somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিভিউঃ Dawn of the Planet of the Apes, বানরের রাজ্যের সূর্যোদয়!

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


Dawn of the Planet of the Apes দেখে ফেললাম! খারাপ লাগার তেমন কোন কারন নাই, তবে খুব যে ভালো লেগেছে সেটাও বলা যাচ্ছে না। কারন? আরও ভালো হতে পারতো, অন্তত ২০১১ সালের অসাধারণ Rise of the Planet of the Apes এর সিকুয়েল হিসেবে আরেকটু ভালো আশা করাই যায়। যাই হোক যেটা হয়েছে সেটাও খারাপ না, আমার দেখা অন্যতম সেরা CGI ইফেক্ট পেলাম এই মুভিতে…সিজার এবং বাকি সব Apes দের চলাফেরা, মুখভঙ্গি বা অভিনয় ছিল খুবই রিয়েলিস্টিক।

আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে যদি এইপ’রা সত্যি সত্যি মানুষের কাছাকাছি বুদ্ধিমত্তা অর্জন করতে পারতো তাহলে মানুষের খবরই ছিল, কারন তারা শারীরিকভাবে মানুষের চেয়ে অনেক শক্তিশালি এবং একই সাথে অনেক বেশী ক্ষিপ্র। লড়াই বেঁধে গেলে মানুষের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে, তাই লড়াই না করাই ভালো! ২০১১ সালের প্রথম মুভিটা যেখানে শেষ হয়েছিলো এই মুভির প্লটটা তাঁর ১০ বছর পরের কাহিনী, অনেক প্রশ্নের জবাব এই মুভি দিতে পারতো বা দেওয়া উচিত ছিল; কিন্তু সেটা আমরা পাইনি। বেশ কিছু প্লট হোল আছে মুভিতে, সাথে কিছু কোম্পানির প্রোডাক্ট প্লেইসমেন্ট (যেমন আইপ্যাড) বিরক্ত লেগেছে আমার। আমার এই মুহূর্তে মনে হওয়া কয়েকটা পয়েন্ট দিচ্ছি- (***স্পয়লার***)


১. জেমস ফ্র্যাঙ্কো এই মুভিতে নেই, শুরুতেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। রাইজ মুভিতে জেমস আর ফ্রিদাকে দারুন লেগেছিলো।
২. ভাইরাসের আক্রমনে পৃথিবীর বেশীরভাগ মানুষ মরে শেষ, এবং এরমধ্যে ১০ বছরের বেশী পার হয়ে গেলেও কোন প্রতিষেধক আবিস্কার করতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা। এটাকে অসম্ভব মনে হয়েছে, কারন যেহেতু ভাইরাসটা মানুষেরই তৈরি। এমনকি অনেক মানুষ ভাইরাস থেকে ইমিউন থাকার পরও তাঁদের রক্ত থেকেও কোন প্রতিষেধক আবিস্কার করা যায়নি।
৩. ভাইরাস আক্রমনের পর ১০ বছর পার হলেও একমাত্র সান ফ্রান্সিসকো ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের অবস্থা নিয়ে মুভিতে কিছুই নেই। এবং সেখানেও কতিপয় মানুষ শহরের জঞ্জালের ভেতরে লুকিয়ে আছে, তাঁদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় রসদ সেখানে থাকার কথা না।
৪. রেডিও চালানোর জন্য কি খুব বেশী বিদ্যুৎ দরকার? তেল বা গ্যাস জেনারেটর দিয়ে সেটা চালানো গেল না? একেবারে হাইড্রো-ইলেকট্রিক ড্যামই দরকার হল? হাস্যকর ব্যাপার, এছাড়া ১০ বছর পর এটা করতে হবে কেন, মাঝের সময়টা তারা কি করেছে? এত বড় একটা ড্যাম ঠিক করে ফেলা কি সোজা কথা?
৫. এইপরা সবাই ইংলিশে কথা বলতে পারে, তাঁদের গ্রামার পর্যন্ত ঠিক আছে, এমনকি অ্যাকসেন্টও আছে! এইপ এর ভোকাল কর্ড সম্পর্কে আমার আইডিয়া নাই, কিন্তু মনে হয়না তাঁদের পক্ষে মানুষের মত কথা বলা সম্ভব। কথা বলতে পারলে আবার সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ কেন? আর বুদ্ধিমত্তার উন্নতি একদিনে বা ১০ বছরে হয় না, প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেগে যায় এতে; এখানে তাঁর উল্টোটাই দেখানো হয়েছে।


৬. বাংলা বা হিন্দি সিনেমার মত আনলিমিটেড অ্যামোর মেশিনগান দেখলাম এই মুভিতে, এইপরা হাজার হাজার রাউন্ড গুলি করলো রিলোড ছাড়াই!
৭. মুভির লেংথ নিয়ে সাধারণত কিছু বলার দরকার হয়না, যদি মুভিটা আপনার আগ্রহ ধরে রাখার মত হয়। মুভিটা মোটামুটি ভালো হলেও আমার কাছে লেংথ কিছুটা হলেও বেশী মনে হয়েছে, আরও ১০-১৫ মিনিট কম হলে ভালো হত। আমার মনে হয়েছে নেক্সট সিকুয়েল এর জন্য কাহিনী বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে এই মুভিতে সেটা একটু কম পড়েছে!
৮. মানুষ এবং এইপরা এত কাছাকাছি থাকার পরও ১০ বছরেও কেউ টের পেলনা? বেশ অস্বাভাবিক লেগেছে এটা। তাছাড়া চরিত্রগুলো যথেষ্ট স্ক্রিন টাইম পেলেও কেন যেন সেভাবে ডেভেলপ করেনি, ডায়লগগুলো একটু বেশী নাটকীয় করার চেষ্টা করা হয়েছে (Ape not kill ape!); তবে এটা ভালোই লেগেছে বেশীরভাগ সময়।
৯. সিজার তাঁর পুরনো বাসায় আসার পর একটা ক্যামকরডার চালায়, ১০ বছরেও মাশাল্লা কিছুই হয়নি সেটার…আবার ব্যাটারিও ঠিক আছে এবং চার্জ পর্যন্ত রয়ে গেছে। আর ঠিক সেই ক্লিপটাই আছে যেটা পরিচালক সাহেব দেখাতে চেয়েছেন।
১০. সিজার গুলি খাওয়ার এবং এত উপর থেকে পরার পরও মাত্র ২ দিনেই ঠিক হয়ে গেল, আবার কোবাকে ইচ্ছামত কোপালো। তাছাড়া কোবা জীবনে প্রথমবার মেশিনগান নিয়ে এরকম নির্ভুল নিশানা কই পেল? এরকম ন্যাচারাল মারক্সম্যান আমাদের দেশের আর্মিতে দরকার!

এরকম অনেক কিছুই বলা যায়, আবার না বললেও হয় কারন এটা একটা সাইফাই মুভি, উল্টাপাল্টা জিনিস দেখানো জায়েজ আছে! তবে ২০১১ সালের মুভিটা অসাম ছিল, তাই এক্সপেকটেশন স্বভাবতই একটু বেশী সবার। এই মুভিটাও ভালো, এবং ডেফিনিটলি হলে গিয়ে 3D তে দেখলে আরও ভালো লাগবে। আমি সবাইকেই বলবো মুভিটা দেখতে, তবে অবশ্যই আগে প্রথম মুভিটা দেখে নেবেন। মুভির IMDb রেটিং ৮, মেটাস্কোর ৭৯, রটেনে ৯০% ফ্রেশ উইথ রেটিং ৭.৯, আর আমার কাছে ৭.৫। :D
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×