিনিট ফেয়ারচাইল্ডকে খোঁজাখুঁজি করে। ওদিকে একই সময়ে আর্জেন্টিনার দুটি জেট এফ-৮৬ মেন্ডোজা থেকে উড়ে আর্জেন্টিনার সীমানায় খুঁজে দেখে। দুপুর বারোটা থেকে একটার মধ্যে একটি পুলিশ ও একটি প্রাইভেট বিমানসহ আরও একটি মোট তিনটি বিমান একই এলাকায় অনুসন্ধান চালায়। কিন্তু কেউ কোন সুখবর দিতে পারল না। সব মিলিয়ে শনিবারে মোট ১২টি বিমানের সাহায্যে ১৫টি অনুসন্ধান মিশন পাঠিয়ে ৩৬ ঘন্টা ১ মিনিট উড়িয়েও কোন খবরই দিতে পারল না এস এ আর।
দুর্ঘটনার পরদিন শনিবার সকালে ফেয়ারচাইল্ডের বেঁচে থাকা যাত্রীরা মৃতদেহগুলোকে টেনে নিয়ে বিমানের অদূরেই একটি সমান জায়গায় সযত্নে তুষারের নিচে কবর দিল। ফেয়ারচাইল্ডের ফিউজিলাজ ও সামনের দিকে যারা ছিল তাদের মধ্যে মারা গেছে মোট নয় জন। পাইলট ফেরাদাস, কো-পাইলট লাগুরারা, ডাক্তার নিকোলা, মিসেস নিকোলা, গ্র্যাজিয়েলা মারিয়ানি, ফারনান্দো প্যারাডোর মা মিসেস প্যারাডো, ফারনান্দো ভালকেজ, ফিলিপ মাকিরিয়ান এবং জুলিও মার্টিনেজ লামাস। আটজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কার্লোস ভেলেতা ওদের সামনেই তুষারের মধ্যে ডুবে গিয়েছিল। বাকি সাতজন হল- নেভিগেটর রেমন মার্টিনেজ, স্টুয়ার্ড ওভিডিও রামিরেজ, গিডো ম্যাগ্রি, গ্যাস্টন কস্তেমালে, দানিয়েল শ', আলিজো হাউনি ও হুয়ান কার্লোস মেনেন্ডেজ। ওরা ধারণা করে যে, এরা ভেলেতার মত বিমানের লেজের দিকে ছিল। ছেলেদের ধারণা ছিল যে, লেজের অংশের এরা কেউ কেউ এখনও বেঁচে আছে। কিন্তু আসলে এরা প্রথম ধাক্কায়ই মারা গিয়েছিল। অর্থাৎ এই দুর্ঘটনার সাথে সাথে এবং পরবর্তী কয়েক ঘন্টায় নিখোঁজসহ মোট সতের জন মারা গিয়েছিল আর বেঁচে ছিল মোট আটাশ জন। বেঁচে যাওয়ারা সবাই ছিল ফিউজিলাজে।
পাইলট ফেরাদাসের দেহ যন্ত্রপাতির প্যানেল আর হুইলের মাঝে এমনভাবে আটকে গিয়েছিল যে ছেলেরা অনেক চেষ্টা করেও তাকে সরাতে না পেরে সেখানেই রেখে দেয়। তারপর ফিউজিলাজটাকে বাসযোগ্য করার কাজে মন দেয় তারা। পেছন থেকে লেজ ছিটকে যাওয়ায় যে বড় গোল ফাঁকের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে তুষার জমেছে। কয়েক জায়গায় ছিদ্র হয়ে গেছে। কয়েকটা জানালাও নেই। বিভিন্ন ছিদ্র আর ফাঁকফোকরগুলো কাপড় গুঁজে বন্ধ করে দেয় ছেলেরা। ফিউজিলাজ থেকে বাইরে যাওয়া-আসার জন্য তুষারের ভেতর দিয়ে টানেল তৈরী করে। তারপর মেন্ডোজা থেকে কেনা খাদ্যসামগ্রী এক জায়গায় জড়ো করে রেশন সিস্টেম করে। পানির জন্য কোন চিন্তা ছিল না, কারণ চারিদিকে বরফের ছড়াছড়ি ছিল। প্রথমে সরাসরি বরফ খাওয়া শুরু করে ছেলেরা। কিন্তু সরাসরি বরফ খাওয়া ক্ষতিকর জেনে বরফ গলিয়ে পানি বের করার উপায় বের করে। একজনের সুটকেসে মেয়ের বিয়ের জন্য দুই মিলিয়ন পেসো ছিল। সেগুলো পুড়িয়ে বরফ গলিয়ে পানি বের করার ব্যবস্থা করা হয়। তারা আশা করে ছিল যে তাদেরকে নিশ্চয় খুব তাড়াতাড়িই উদ্ধার করা হবে। বড়জোর তিন-চারদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে। তাই ছেলেরা অতটা চিন্তিত হয়নি। কিন্তু বিধাতা হয়ত অন্য কিছুই তাদের কপালে লিখে রেখেছিলেন।
দুর্ঘটনা ঘটেছিল আর্জেন্টিনা এলাকায়। দুর্ঘনাস্থল থেকে মাত্র পাঁচ মাইলেরও কম দূরত্বে পুব দিকে আর্জেন্টিনার এলাকায় একটি গরমকালীন হোটেল ছিল। শীতকালের কারণে যদিও সেটা বন্ধ ছিল, কিন্তু ওখানে আগুন জ্বালানোর জন্য লাকড়ি, টিনজাত খাবার আর ম্যাপ ছিল। কিন্তু কো-পাইলট লাগুরারার মৃত্যুকালীন প্রলাপ বিশ্বাস করে ছেলেদের ধারণা ছিল যে, তারা অ্যান্ডেজ পার হয়ে চিলির কোন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। তাই তারা চিলির দিক থেকেই সাহায্য আসবে এই আশায় অপেক্ষা করে ছিল।
রোববারে নয়টি অনুসন্ধান মিশন পাঠাল এস এ আর। মোট ২৯ ঘন্টা ২৫ মিনিট অনুসন্ধান চালায় তারা। কেউ উপর দিয়ে, কেউ নিচ দিয়ে, কেউ গিরিখাতের গভীরেও নজর বুলিয়েছে; কিন্তু সন্ধান পায়নি। ১৬ অক্টোবর আবহাওয়া খারাপের দিকে যেতে থাকে। তাই আরও ব্যাপকভাবে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত হল। আর্জেন্টিনার জেটসহ মোট ১৭টি বিমান ২৩ বারে মোট ৫৫ ঘন্টা উড়ল। অত্যাধুনিক সূক্ষ্ম ফটোগ্রাফিক যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করা হল। কিন্তু নিখোঁজ ফেয়ারচাইল্ডের কোন সন্ধানই কেউ করতে পারল না। পরদিন মঙ্গলবার বিদ্যুৎ ও তুষার ঝড়ের মধ্যেও প্রায় ২ঘন্টা ৪৫ মিনিট অনুসন্ধান কাজ চালানো হল, কিন্তু ফলাফল শূন্য। পরবর্তী তিন দিনও আবহাওয়া একই রকম থাকল। বুধবার থেকে শুক্রবার এই অবস্থাতেই মোট ১৪ ঘন্টা অনুসন্ধান চালাল এস এ আর। কিন্তু ফেয়ারচাইল্ডকে খুঁজে পাওয়া গেল না।
শনিবার ২১ অক্টোবর উরুগুয়ের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আগত বিমান বাহিনীর অফিসার, অভিভাবক ও সাংবাদিকদের ডেকে এস এ আর কর্তৃক অনুসন্ধান কাজ বাতিল ঘোষণা করলেন। দুর্ঘটনার পর আট দিন পার হয়ে গেছে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়া এই ঠান্ডায় এখন আর যাত্রীদের বেঁচে থাকার কোন সম্ভাবনাই নেই। তাই অনুসন্ধান কাজ বাতিল ঘোষণা করা হল। সম্ভাব্য সবরকম প্রচেষ্টাই চালিয়েছে এস এ আর। তাই অভিভাবকরা পাবলিক স্টেটমেন্টের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একে একে প্রায় সবাই মন্টেভিডিওতে ফিরে গেলেন।
আগামী পর্বে সমাপ্য।
ছবিঃ গুগল।
সূত্রঃ ইন্টারনেট ও সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বই "আন্দেজের বন্দি"।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩১