somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আহারে বাহারে- খাগড়াছড়ির পাহাড়ে

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সকালে ওলি যখন ফোন দিলনা আমারও খুব একটা রাগ হচ্ছিলনা। ঘুমাতে ভালই লাগছিল। ট্যুর এর ক্ষেত্রে ওর ট্র্যাক রেকর্ড আগে থেকেই ভালনা। আজকে মনে হয় আর যাওয়া হচ্ছেনা এই ভেবে যখন আবার চোখটা বুজে এল তখনই ওর ফোন। আমার আর দশ মিনিট লাগবে , তুই বের হ। আমিও উঠে রেডি হয়ে বের হলাম। নি্উমার্কেট থেকে দুজন রওয়ানা দিলাম অক্সিজেনে খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে। বেনজির ওখানে এসে যোগ দিল। শান্তি পরিবহনের টিকেট কেটে শুরু হল খাগড়াছড়ির দিকে যাত্রা।

ঈদের দিন সকালে বৃষ্টির জন্য আমাদের নিয়মিত ঈদ আয়োজন অর্ধদিনের আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় দুপুরের পর সব বন্ধুরা এক হয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সেখানে কই যাওয়া যায় নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। শুরুতেই বিবাহিতরা কেটে পড়ল। আমি বললাম খাগড়াছড়ি (এখানে যাওয়া বাকি ছিল), ওলি বলল রাঙ্গামাটি, বেনজির বলল সে ঘুরতে যেতে চায় তবে রাঙ্গামাটি হলে ভাল হয়।

আমাদের তিন জনের মতঐক্যের কোন লক্ষনই দেখা যাচ্ছেনা। আড্ডা দিতে দিতে সবাই মিলে চলে গেলাম প্রিয় কলেজিয়েট স্কুলের মাঠে। চলল হাজারো স্মৃতি চারন। আরজু শেষে প্রস্তাব দিল নিরপেক্ষ হিসাবে সে আমাদের জন্য টস করে দিতে পারে, বলেই পকেট থেকে পাঁচ টাকার কয়েন বের করল। খাগড়াছড়ি প্রথম দফায় জিতে গেল। বেনজিরও ওলির দলে যোগ দেয়ায় সে বলল তিনবার টস করতে হবে /:) । বিধাতা আমার পক্ষেই ছিলেন। টস হেরে তারা বলল খাগড়াছড়ি যাব তবে সেখান থেকে রাঙ্গামাটিও যেতে হবে। ঘুরতে আমার কোন প্রবলেম নেই।


ফটিকছড়ির সমতল পাড়ি দিয়ে আমরা প্রবেশ করলাম পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলায়। তিনটি পার্বত্য জেলার মধ্যে খাগড়াছড়িতে বৈচিত্র সব চেয়ে কম মনে হল। এখানে পর্যটকদের জন্য খুব বেশী আকর্ষনও নেই। আগে শুধু আলুটিলার গুহার কথায় জানতাম। ঈদের আগে এনটিভির কল্যানে জানতে পারলাম রিসাং নামের জলপ্রপাত এর কথা। সেখানে যাবার ইচ্ছা থাকলেও বাস সুপারভাইজারের লোকেশন না জানার কারনে রিসাং কে পাশ কাটিয়ে আমরা চলে আসলাম। যখন বললাম তখন আর ফিরে যাবার উপায় ছিলনা। :(( । রিসাং মানে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির ধারা। টিভিতে দেখে বেশ ভালই লেগেছিল।

খাগড়াছড়ির রাস্তায় আঁকাবাঁকা অনেক কম। আলুটিলা পর্যটনে আমরা নামলাম। এখান থেকে পাহাড়ি সবুজের বুক চিড়ে গড়ে উঠা পুরো খাগড়াছড়ি শহরটিই দেখা যায়।


খাগড়াছড়ির মুল আকর্ষন আলুটিলার অন্ধকার গুহা। মশাল নিয়ে ঢুকতে হবে। সঙ্গী দুজন রাজি না হওহায় একাই ঢুকলাম এই গুহায়। সামনে পিছনে কেউ না থাকায় একটু ভয় ভয় ও লাগছিল। ঈদের রাতের হালকা ভূমিকম্পের কথা মনে হল। যদি এখন হয় :| গুহার শেষ মাথায় এসে যখন আলোর মুখ দেখলাম সাহস আবার পুরোপুরি ফিরে এল :D হলিউডি মুভির ভয়ংকর সে সব গুহার কথা ভেবে মনে হল ধুর এটাত কিছুইনা।





















এখান থেকে খাগড়াছড়ি শহরে যাওয়া একটু ঝামেলার। লোকাল বাসে ঠেলাঠেলি করে যেতে হয়। অপেক্ষা করছি। এক জীপ ড্রাইভারের সাথে গল্প করছিলাম। খাগড়াছড়ির পথে যেতে থাকা তার পরিচিত এক মাইক্রোতে তিনি আমাদের তুলে দিলেন, সেই সাথে বাঁচালেন লোকাল বাসের ঠেলাঠেলির হাত থেকে।

তু লাল পাহাড়ের দেশে যা
রাঙামাটির দেশে যা
হিতাক তোকে মানাইছেনারে
এক্কেবারে মানাইছেনারে....

আমরাও রাঙ্গামাটির বাসের টিকেট কাটলাম। ডাইরেক্ট বাসের টিকেট না পাওয়াতে লোকালই ভরসা, এতেও টিকেট কাটতে হয়। এক সহযাত্রী বলল রাস্তা ভয়ংকর দুর্গম। এই দুর্গমতা উপভোগের জন্য আমরা আলাদা বসার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনটা টিকেট ই নিলাম তিন জানালার পাশে। পরে রাস্তা শেষে বুঝলাম ঐ লোক গত পাঁচবছরেও ঐ পথে যায়নি। দুর্গমতার কোন লক্ষনই দেখলামনা। আঁকাবাঁকা এই যা। বান্দরবনের গহীনে যাবার রাস্তায় সবচেয়ে বেশি দুর্গম।

বাস ড্রাইভার বলল বরাবর তিন ঘন্টা বিশ মিনিট লাগবে। যাত্রা শেষে বোঝা গেল তিনি তার অযথা থেমে থাকার সময় গুলো বাদ দিয়ে বলেছেন, তিন ঘন্টা বিশ মিনিট হচ্ছে তার ড্রাইভিং টাইম ;)

পথ পরিক্রমা:














৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×