একজন সার্ডিং ডিপ্লোম্যাট বা কর্মরত কূটনৈতিকের কূটনৈতিক পাসপোর্ট কখনো বাতিল করা যায় না। এক্ষেত্রে হয় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে অথবা সংশ্লিষ্ট কূটনীতিককে আগে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে হবে। মিথিলা ফারজানা এবং অপর্ণা পালের ক্ষেত্রে এর কোনোটাই ঘটেনি। অথচ অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে তাদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নজিরবিহীন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা উৎখাত হয়। ৫ আগস্ট রাতেই মিথিলা ফারজানা এবং তার স্বামী ও ছেলের অনুকূলে থাকা ৩টি এবং অপর্ণা পালের অনুকূলে থাকা ১টি মোট ৪টি কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের আবেদন করা হয়।
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডিএম সালাউদ্দিন আহমেদ, মিথিলা ফারজানা, অপর্ণা পাল এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট সাধারণ পাসপোর্টে পরিবর্তনের জন্য ফাইল প্রস্তুত করে তা অনুমোদনের জন্য তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে উপস্থাপন করেন। পররাষ্ট্র সচিব ফাইলটি তাৎক্ষণিকভাবে অনুমোদন দেন। অর্থাৎ ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেওয়ার আগেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া এই বিতর্কিত দুই কর্মকর্তাও তাদের পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে থাকা ৪টি কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করে সাধারণ পাসপোর্ট পাওয়ার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল সংক্রান্ত এই ধরনের ফাইল সাধারণত সহকারী সচিব অথবা সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা উত্থাপন করে থাকেন। কিন্তু এক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে তৎকালীন মহাপরিচালক (প্রশাসন) নিজেই ফাইলটি উত্থাপন করেন এবং তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তাৎক্ষণিকভাবে তা অনুমোদন করেন।