বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ আসে ইংরেজি মাসের ১৪ এপ্রিল। অন্যদিকে পশ্চিম বাংলায় ১৫ এপ্রিল উদযাপন করা হয় উৎসবটি। যদিও ১৯৫২ সন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ এবং পশ্চিম বাংলা সহ ভারতের আরও কয়েকটি রাজ্যে বর্ষবরণ করতেন ১৫ এপ্রিল।
মূলত চন্দ্র সন হিজরিকে সৌর গণনা হিসেবে এনে মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে বাংলা সনের উদ্ভব ঘটে। তবে সন গণনার দিন থেকে ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে বিভিন্ন অমিল দেখা দেয়। এ কারণে ১৯৫২ সালে জ্যোতিপদার্থবিদ ড. মেঘনাদ সাহা ভারতে প্রচলিত প্রাচীন বর্ষপঞ্জির বিজ্ঞানভিত্তিক সংস্কার করেন। এর মাধ্যমে ইংরেজি তারিখ ১৪ এপ্রিল বাংলা বৈশাখ মাসের প্রথম দিন নির্ধারিত হয়।
ড. মেঘনাদ সাহার এই পঞ্জিকা সংস্কারকে সমর্থন করেন ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। কিন্তু দীর্ঘদিন ওই বর্ষপঞ্জিকা দুই বাংলার কোনোটিতেই কার্যকর হয়নি। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হু. মু. এরশাদ সংস্কার করা সেই বিজ্ঞানভিত্তিক পঞ্জিকাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন। ফলে পহেলা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল নির্ধারিত হয়। সেই থেকে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয় ১৪ এপ্রিল। কিন্তু পশ্চিম বাংলার সনাতনপন্থীরা মেঘনাদ সাহার সংস্কার করা ওই প্রস্তাব মেনে নেননি। তারা আগের পঞ্জিকাকেই বহাল রাখেন। এজন্যই বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিল আর পশ্চিমবঙ্গে ১৫ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ।
অর্থাৎ, প্রাচীন ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে ও নতুন সংস্কারকে গ্রহণ না করে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে এখনও ১৫ এপ্রিল নববর্ষ উদযাপন করা হয়।
(২০১৯ সালে ব্লগের লেখা পোস্ট)
ছবিঃ সংগৃহিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৪৪