somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প অথবা বিভ্রাট

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছেলেটি জানত মেয়েটি তাকে ভালবাসে। ভালোবাসা উপপাদ্য ছিল না। ‘এটাই প্রমাণিত ত্রিভুজ’ এর মত ‘এটাই প্রমাণিত ভালোবাসা’ লেখা ছিল না কোথাও। তাই এই আজ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সবকিছুকে এক সুতোতে বেঁধে ছেলেটি ধরে নিয়েছে এটাই ভালোবাসা। সে অপ্রমানিত ভালোবাসায় বুঁদ হয়ে ছেলেটা চষে বেড়াত এই শহর। বর্ষা আসি আসি করছে তখন, রমনার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কদম ফুলের অপ্রাপ্তবয়স্ক নবজাতককে দেখে ছেলেটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই শহরের বর্ষার প্রথম কদম ফুলটা মেয়েটার হাতেই শোভা পাবে। ছেলেটা জানত ছাতাবিহীন কোন বৃষ্টির দিনে যদি মেয়েটার সাথে দেখা হয়ে যায় তাহলে মেয়েটা তাকে ডেকে ফুল আঁকা ছাতাটার নিচে আশ্রয় দিবে। এইটুকুন একটা ছাতাতে বৃষ্টির ছাঁট দুজনকে ভিজিয়ে দিয়ে যাবে। বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ছেলেটি মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে নিজের দিকে টেনে নিবে। তখন ছেলেটা আরো কাছ থেকে মেয়েটার ভেজা চুলের গন্ধ নিবে।
ছেলেটার রাতগুলো ছিল গল্পের মত। এই শহরের নাগরিকরা যখন সাময়িক মৃত্যুর মিছিলে শামিল হত, তখনো ছেলেটি ব্যস্ত থাকতো ‘এক’ এর নামতা সাজানোতে। তার ধারাপাত জুড়ে ছিল একজনের অস্তিত্ব। ঘন কালো চুলের, কাজল চোখের এক অষ্টাদশী। ছেলেটি যেদিন থেকে ভাবতে শুরু করেছিল সে মেয়েটিকে ভালোবাসে সেদিন থেকে ছেলেটির চোখে ভর করেছিল অদ্ভুত এক ঔজ্জল্য। সে আলোতে রঙ্গিন হয়েছিল এই শহরের অপরিষ্কার ফুটপাত, রঙচটা দেয়াল।
ছেলেটির শার্টে লেগেছিল বৈদ্যুতিক উষ্ণতা। দুইদিন গায়ে দিয়েই মনে হত টি-শার্টটা ময়লা হয়ে গেছে। অথচ একটানা এক টিশার্ট গায়ে ক্যালেন্ডারের কত চারকোনা ঘরকে বিদায় জানিয়েছে সে। ছেলেটা আর কি করত? ও হো, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করত। তার শার্টের নিচে জমা রাখত পারফিউমের মৃদু সুবাস। কোনদিন যদি মেয়েটি আর কাঁধে মাথা রাখে তাহলে মেয়েটার কাছে পৌছে যাবে সে সুবাস। মেয়েটার কানের পাশ থেকে চুল সরিয়ে ফিসফিস করে মেয়েটার কানে তুলে দিবে সে কথাগুলো, যে কথাগুলো সাঁজাতে কেটে গেছে রাতের পর রাত।

কোনদিন যদি মেয়েটার হাত ধরার সুযোগ হয়? যদিও মেয়েটার হাত ধরার সাহস ছেলেটা এখনো সঞ্চয় করতে পারেনি। তবুও যদি মেয়েটাই হাতটা বাড়িয়ে বলে ‘এই হাতটা শক্ত করে ধরো তো’।
ছেলেটা মেয়েটার হাত ধরে রবে সেদিন বিদায় অবধি। বাসায় এসে সে হাতে সে কিছুই ছোঁবে না। যতক্ষন জেগে রবে খানিক পর পর চুমু খাবে সে হাতে, তারপর বুকের উপর সে হাত রেখে ঘুমিয়ে পড়বে।

ছেলেটা ভালোয় ছিল। এভাবেই কাটছিল দিন। কতদিন কেটেছিল এভাবে? সেদিন পর্যন্ত এভাবেই কেটেছিল যেদিন মেয়েটি বলেছিল ‘এটা অপ্রমাণিত ভালোবাসা, তুমি অন্য কাউকে খুঁজে নিও’।

এরপরে কোন গল্প নেই। জীবন্মৃত মানুষের কোন গল্প থাকে না।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ইতিহাস মুছে দিতে চায় ২৪শের লাল বিপ্লবীরা/ আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৫



২৫শে মার্চ দিবাগত কালো রাতের অপারেশন সার্চলাইটের পরক্ষনেই।২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ভুমি’কে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। সেদিন থেকেই স্বাধীন সার্বভৌম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বডি সোহেলের মন ভালো নেই !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:২৫


আমাদের জাতীয় নেতাদের বংশধরেরা বড়ই অদ্ভুত জীবন যাপন করছেন। তাদের বাপ চাচাদের মধ্যে মত-বিরোধ থাকিলেও একে অপর কে জনসম্মুখে অপমান করেন নাই। এক্ষেত্রে নেতাদের প্রজন্ম পূর্বপুরুষ দের ট্রাডিশন ধরে রাখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পত্রিকায় লেখা প্রকাশের ই-মেইল ঠিকানা

লিখেছেন মি. বিকেল, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৩৩



যারা গল্প, কবিতা, সাহিত্য, ফিচার বা কলাম লিখতে আগ্রহী, তাদের জন্য এখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতা, সাহিত্য পাতা ইত্যাদির ই-মেইল ঠিকানা দেওয়া হলো। পত্রিকায় ছাপা হলে আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তার দায়ভার কি সেনাবাহিনী নেবে? তাদের সমালোচনাকে অনেকে সেনাবাহিনীর সমালোচনা মনে করছে কেন?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ২:২৯

বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখনও আমাদের জন্য গর্ব এবং আস্থার জায়গা। কারণ দুর্নীতির এই দেশে একমাত্র সেনাবাহিনীই সেই প্রতিষ্ঠান যার আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় সুনাম এখনও আছে। কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েলকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশীর মত থাকাই দরকার।

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:১৮



একটি জনগণ কিভাবে নিজেদের জন্য নরক ডেকে আনতে পারে-
গাজার জনগণ তার জ্বলন্ত প্রমান। এরা হামাসকে নিরংকুশ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে কারণ হামাস ইসরায়েলের ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক অস্ত্বিত্বে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×