বাঙ্গালীদের এটি একটি বড় অর্জনঃ একটি জায়গার নাম পরিবর্তন করে ফেলল!গুগল ম্যপে সাদুল্যাপুর গ্রাম হয়ে গেল আজকের গোলাপ গ্রাম। অথচ এই এলাকার নাম শুধুমাত্র মানুষের মুখে মুখেই পরিবর্তন হয়ে গেল, চলেন ছবিতে ঘুরে আসি ফুলের মতন সুন্দর এই গোলাপ গ্রাম।
এটি মিরপুর দিয়াবাড়ী নৌকার ঘাট, এখান থেকেই পাবেন প্রতি ২০ মিনিট পর পর ট্রলার, ভাড়া ২০ টাকা, পোউছানোর সময়কাল- ৪০-৪৫ মিনিট।
হঠাৎ করে শহরের চরম ধুলাবালি ছেড়ে তীব্র গন্ধ যুক্ত শান্ত নদীর উপর দিয়ে যাত্রা শুরু, প্রথমে একটু খারাপ লাগবে কিন্তু ১০ মিনিট পর যখন শহরকে দূরে ঠেলে দিয়ে সরু খালাকৃতির নদীর দুপাশে ঘন সবুজ দেখবেন আশা করি কারোই খারাপ লাগবে না, অসম্ভব সুন্দর দুপাশের ঘন সবুজ যেটা দেখার আদর্শ সময় পড়ন্ত বিকেল, আসেন ছবিগুলো দেখি।
ঢাকার সমস্ত পাখিদের আবাসস্থল মনে হয় এখানেই, উচু উচু বিদ্যুতের পিলারের তারে বসে থাকে হাজার হাজার কাক
বকের দল বেধে উড়ে চলা আর রয়েছে হাঁসেদের জলকেলি।
অবশেষে তরী ভিড়ল ঘাটে, ঘাটের পাশেই গোলাপের বাগান শুরু, অবশ্য বাগানে ঢুকতে জনপ্রতি ১০ টাকা দিতে হবে, যা গোলাপের সৌন্দর্যের কাছে অতি নগণ্য।বাগান থেকেই টাটকা ফুল মাত্র ৫ টাকা প্রতি পিছ কিনতে পারবেন। চলেন আবার ছবি দেখি।
আমাকে ও একটু দেখেন বাগানে
যাবার আসার খাবার ইতিহাস সব গুগলে খুজলেই পাবেন তাই বললাম না,
আমার বাসা পুরান ঢাকায় আমি এখান থেকে যেভাবে গিয়েছি সেটাই বলছি,
আসলাম তো মিরপুর দিয়াবাড়ী দিয়ে ট্রলারে, কিন্তু গিয়েছি বাই রোডে যাতে করে সব রাস্তা গুলোই চিনে নিলাম, আমি রিক্সা পছন্দ করি তাই বেশির ভাগ পথ রিক্সাতে করেই চলেছি গ্রাম দেখতে দেখতে।
সাদুল্যাপুর বাজার থেকে – রিকশায় – আরকান মোড়- ভাড়া – ৪০/-
আরকান মোড় থেকে- রিকশায় – বিরুলিয়া নতুন ব্রিজ- ভাড়া – ৩০/-
বিরুলিয়া নতুন ব্রিজ থেকে – উড়ন্ত ম্যক্সিতে – উত্তরা দিয়াবাড়ীর মোড় বা পঞ্ছবটীর মোড়- ৫/-
পঞ্চবটীর মোড় থেকে- রিক্সায় – উত্তরা খাল পাড় – ভাড়া – ৭০/-
উত্তরা খাল পাড় থেকে – রিক্সায় – উত্তরা জসীম উদ্দিন – ৫০/-
উত্তরা জসিম উদ্দিন থেকে – রিক্সায় – এয়ারপোর্ট রেল স্টেশন – ২০/-
তারপর ট্রেনে কমলাপুর – তারপর রিক্সায় বাসা।
এই সব কিছু শেষ করে বাসায় আসতে ২.৫০ ঘন্টা লেগেছে।
চাইলে গাড়ী নিয়ে যাওয়া যায় সরাসরি, কিছুটা রাস্তা খারাপ আছে, রুটটা দিয়ে দিচ্ছি,
মতিঝিল- উত্তরা- আব্দুল্লাহপুর – আশুলিয়া হয়ে মিরপুর বেড়িবাধ দিয়ে একটু সামনে গেলে হাতের ডানে বিরিলিয়া নতুন ব্রিজ – প্রথম যে চৌরাস্তা পড়বে সেটার হাতের বামের গলিদিয়ে শেষ মাথায় ই গোলাপ গ্রাম, ২ কিঃমিঃ হবে।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কিকরনঃ ট্রলারে যাবার সময় কেউ হাত পা ছেড়ে দাড়িয়ে থাকবেন না, নদীতে পানি একদম কম হঠাত হঠাত মাটির সাথে ট্রলার আটকে গিয়ে জোরে ধাক্কা খায়, আমাদের ট্রলার থেকে একজন পড়ে গিয়েছিল কিন্তু পানি কম থাকায় তেমন কিছু হয়নি শুধু ভিজে গিয়ে ছিল। সাবধান।
ওখানে খাবারের তেমন স্পেশাল কিছুই নেই, নিয়ে গেলে ভাল, লাঞ্চ ও নেই।
এখনো এলাকার মানুষ সরল, তাই চলাফেরায় কোন ঝামেলা নেই। আরেকটা কথা মিরপুর দিয়াবাড়ী ঘাট থেকে ইঞ্জিন ছাড়া নৌকাতে না চড়াই ভাল এখানে অনেক বড় বড় মালবাহী ট্রলার ও চলে তাদের ঢেউতে নৌকা উল্টে যেতে পারে এবং গোলাপ গ্রাম যেতে অনেক সময় লাগবে, যদিও নৌকায়ালার বলবে ১ ঘন্টা লাগবে, সেটা মিথ্যা কথা, ট্রলারেই লাগে ৪৫ মিনিট !
এভাবেই ফুল বানিজ্য চলে এখানে শহরের মানুষের জন্য পসরা সাজিয়ে বসে শহরের ফেরিওয়ালারা।
সবাইকে গোলাপের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০৫