বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মিনতি করে বলেছেন, ‘দয়া করে আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য একটু সময় ও সুযোগ দেন। যেকোনো মূল্যে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার করে দিন।’
আজ সোমবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে বনানীর নিজ বাসভবন ‘সিলেট হাউসে’ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। এ সময় তাঁর দুই ছেলে ও মেয়ে পাশে ছিল।
তাহসিনা রুশদির বলেন, ‘সংবাদপত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের কথা জানছি। যদি কোনো শর্তও থাকে, তা আমাদেরকে জানানো হোক। যেকোনো শর্তে আমরা তাঁকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পেতে চাই। অর্থ, সম্পদ, ক্ষমতা কোনো কিছুই আমার চাই না।’
তাহসিনা রুশদির অভিযোগ করেন, তাঁর পরিবার শুধু অনিশ্চয়তাই নয়, অনিরাপত্তা ও আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে।
ইলিয়াস আলীর স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে সরকার তাঁর বিরুদ্ধে আইনসম্মত যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারে। তাতে আমাদের কারও কোনো আপত্তি নেই। যদি কোনো বিষয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করাও হয়ে থাকে, তাহলে অন্তত আমাদের জানানো হোক ইলিয়াস আলী জীবিত আছেন, তিনি কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে আছেন। একজন নাগরিক হিসেবে অন্তত এটুকু দাবি করা কোনো অন্যায় চাওয়া নয়।’
তাহসিনা রুশদির বলেন, ‘গত ১৭ এপ্রিল রাতে বাইরে থেকে ফেরার পথে আমার স্বামীকে বাড়ির কাছাকাছি থেকে গাড়ি থামিয়ে জোর করে তুলে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তুলে নেওয়া হয়েছে আমাদের গাড়িচালক আনসার আলীকে। কারা নিয়ে গেছে আমরা জানি না। আমরা শুধু তাদের ফেরত পেতে চাই।’
তাহসিনা রুশদির আর বলেন, ‘আমার স্বামী রাজনীতি করতেন, কিন্তু আমি ও আমার সন্তানেরা কোনোভাবেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। আমরা কেউ কখনো রাজনীতি করতেও চাই না। দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি আমার স্বামীকে জীবিত ফিরে পেতে চাই। আমার সন্তানেরা তাদের বাবাকে ফেরত চায়। আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি তাঁর সন্তানের পথ চেয়ে বসে আছেন। ইলিয়াস আলীকে তিনি তাঁর বুকে ফেরত পেতে চান।’
ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির বলেন, ‘আমার সন্তানেরা বারবার প্রশ্ন করে, আব্বু কোথায়, কখন আসবে। আমি কোনো জবাব দিতে পারি না। আমার কোনো জবাব নেই।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাহসিনা রুশদির জানান, সর্বশেষ তিন দিন আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছিল। তারা বলেছে, তারা চেষ্টা করছে, তদন্ত করছে।
ইলিয়াস আলীর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে আশাবাদী কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তাহসিনা রুশদির বলেন, ‘১৩-১৪ দিনের ফলাফল একই। তাহলে কীভাবে আমি আশাবাদী হব।’