এই টার্ম এর ক্লাস খুলার পর সারাদিন এত ব্যস্ত থাকি যে ব্লগ এ এখন আর তেমন আশা হয় না । সারাদিন ক্লাস শেষ এ বাসায় এসে দেই একটা ঘুম , আর উঠে সেশনাল এর নানা অ্যাসাইনমেন্ট করতে করতে রাত হয়ে যায় ,তারপরের দিন সকালে উঠার তাগিদে তাই আগে আগেই ঘুমিয়ে পড়ি ।
অসহ্য একটা টার্ম যাচ্ছে এবার , এমন সব সাবজেক্ট উফফ । সবচেয়ে জঘন্য ওস এর সেশনাল। জীবন হারাম হয়ে যাইতেসে । আর যা গরম পড়সে এবার বাসায় আসলে মনে হয় সারাদিন কামলা খেটে আসছি ।
আমার মতন পানসা মানুষের জীবনে গত কয়েকদিন এ কিছু ঘটনা বহুল জিনিস ঘটে গেসে ।
১) আমার একটা ল্যাপটপ এর অনেক শখ ছিল অনেক দিন ধরে , আমি কিছু টাকা ও জমাইতেসিলাম আর আম্মুও জমায়ে রাখসিল । কিন্তু হঠাৎ গাড়ীর জন্য টাকা লাগাতে ওই টাকাটা আম্মুর খরচ হয়ে গেসিল তাই আমার আর ল্যাপটপ কিনা হইল না । কিন্তু আমার ভাই তার বহু প্রিয় ল্যাপটপটা আমাকে দিয়ে দিসে কয়েকদিন আগে । তাই আমার মতন ফকির ও এখন একখান ল্যাপটপ এর মালিক (যদিও এখন অভ্যস্ত হই নাই চালানোতে )
২)আমার আম্মু কখনই আমাকে বাইরে কোথাও থাকতে দেয় না ,কিন্তু এবার প্রথম বারের মতন একদিন হল এও থেকে আসলাম । আমার জন্য খুবই মজার একটা অভিজ্ঞতা । ওস এর গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য বৃহস্পতিবার হলে যাওয়ার পর দেখি কাজ তো কিছুই আগাচ্ছে না । ক্লাসের বাকি সবার সাথে কথা বলে দেখি সবারই একই অবস্থা । এদিকে পিসিটিসি নিয়া হলে গেসি কোন কাজ না করে আবার ওইগুলা নিয়া বাসায় আসার কোন মানে হয় না । তাই আম্মুর কাছ থেকে পারমিশন নিলাম একদিন হলে থাকার , সাথে পারশিয়ার উদাহরণ দিতে ভূ্ল করলাম না যে ওর আম্মাতো ওকে থাকতে দেয় । আম্মুযে কেমনে রাজী হয়ে গেল আমার বিশ্বাসই হল না । আমার গ্রুপ পার্টনার মুনিয়া তখন টিউশনিতে গেসিল ও এসে আমাকে এখনও হলে দেখে পুরাই অবাক , আরো অবাক আম্মু আমাকে থাকতে পারমিশন দিসে দেখে । গত বারও আমাদের ডাটাবেস প্রজেক্ট ছিল আম্মু একদিনও আমাকে থাকতে দেয় নাই । হলের গেট ১০ টায় বন্ধ হয় , আম্মু ঠিক পৌনে ১০ টায় হলেও এসে আমাকে নিয়া গেসে। আমার তখনও বিশ্বাস হইতে ছিল না , আমি ১০০% নিশ্চিত ছিলাম একটু পরেই আম্মু ফোন করে বলবে তোমার থাকা লাগবে না, আমি নিতে আসতেসি । আম্মু ঠিকই একটু পর পর ফোন করতেসিল , আসলে আমাকে ছাড়া রাতে থাকার অভ্যাস নাই যে , কোনদিনই থাকে নাই , রাতে খাব কি!!! হলেতো বাইরের কারো খাওয়ার সিস্টেম নাই , আম্মু ঠিকই ড্রাইভার ঊনাকে দিয়া খাওয়া পাঠাইল । পারশিয়া ও বাসা থেকে তরকারি নিয়া আসছিল , সবাই মিলে রাত ১১ টায় খেতে বসলাম। খিদাও লাগসিল সবার । আমার আর পারশিয়ার তরকারী আর ভাত আর বিপাশার হলের রাতের খাবার সব মিলায়ে একটা পিকনিক পিকনিক ভাব হল, এত মজা করে মনে হয় অনেক দিন খাই নাই । তারপর বসা হল আবার ওস নিয়া। সেই ট্রায়াল এন্ড এরোর প্রসেস ...। আর ওদিকে ফেডোরার ভার্শন নিয়া তখন সবার মধ্যে তুলকালাম অবস্থা । একই দিনে মানুষজন ৩/৪টা ফেডোরার ভার্শন ইন্সটল দিয়া ফেলতেসে দেখতে কোনটায় কার্নেল এর কোন ভার্শন ব্যবহার করে সিস্টেম কল ইমপ্লিমেন্ট করা যায় । মুনিয়াতো এই কাজেই ব্যস্ত এই ব্লক থেকে ওই ব্লকে দৌড়াদৌড়ি । সব শেষ এ রাত ২:৩০ টায় সবাই ক্লান্ত কাজের কাজ কিছু হয় না । এদিকে ঘুম এ সবার চোখ বন্ধ হয়ে আসতেসে । তখন আমি বললাম চল নিচের বাগান থেকে ঘুরে আসি । বাকি ৩ টাও রাজি হয়ে গেল । নিচে গিয়ে দেখি আর্কির মানুষজন এখনও স্টাডি রুমে কাজ করতেসে। বাইরের পরিবেশটা যে কি অপূর্ব সুন্দর লাগতেসিল আমার !!!!!! আসলে এত রাতে কখনই আমি বাসার বাইরে যাই নাই আগে । তারপর ৪ জন এ বসে গল্প শুরু করলাম, সবার ঘুম যে কোই উড়ে গেল । সোয়া ৩ টার দিকে সবাই ঘুমাতে গেলাম।
আমার জন্য এটা খুবই মজার একটা অভিজ্ঞতা ছিল ।
অনেক দিন পর কিছু লিখলাম তাও যা লিখলাম সবই ফাঊ প্যাচাল । কেঊ পরে বিরক্ত হলে নিজগুনে ক্ষমা করে দিয়েন ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৯:৩৪