এই সম্ভাবনার দ্বারা খোলা প্রতিটি বাঙালীর জন্যে যে কতটা আনন্দের সেটা প্রকাশ করার ভাষা যাঁরা মহাকাব্য লেখেন তাঁদের থাকতে পারে আমাদের নেই। তবে ভাষা যেখানে ব্যর্থ চোখের জল সেখানে সম্পদ। আর সেই সম্পদ দিয়ে প্রকাশ করেছেন এই বিজয়ের মূল নায়ক শেখ হাসিনা। অক্লান্ত পরিশ্রম করে শ্রম ও মেধা দিয়ে এই বিজয়ের সেনাপতি হয়েছেন সেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকে বুকে জড়িয়ে আনন্দাশ্রুতে তাঁর মাথার চুল ভিজিয়ে দিয়ে। সংসদে বাংলাদেশের এই অর্জন নিয়ে বক্তব্য রাখার পর দীপু মনিকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে কেঁদেছেন শেখ হাসিনা। কেঁদেছেন দীপু মনিও। এমন আনন্দাশ্রু আমরা একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর, ১০ জানুয়ারি দেখেছি মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে। দেখেছি মুক্তিযোদ্ধাদের নেতাদের চোখে। ১৯৭১ থেকে ২০১২তে এসে আবার বাংলাদেশের মানুষ তেমনি আনন্দাশ্রু দেখতে পেল শেখ হাসিনার ও দীপু মনির চোখে। এই আনন্দাশ্রু শুধু এ মুহূর্তে সকল দেশবাসীর আনন্দের প্রকাশ নয়। এটা শ্রদ্ধাও। এ অশ্রুতে নিঃসন্দেহে তৃপ্তি পাবে বঙ্গবন্ধুর আত্মা, তৃপ্তি পাবেন তাজউদ্দীন আহমদসহ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নেতারা। সেই সঙ্গে আজ আমি স্মরণ করব আরেক সংগ্রামী নেতা, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা নেতা আবদুল ওদুদ ভুঁইয়াকে। আজকের এই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যাঁরা এক সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছিলেন তিনি তাঁদের একজন। তাঁর সাইকেলের চাকার সঙ্গে মিশে থাকা ধুলা এখনও মনে হয় ঢাকার অলিতে গলিতে আছে। দিনরাত যাঁরা একদিন একটি দেশের জন্ম হবে বলে একটি সংগঠনের জন্যে প্রাণপাত করেছিলেন, তিনি তাঁদের একজন। আজ তাঁকে স্মরণ করছি এই জন্যে তিনি আজকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির পিতা। আজ দীপু মনির এ বিজয়, এ আনন্দাশ্রু নিশ্চয়ই তাঁর বিদেহী আত্মাকেও শান্তি দেবে।
শেখ হাসিনা যখন এই মন্ত্রিসভা গঠন করেন তখন এই মন্ত্রিসভার সব থেকে তরুণ সদস্য ছিলেন সোহেল তাজ ও দীপু মনি। তাঁদের মন্ত্রী করায় কয়েক সিনিয়র সাংবাদিক শেখ হাসিনার এই মন্ত্রিসভাকে কচি-কাঁচার মেলা বলে ঠাট্টা করেছিলেন। সেদিন এই কলামেই লিখেছিলাম, দীপু মনি চল্লিশের কোটা পার হয়েছেন। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর কেবিনেটের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ড. কামাল হোসেন। কামাল হোসেন যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৩ বছর। পাকিস্তানের ডাকসাইটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে যখন তিনি শপথ নেন তখন তাঁর বয়স ছিল ২৭ বছর। তাই সফলতার জন্য যোগ্যতাই বড় বিষয়। বয়স কোন বিষয় নয়। আজ বিশ্বাস করা যায়, সোহেল তাজও যদি মন্ত্রিত্ব করতেন, নিঃসন্দেহে তিনিও সফল হতেন। কারণ তাঁর ভেতরও একটা আগুন আছে। সর্বোপরি বেড়ে ওঠার পরিবেশ। এই পরিবেশই কিন্তু মানুষকে কাজ করতে শেখায়, যোগ্যতা অর্জন করতে শেখায়, বিজয়ী হবার মতো বীর হতে শেখায়। দীপু মনি, সোহেলÑ এঁরা সকলেই সেই রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন যেখানে দেশকে কিছু দেবার শিক্ষা আছে। দেশের কাছ থেকে পাবার শিক্ষা নয়। যেমন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয় কেন, কারণ শেখ হাসিনা দেশকে দিতে চান। যে আদর্শ তিনি বুকে ধারণ করেন, যে পরিবেশে তিনি বড় হয়েছেন সেখানে তিনি দেখেছেন কিভাবে দেশের জন্যে ত্যাগ করতে হয় এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হয়। আজ অনেকে বলছেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে আমাদের সমুদ্রসীমা অধিকারের আইন প্রণয়ন করেছিলেন। এরপরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় আসে তারা এবং তাদের উত্তরসূরিরা কেউ এ নিয়ে কিছুই করেনি। এবার যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না আসতেন তাহলে এই সমুদ্রসীমা আমরা হারাতাম। কারণ এ নিয়ে আর আন্তর্জাতিক আদালতে যাবার কোন সুযোগ থাকত না। শুধু এই সমুদ্রসীমা কেন, এ দেশে আওয়ামী লীগ ও প্রগতিশীল বামশক্তি (অবশ্য দুঃখের সঙ্গে উল্লেখ করতে হয়, মণি সিং, খোকা রায়, কমরেড ফরহাদের বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি ও বিএনপি একই ভাষায় সমুদ্রসীমা অধিকার প্রতিষ্ঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন; সরকারকে নয়। এর পরে শুধু বলা যায়, মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন) না থাকলে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘটনার পর এতদিনে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকত না। আওয়ামী লীগসহ এই প্রগতিশীল বামশক্তির আন্দোলনের কারণেই আজ বাংলাদেশ বিশ্ববুকে অবস্থান করছে। আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বলেই দেশ আরেকটি বাংলাদেশের সম আয়তন সমুদ্রে অধিকার অর্জন করেছে। আজ কেবল আওয়ামী লীগের বিকল্প কোন বড় বামশক্তি যদি বাংলাদেশে থাকত। তারা ক্ষমতায় থাকলেও তারা নিঃসন্দেহে এ বিজয়ের জন্যে চেষ্টা করতেন। তাছাড়া জিয়া, এরশাদ বা তাদের পার্টি বিএনপি বা জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকলে এটা ঘটত না। কারণ, এরা সকলেই ১৯৭৫-এ যে শক্তি বঙ্গবন্ধুসহ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নেতাদের হত্যা করেছিল ওই শক্তিরই উত্তরাধিকার। আর এরা কোন শক্তি, কোন শক্তির অর্থে এরা পরিচালিত হচ্ছে সেটা নিশ্চয়ই এখন আর বাংলাদেশের মানুষের ভুল বোঝার কোন অবকাশ নেই। কারণ, পাকিস্তানের হাইকোর্টেই সেদেশের জেনারেলরা হলফনামা দিয়েই প্রকাশ করছেন। তাঁরা নির্বাচনে জেতার জন্যে বেগম জিয়াকে কত টাকা দিয়েছেন। এবং বাংলাদেশের ভেতর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য কত টাকা বেগম জিয়া ও তাঁর সরকারকে দিয়েছেন। পাকিস্তানী এই অর্থই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার কাজ করে। পাকিস্তানী এই অর্থই জিয়াউর রহমান ও এরশাদকে পরিচালিত করেছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই পাকিস্তান বাংলাদেশের অস্তিত্ব মুছে ফেলার জন্য, বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে। এই অর্থ তথাকথিত বাম থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনীর ভেতরের বিপথগামী সদস্যসহ অনেকেই বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে পাচ্ছে। যেমন বঙ্গবন্ধুর আমলেই চৈনিক কমিউনিস্ট নেতা কমরেড আবদুল হকের একটি চিঠি বাংলাদেশ সরকারের হস্তগত হয়। কমরেড হক মধ্যপ্রাচ্যের একটি বিশেষ দেশের কূটনীতিকের মাধ্যমে পাকিস্তানের নেতা ভুট্টোর কাছে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। ওই চিঠিতে তিনি ভুট্টোর কাছে অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য চেয়েছিলেন। অর্থাৎ এর থেকে এটা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা নষ্ট ও দেশটিকে ধ্বংস করার জন্য পরাজয়ের পর থেকেই পাকিস্তান সব রকম চেষ্টা করে যাচ্ছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে এ দেশে রাজনৈতিক দলে ও নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয়ের কালচার এলো এই টাকার উৎসও আজ হিসাব করা প্রয়োজন। কারণ, ১৯৭৩-এ নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে তাজউদ্দীন আহমদের নির্বাচনী ব্যয় হয় মাত্র ২ হাজার ৫শ ৯ টাকা। অথচ বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর এ দেশে নির্বাচনী কালচার সম্পূর্ণ বদলে গেল। বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দেন এবং ১৯৭৯ সালে সংসদ নির্বাচন দেন। এই দুই নির্বাচন থেকে বাংলাদেশে নির্বাচনে টাকার খেলা শুরু হয়। ওই দুই নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের দলের টাকা ব্যয় এ দেশের মানুষকে বিস্মিত করে। আজ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় স্কুটার লাখ লাখ মানুষ ব্যবহার করছে। গ্রামেগঞ্জে মোটরসাইকেল নামে পরিচিত এই যানবাহন এখন সহজে মেলে। এবং মানুষের সে সাধ্যও আছে কেনার। কিন্তু আজ স্মৃতি খুঁজলে এ দেশের অনেকেই মনে করতে পারবেন, ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে জিয়াউর রহমানের বিএনপির যুবদল নেতাদের হঠাৎ করে কালো চশমা আর ওই মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামেগঞ্জে হাজির হতে দেখা যায়। এই যানটি বাংলাদেশে একটি বিশেষ কোম্পানির নামে পরিচিত, বেশিরভাগ লোক একে হোন্ডা বলে চেনে। এই হোন্ডা এবং কালো চশমার যুবদল নেতাদের নিয়ে অনেক লেখা তখন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবু জাফর শামসুদ্দিন, সন্তোষ গুপ্ত প্রমুখ লেখেন। যুবদল নেতাদের সে সব মহান কীর্তি (!) ইতিহাসে লেখা আছে। কিন্তু তাদের কীর্তির থেকে আজ বড় কথা, সেদিন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় একটি রাজনৈতিক দল যুব সমাজের ভেতর এভাবে স্কুটার, কালো চশমা বিলানোর টাকা কোথা থেকে পেল? জিয়াউর রহমান সেদিন বলতেন, ‘মানি ইজ নো প্রোবলেম’। সত্যি দেখা যেত তার দলের লোকের কাছে টাকা কোন সমস্যা নয়। দু’ হাতে তারা টাকা খরচ করত। গ্রামের রাস্তা দাপিয়ে চলত তাদের নতুন স্কুটার। কোথা থেকে সেদিন এ টাকা এসেছিল? আজ নিশ্চয়ই বেগম জিয়ার টাকার উৎস দেখে স্পষ্ট হয়ে গেছে জিয়াউর রহমানের টাকার উৎস কোথায় ছিল। বেগম জিয়া, জিয়াউর রহমান ও ক্ষমতাসীন এরশাদের টাকার উৎস যে একই পাকিস্তান ছিল সেটা স্পষ্ট হয় তাদের কার্যকলাপ থেকে। জিয়া পাকিস্তানের কলাবরেটরদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন এ দেশে। সংবিধান কেটে কুটে পাকিস্তানের সংবিধানের দিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন। এরশাদও সেই একই কাজ করেছেন। এরশাদ আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যোগ করেন। পাকিস্তানের সংবিধানের ইংরেজী ভার্সন ও আমাদের সংবিধানের ইংরেজী ভার্সন নিয়ে মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে পাকিস্তানেও ঠিক যে ভাষায় রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে যোগ করেছে বাংলাদেশেও ঠিক একই ভাষায়। এর থেকেই স্পষ্ট হয়, কাদের নির্দেশে ও ইঙ্গিতে সেদিন রাষ্ট্রধর্ম যোগ হয়েছিল। তাই পরাজিত পাকিস্তানের এই দালালরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে তারা কখনই বাংলাদেশের স্বার্থ দেখবে না। তারা সব সময়ই পাকিস্তানের স্বার্থে কাজ করে যাবে। যারা পাকিস্তানের স্বার্থে কাজ করবে তাদের কাজ একটাই সেটা হলো, বাংলাদেশ কিভাবে দ্রুত একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এজন্য বেগম জিয়া ক্ষমতায় থাকতে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও সোমালিয়ার কাছাকাছি চলে এসেছিল। আর পাকিস্তানী অর্থে পরিচালিত কোন দল রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে এ দেশ আবার সোমালিয়ার পথ ধরবে, তালেবানী আফগানিস্তানের পথ ধরবে।
তাই আজকের এই বাংলাদেশের সমপরিমাণ এলাকার সমুদ্রে অধিকার পাবার কাজটি কেবল আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল বাম গণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতায় আছে বলেই সম্ভব হয়েছে। আজ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মতো কার্পণ্য না করে ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকেই দিতে হবে। অভিনন্দন শেখ হাসিনাকেই জানাতে হবে। অভিনন্দন শেখ হাসিনার সেনাপতি দীপু মনিকেও জানাতে হবে। আর কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে যিনি তাঁর সাড়ে তিন বছর ক্ষমতাকালের ভেতর শুধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করেননি। তিনি সমুদ্রসীমার অধিকার পর্যন্ত চিন্তা করেছিলেন। চিন্তা করেছিলেন, আমাদের তেল-গ্যাস সম্পদ রক্ষার আইন নিয়ে। বাস্তবে বাংলাদেশের ওই সাড়ে তিন বছরে যত মৌলিক কাজ হয়েছিল এমন মৌলিক কাজ পৃথিবীর খুব কম দেশই অত দ্রুত করতে পারেনি। আজকের বাংলাদেশে বসে কল্পনা করা যায় না বঙ্গবন্ধুকে কী শূন্য অবস্থান থেকে শুরু করতে হয়েছিল। আর সেখান থেকে শুরু করে তিনি ওই অল্প সময়ে কত কাজ করেছিলেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের এই সব চাকর-বাকররা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর অধিকাংশ কাজই বন্ধ করে দেয়। বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে এই বাংলাদেশের জন্যে কী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তা যেমন কল্পনা করা যায় না তেমনি পত্রিকার কলামেও সেটা লেখা সম্ভব নয়। ১৯৯১-এর দিকে আমি এ নিয়ে একটু কাজ করা শুরু করেছিলাম। পরবর্তীতে ফান্ড অভাবে খুব বেশি দূর অগ্রসর হতে পারিনি। কিন্তু ওই সামান্য কাজের ভেতর দিয়ে যা পেতাম তাতে প্রতিমুহূর্তে অবাক হতে হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর প্রথম পাঁচসালাতেই ঢাকা শহরে পাইপলাইনে দুধ সরবরাহের পরিকল্পনা করেছিলেন। এ মুহূর্তে এটা ভাবলে স্বপ্ন মনে হয়। কিন্তু মিল্কভিটা, সাভার ডেইরিকে বঙ্গবন্ধু সেভাবেই গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তাঁর ওই সব কাজ ও উদ্যোগ বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এই দেশটি তাঁর ও তাঁর সহকর্মীদের স্বপ্নের ভেতর বড় হয়েছে অনেক আগে থেকে। তাঁদের স্বপ্নের দেশ গড়তে শুরু করেছিলেন তাঁরা নিখুঁতভাবে। আর তাঁদের সেই নিখুঁত পরিকল্পনার কারণেই আজকের এ সমুদ্র বিজয়। তাই এ বিজয়ে অভিনন্দন শেখ হাসিনাকে, অভিনন্দন দীপু মনিকে। আর সকল বাঙালী কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে এই বিজয়ের দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে। তাঁর দূরদৃষ্টিই আজকের এই বিজয়ের ভিত্তি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১২ রাত ২:২১