ড. ইউনূস সাহবে কে বুঝি পাঁচবছর আর রাখা যাচ্ছে না। আজ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সাথে মত-বিনিময়ের সময় ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন কে সামনে রেখে তিনি দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের এগিয়ে আনার তাগিদ দেন। এমন অভাবনীয় ঘটনা কি করে ঘটতে পারে ? কি এমন হলো যে প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে চান ?
আজকে পত্রিকায় খবর এসেছে বিএনপির সাথে যেসব দল জোটবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তাদের আসন ছাড় দিতে রাজি তারা। এই খবর রাজনৈতিক মাঠে চাউর হওয়ার পরপরই যেন পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। এনসিপির নেতাদের মুখ থেকে বিএনপির প্রতি পজিটিভ কথা বের হতে শুরু হয়েছে। জামায়াত ও বেশ খুশি। এবি পার্টিও নিশ্চয়ই খুশি হবে। তারা যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে হুংকার দেয়া শুরু করেছিলো তাতে বনের বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খাওয়ার কথা ! বিএনপি কিস চিজ হ্যায় ?
গত দুই /তিনদিন আগে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য রাষ্ট্রদূতের নিকট প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন অল্প সংস্কার হলে ডিসেম্বরের নির্বাচন আর বেশি সংস্কার হলে জুনে নির্বাচন। কিন্তু আজ তিনি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে তাই সংস্কার কমিশনগুলোকে দ্রুত সংস্কার শেষ করতে বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টা আশা করি তাঁর কথা রাখবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ইন্টেরিম সরকার যাতে পাঁচ বছর থাকে তার জন্য ইভেন্ট খোলা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোটাভুটি চলছে। পাগলা মসজিদের দানবাক্সে দীর্ঘদিন ইন্টেরিম সরকার থাকুক তার জন্য মানত করা চিঠি পাওয়া গিয়েছে। সরকারের কোনো উপদেষ্টা আড়ালে আবডালে এই প্রচারকে সমর্থন দিচ্ছেন। অথচ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো না, প্রতিদিন ছিনতাই হচ্ছে বাসে, মব সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু বাজারে সবজির দাম কম তাই এই সরকার আজীবন থাকুক এই প্রার্থনা করছেন জনপ্রিয় ওয়াজীরা !
আওয়ামী লীগ ইস্যুতে সরকার কি পদক্ষেপ নিবে ? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি ইনক্লুসিভ নির্বাচন দেখতে আগ্রহী। কিন্তু আম্লিকের অবস্থা এত খারাপ যে এখন রাস্তায় বের হলেই পাবলিকের প্যাদানি তাদের জন্য কনফার্ম ৷। নির্বাচনে অংশগ্রহণের মতো অবস্থায় নেই তারা। রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের যে আলাপ মাঠে ছাড়া হয়েছিলো তা কি কেবলই গুজব ? অন্যদিকে বিরোধী পক্ষগুলো আম্লিক প্যাদানিতে একমত হয়েছে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দলটি নির্বাচনে আসার চিন্তা করবে কিনা তা সময়ে বোঝা যাবে। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসলেও আম্লিকের শান্তি নেই। বিগত ১৫/১৬ বছরের হিসাব কড়ায় গন্ডায় বিরোধী পক্ষ বুঝিয়া লইবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সবচাইতে সুখে আছেন। একটার পর একটা দেশ তিনি ভ্রমণে ব্যস্ত । দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উনার কোনো মাথাব্যথা নেই। উনার ভাবসাব অনেকটা একটি জনপ্রিয় সংগীতের লাইনের মতো " যতই ওড়াও ঘুড়ি রাতে, নাটাই তো আমার হাতে "। অর্থাৎ যে যাই বলুক সেনাবাহিনী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন সম্পন্ন করে ব্যারাকে ফেরত যাবে।
বিএনপির সামনে ইতিহাস গড়ার হাতছানি ছিলো। আসন ভাগাভাগি করার কারণে তা হয়তো সম্ভব হবে না। বাদবাকি রাজনৈতিক দলগুলো এই আশংকায় ঘুমাতে পারছিলো না যে যদি বিএনপি ২৭০-২৮০ সিট পায় তবে তাদের কি অবস্থা হবে। নতুন রাজনৈতিক দলের নেতারা খুব দ্রুতই মাঠের রাজনীতি টের পেয়েছে। তাই বটবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছিলো যাতে ড. ইউনূস কে ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষমতার বলয়ে রাখা যায় । যখনই দেখেছে বিএনপি আসন ছাড় দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে তখনই তাদের দিল মে লাড্ডু ফোটা শুরু হয়েছে। বিএনপিকে নিয়ে ভালো ভালো মন্তব্য করছে ! বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিজেদের ভালোর জন্য কতিপয় সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌছানো যাতে তাদের পরিণতি আম্লিকের মতো না হয়। তাদের কোনো বিদেশি বন্ধু নেই।
সামনের দিনগুলোতে কোনো অসাধারণ ঘটনা না ঘটলে নির্বাচন ডিসেম্বরে হয়ে যাবে। সরকার যদি নিজ বক্তব্যে অনড় থাকে তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বরে সম্ভব। কিন্তু মাঝে মধ্যে দেখা যায় সরকার সংস্কার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেয়ে অন্যান্য বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামায়। একটি অনির্বাচিত সরকার যতই উন্নয়নের চেষ্টা করুক তাতে দেশের সত্যিকারের উন্নয়ন ঘটে না। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অনির্বাচিত সরকারের প্রতি তেমন আস্থা প্রদর্শন করে না। যতই স্মার্ট প্রেজেন্টেশন দেয়া হোক বিনিয়োগকারীরা ইনভেস্ট করতে একশবার চিন্তা করবেন !
বি: দ্র : সরকারের নিজেদের মধ্যে ড্রামা চলছে। পত্রিকা গুলোতে সংশোধন করে আবার নতুন নিউজ ছাপিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:২৪