একটু বেশি আবেগপ্রবন যারা, তারাই এই ফাটিয়ে দেয়ার আগেই করে বসি কয়েকটি ভুল। ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া ভালো, আরো ভালো ভুল করার আগেই শিক্ষাটি নিতে পারা। আসুন তবে আজ দেখা যাক নতুন ডিজিটাল ক্যামেরা মালিকের ভুলগুলো কি কি-
এক· ঢাউস সাইজের ইমেজ ফাইল ই-মেইল করে পাঠানো
নতুন ক্যামেরাটি হাতে পাওয়ার পর পরই আমাদের ইচ্ছে হয় ক্যামেরাটির স্মার্টনেস এবং নিজের ফটোগ্রাফি প্রতিভার খবর বন্ধুদের জানানো। ফটোগ্রাফিতে নিজের প্রতিভা থাকলে তো খুবই ভালো, আর এটা অন্যকে জানানোতেও দোষের কিছু নেই। তবে সেই ইমেজ ফাইল অন্যকে ই-মেইল করে পাঠানোর আগে ফটোর সাইজটি ছেট করে নেয়া উচিত- যাতে করে এটা ডাউনলোড করতে আপনার বন্ধুর বেশি সময় না লাগে।
দুই· ইমেজ ফাইল ব্যাকআপ না করা
অনেকেই নিজের ফটোর নেগেটিভ যুগ যুগ ধরে সংরক্ষণ করেন। কিন্তু ডিজিটাল ফটোর বেলায় ওই আগ্রহটি কেন যেন থাকে না। আজ তোলা ছবিগুলো ডেস্কটপে রাখলেন, গতকালকের গুলো রেখেছিলেন জি ড্রাইভের ভেতর পিকনিক ফোল্ডারে, এতে করে দরকারের সময় কাঙ্ক্ষিত ছবি আপনি খুঁজে পাবেন এমন গ্যারান্টি আপনি নিজেই দিতে পারবেন না। মনে রাখবেন ডিজিটাল ক্যামেরা হাতে পেলেই আপনার প্রচুর ছবি তুলতে ইচ্ছে করবে। ফলে অল্প দিনেই আপনি প্রচুর ফটোর মালিক হয়ে যাবেন। এই ফটো গুছিয়ে রাখার অনেক উপায় আছে। তবে সবাই লাইব্রেরি সায়েন্স পড়বেন বা ক্যাটালগিং সিস্টেম জানবেন এমন কোনো কথা নেই- তার চেয়ে সহজ সরল ভাবে বছর ওয়ারি বা সাবজেক্ট ওয়ারি ফোল্ডার করে পিসিতে ফটো রাখুন। ধরা যাক ২০০৬ নামে একটি ফোল্ডার করলেন, তার মধ্যে আবার সাব ফোল্ডার করে রাখুন একেক ইভেন্টের ফটো।
তিন· ক্যামেরার ডিজিটাল জুম ব্যবহার
এটা একবারেই ভুয়া একটি অপশন। ক্রেতা টানার জন্যই ক্যামেরা কম্পানিগুলো এটা করে থাকে। বাস্তবে এর কোনো রেজাল্ট নেই। তাই কেবল ফটো তোলা নয়, ডিজিটাল কামেরা কেনার সময়েও ডিজিটাল জুমের অপশনে কোনো রকম গুরুত্ব দেয়ার দরকার নেই।
চার· কম রেজুলুশনে ফটো তোলা
অনেকেই ক্যামেরার মেমরি কার্ড বাঁচানোর জন্য কম রেজুলুশনে ফটো তোলেন। মনে করে দেখুন, যখন ফিল্ম ক্যামেরায় ফটো তুলতেন কতোটা হিসেব করে এক একটা ফ্রেম সেট করতেন। সে হিসেবে সবচেয়ে বড় সাইজে ফটো তুললেও আপনার ক্যামেরায় ফিল্মের চেয়ে বেশি ফটো তোলা যাবে। আজকের ফটো যদি আগামীর স্মৃতি হয়, তাহলে সেই স্মৃতিটি যেন বড় আর ডিটেইল হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
পাচ· ক্যামেরার সঙ্গে পাওয়া সফটওয়্যারটিই ব্যবহার করা
প্রতিটি ডিজিটাল ক্যামেরার সঙ্গেই থাকে একটি সফটওয়্যার সিডি। এতে সাধারণত একটি ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যার থাকে। অনেকেই কেবল এই সিডির সফটওয়্যারটিই ব্যবহার করেন। হ্যা, এগুলোতে ছবি এডিট করার কিছু শর্টকাট সিস্টেম দেয়া থাকে, তবে এগুলো কখনোই প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড টুল নয়। ফটো এডিট করার জন্য অ্যাডোবি ফটোশপ বা এ মানের কোনো এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করম্নন।
ছয়ঃ ক্যামেরটিকে বুঝতে একটু সময় দিন
অনেকে ক্যামেরাটি হাতে নিয়েই ফটো তুলতে শুরু করেন। এটা করার আগে ম্যানুয়ালটি ভালো করে পড়ে নিন। প্রতিটি যন্ত্রের নতুন মডেলই হয়ে থাকে আগেরটির চেয়ে আলাদা। ক্যামেরার বেলায় এই পরিবর্তনটি হয় বেশ অনেকখানি। তাই বেশিরভাগ সাধারণ নিয়মকানুন জানা থাকলেও ম্যানুয়ালটি আগে মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিন। সম্ভব হলে ম্যানুয়ালটির একটি ফটোস্ট্যাট কপি করে রাখুন। কারণ ক্যামেরা মডেল অনেক বেশি হয় এবং কোনো ম্যানুয়াল একবার হারিয়ে গেলে দ্বিতীয় কপি আর সহজে খুজে পাবেন না।
অদরকারি তথ্য
০১. এ লেখাটি প্রথম ছাপা হয়েছিল যায়যায়দিনের ক্যামেরা পাতায়
০২. ওপরের ছবিটি শাখারিবাজারে কল্পনা বোর্ডিংয়ে তোলা। সেখানে ছবিমেলার অংশ হিসেবে একটি প্রদর্শনী চলেছে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মুনেম ওয়াসিফের সে প্রদর্শনীর নাম ছিল "ব্লাড স্প্লিন্টার অফ জুট" বাংলায় বলা হয়েছে "পাটের মৃত্যু আখ্যান"।