কুল্লু এবং মানালী যেখান থেকে ভাগ হয়ে গিয়েছে সেখানে গাড়ী আবার দাড় করালো, সম্ভবত লোকাল কিছু মাল গাড়ীতে তুলল,
চলেন এই সুযোগে সেখানকার কিছু ছবি দেখি,
বাস থেকে নামার আগেই বেশ কিছু লোক আমাদের ঘিরে ধরলো, ভাইসাব হোটেল চাহিয়ে, গাড়ী চাহিয়ে, আমরা কাউকে কিছু না বলে সামনের দিকে হেটে হেটে এগিয়ে গেলাম কিন্তু অচেনা জায়গা বিধায় বাপের বয়সী একজনকে বললাম এখানের হোটেল এরিয়া কি সামনে? ব্যস কাম সারছে! সে বলল হ্যাঁ দাদা, আপ লোক কাহা সে আয়া? আমরা বললাম কলকাতা ছে, পাইছে আমাগো মুরগী! বলল আসো আমার গাড়ীতে আস, আমরা তো বেক্কল হয়ে গেলাম যাদের থেকে দূরে থাকবো মনে করলাম তাদেরই খপ্পরে পড়লাম তারপর ও কেমন জানি ভদ্র চেহারা দেখে ওনার সাথে কথা বললাম, যাক সে এবার আমাদেরকে তার ফাঁদে ফেলল, বলল দাদা গাড়ী পে উঠ না, ভাড়া নেহী লাগতাহে, তারপর সে মুল শহর থেকে একটু ভেতরে একটা হোটেলে নিয়ে গেল এবং একটা প্যকেজ ধরিয়ে দিল ২ দিনের ৬,৫০০ রুপীতে (থাকা+খাওয়া+সকল স্পট ঘোরা- পার্সোনাল কার) যদিও এই এমাউন্ট অনেক দর কষাকষি করার পর। যাক আর কি করবো, হোটেল ভালই পাশেই বিশাল খোলা জায়গা কাছাকাছি পাহাড় দেখতে ভালই লাগছে ঠাস ঠাস করে কিছু ছবি হয়ে গেল।
তারপর গরম পানিতে গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিলাম এবং দুপুর ২ টায় বের হোটেলে গাড়ী চলে আসলো আমরা ২ জন বেরিয়ে পরলাম মানালী শহরের আশে পাশে সাইট সিইং করতে।
প্রথমে একটা মনেস্ট্রী মানে মন্দির দেখলাম অনেক পুরোনো,
Tibetan Monasteries & Mall Road:
একটি পুরোনো মন্দির, একটি বুদ্ধের মূর্তি আর সামনের দিকে অপরিকল্পিত ভাবে জন্মানো কিছু ফুল গাছ ছাড়া আর মূলত কিছুই নেই ভেতরে, এটি চাইলে হেটে হেটে ও দেখে আসা যায় মানালীর মূল জায়গার নাম হল, মল রোড, মূলত এটিই শহর আমাদের ঢাকার বেলী রোডের মতন একটা এরিয়া তবে টুরিস্ট এলাকা হওয়াতে ইউরোপ আমেরিকার অনেক পর্যটক দেখা যায় ওখানে। এখান থেকেই তারা বিভিন্ন পাহাড় পর্বত ট্রেকিংএর জন্য যাত্রা শুরু করে। তেমন কোন উল্লেখ যোগ্য ভাল দোকানপাট নেই যা আছে লোকাল মানুষের পরিচালিত লোকাল জিনিসের দোকান। মানালীর ট্রাভেল এজেন্সী, মানি চেঞ্জার, বাজার, স্কুল বাস স্ট্যন্ড সবই এই একই রোডে পাওয়া যাবে।
আরো বেশি কিছু জানতে চাইলে দেখতে পারেন এই ওয়েব সাইটেঃ বিস্তারিত জানতে দেখতে পারেন এখানে
Hadimba Temple
মল রোড থেকে মাত্র দেড় কিঃমিঃ দূরে এই মন্দিরের অবস্থান, এখানে আছে কাঠের তৈরী একটি অনেক পুরোনো মন্দির।মোটামোটি অনেক বড় এলাকা নিয়েই গড়ে উঠেছে প্রাচীন এই মন্দিরটি। আমি যা দেখলাম আসলে সেটা দেখার জন্য দেখা কিন্তু এর মুল সৌন্দর্য নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারীতে যেটা নিচের ছবি দেখলেই বুঝবেন।
আমি যা দেখলামঃ
CLUB HOUSE :
এই জায়গাটাতে ঢুকতে টিকেট কাটতে হয় ২০ রুপি, ভেতরে কিছু দোকান পাট, এবং কিছু গেইমিং এর ব্যবস্থা রয়েছে, পানির একটা পুল এবং একটা বড় চাকার মতন বেলুন তার ভেতরে মানুষ ঢুকে এবং বেলুন পানির ওপরে ঘুরে, নিচের ছবিটা দেখলেই বুঝবেন কি জিনিস, তবে তার জন্য এক্সট্রা পে করতে হবে, এখানে আরো আছে একটা গুহা যেটা বাচ্চাদের জন্য, পাশেই লাগোয়া “মানালসু নালা” পাথুরে নদী আর এটিই এখানকার সবচেয়ে দেখার এবং সুন্দর জায়গা। বড় বড় পাথরের ফাকা দিয়ে ঢালুতে অনবরত পানির স্রোত বয়ে যাওয়া এবং ওপাশে পাইনের জংগল নানা রকম পশু পাখির ডাক সত্যি একটা চমৎকার বিকেল কাটানোর আদর্শ জায়গা।
কিছু ছবি দেখি ওখানকার-
তারপর গাড়ী নিয়ে চলে এলাম মানালীর হার্ট পয়েন্টে “ মল রোড” তখন সন্ধ্যা ঘনায়, আমরা গাড়ী ছেড়ে দিলাম এবং জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম, অফ সিজন কিন্তু পর্যটকের কমতি নেই, শুধু যে বিদেশী তা নয় ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে ও অনেক মানুষ আসে এখানে। এই জায়গায় সন্ধ্যার পর সময় কাটানোর খুব বেশী কিছু নেই, তবে যাদের একটু লাল পানি পানের অভ্যাস আছে তাদের জন্য একটি ড্যন্স বার রয়েছে যেটি খুবই নিন্ম মানের, আর শীত প্রধান এলাকা হওয়ায় প্রতিটি হোটেলেই কম বেশী বার রয়েছে, এছাড়া মল রোডে ও ২-৩ টি দোকান আছে।এভাবেই আরো একটি দিন শেষ হয়ে গেল, তারপর আমরা কিছু ফল, পানি কিনে হাটতে হাটতে হোটেলে চলে গেলাম।রাতের খাবার খেয়ে কম্বল গায়ে দিয়ে দিলাম ঘুম, পরদিন সকালে গাড়ী আসবে, ঊদ্দেশ্য রোটাং পাস
চলবে >>> তবে আজকেই দিব সব পোষ্ট, প্রতিদিন ভাল্লাগেনা দিতে
শুধুমাত্র ছবি আপলোডের সীমাবদ্ধতার জন্য, আমার দোষ নাই।
৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) প্রথমাংশ
৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) ২য় অংশ
৭ দিনে ভারতের ৩ প্রদেশ ভ্রমণ ( দৌড়ের উপরে ট্যুর ) চতুর্থ অংশ
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬