
আগস্ট বাঙালীর শোকের মাস। যেদিন বিমান বন্দরে দাঁড়িয়ে হুমায়ুন আজাদের লাশের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, সেদিন ভ্যাপসা গরম আর টিপটিপ বৃষ্টি। খ্যাতিমানের লাশের প্রহরায় রাষ্ট্রযন্ত্রের সেকি উদ্বেগ। হয়ত এই লাশটুকু কোন বিদ্রোহ ঘটিয়ে দেবে, এই লাশটুকুই রাষ্ট্রযন্ত্রের সমস্ত কলকব্জাকে নড়বড়ে করে দেবে।
জীবদ্দশায় আমি আর কখনোই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলকে এভাবে গর্জে উঠতে দেখিনি। শুধু শুনেছি পূরাণের ঢংএ এই জাতি, এই বিনয়ী বন্ধু সুলভ জাতি বাহান্নতে, একাত্তুরে গর্জে উঠেছিল। বাঘের মত। হুমায়ুন আজাদের ক্ষতবিক্ষত অস্তিত্বের খবরে যেমনটা গর্জে উঠেছিল বাঙলাদেশ। আমার বিশ বছরের তখন শুরু কেবল। এই গর্জে ওঠা বাঙলাদেশকে দেখে আমি আশাবাদী হয়েছিলাম। যতবার আগস্ট মাস আসে ততবার আমি আশাহীন হতে থাকি।
অলৌকিক ইস্টিমারে করে হুমায়ুন আজাদ সেই যে গেলেন, আমি তার ফেলে যাওয়া পথের আলোটুকু দেখি।

এভাবে আনন্দোচ্ছল শিক্ষকতায় তাকে আর দেখবো না।

দেখবো না সকলের সাথে এক কাতারে দাঁড়াতে

শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে

হুমায়ুন আজাদের হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে অনশনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

সেই বিভৎস রক্তাক্ত পোষ্টার

আমাদের রক্তের ভেতরে ঢুকে যাওয়া পাপ

আমাদের একসাথে আড্ডা দেয়া হবে না কখনোই

ছবি তুলতে গেলে সদা প্রস্তুত থাকার মানুষটি আর নেই, নেই বাঙলার হাসিটিও
আর কত হুমায়ুন আজাদের বলি চাও বাঙলাদেশ। আমি পূরাণ চাই না প্রিয় দেশ আমার, তোমার নিষ্প্রভ কোষে কি স্ফুলিঙ্গ জ্বলবে না?