দীর্ঘ চৌত্রিশ বছরের লাল দুর্গের ( বামফ্রন্ট সরকার) পতন ঘটিয়ে নতুন সরকারের আবির্ভাব হয়েছিল পশ্চিম বঙ্গে।মমতার তৃণমূলের আগ্নেয়গিরির সামনে বামফ্রন্ট সরকার ধূলিসাত হয়ে গেছে। আমরা হয়ত ভুলে গেছি বাম সাম্রাজ্যের এই ধ্বংসের পিছনের কারন। যার মধ্যে প্রথম এবং প্রধান গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে ঘটনা।সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ঘটনা বিশ্ববাসীর কাছে আজ অজানা নয়।গাড়ি তৈরির কারখানার জন্য কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে উর্বর দো ফসলী জমি কেড়ে নিয়ে টাটা গ্রুপ ওরফে রতন টাটার হাতে তুলে দিয়েছিল বাম সরকার। এই নিয়ে শুরু হয় আন্দোলন। মারামারি। রক্তারক্তি। সেখান থেকে মমতা হাল ধরে জনগণের নেতা হিসাবে আবির্ভূত হয়। পতন হয় এক কঠিন সাম্রাজ্যের।
দেশের বাইরে কেন ? আমরা ভুলে গেছি আরিয়াল বিলে বিমান বন্দরের ঘটনা। ১৮৩০ একর ধানী জমি অধিগ্রহণের ফলে ৮ হাজার পরিবার উচ্ছেদ হবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মসংস্থান হতে পারে সর্বোচ্চ ৬০০ জনের, ফলে উদ্বাস্তু এবং কর্মহীন হয়ে যাবে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ পরিবার। শুধু তাই নয়, আমরা প্রতি বছর হারাব কয়েক কোটি টাকার কৃষিজ উৎপাদন।ইআইএ রিপোর্ট অনুসারে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সুন্দরবন থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে! আবার সুন্দরবন থেকে দূরত্ব আসলেই ১৪ কিলোমিটার কি না সেটা নিয়েও বিতর্ক আছে। খোদ ইআইএ রিপোর্টের এক জায়গায় বলা হয়েছে প্রকল্পের স্থানটি একসময় সুন্দরবনেরই অংশ ছিল। এই প্রকল্প সুন্দরবনের পশুপাখির জীবনচক্রের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে এবং মারাত্নক পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি করবে।
প্রকল্পে ১৫% বিনিয়োগে ভারতীয় মালিকানা ৫০%। বিদ্যুতের দাম পড়ছে দ্বিগুণেরও বেশি। উচ্ছেদ হচ্ছে ৭৫০০ পরিবার। কৃষিজ সম্পদ হারাচ্ছে দেশ। পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে বাংলাদেশের। কিন্তু ৫০% শতাংশ মালিকানা ভারতীয় কোম্পানির? এমন কেউ কি আছেন আমাকে বোঝাতে পারবেন এর যৌক্তিকতা ?
তথ্য সৌজন্যঃ পিনাকী ভট্টাচার্য
সুন্দরবন এতদিন আমাদের বাচিয়েছে কিন্তু এখন সুন্দরবনকে কে বাচাবে?