(নয়াদিল্লি থেকে প্র্রথম আলোর রিপোর্টার ইফতেখার মাহমুদের পাঠানো প্রতিবেদন।)
টিপাইমুখ প্রকল্পে শুধু জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করবে ভারত। বরাক নদের উজান বা ভাটি- কোনো এলাকাতেই সেচ অবকাঠামো বা ব্যারাজ নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করবে না বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে তারা। গতকাল নয়াদিল্লির শক্তি ভবনে বাংলাদেশ সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধে এ আশ্বাস দেন। প্রকল্পের নির্মাণকাজ এখনো শুরু হয়নি বলেও তিনি জানান।
বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে টিপাইমুখ প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের কাছে তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকারের যদি আরও কোনো তথ্য জানার প্রয়োজন হয়, তাও সরবরাহ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। বাংলাদেশকে না জানিয়ে কোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ না করার কথা উল্লেখ করে ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, টিপাইমুখ প্রকল্প থেকে এক ফোঁটা পানিও সেচের কাজে ব্যবহার করা হবে না। তাই পানি প্রত্যাহারের কোনো আশঙ্কাই নেই।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ভারত এমন কিছু করবে না যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে তৈরি হওয়া সুসম্পর্কের অবনতি ঘটে। দুই দেশের মধ্যে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রস্তাব দেন তিনি।
গতকাল বিদ্যুৎমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান আব্দুর রাজ্জাক জানতে চান, বাঁধ নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশের কোনো তির আশঙ্কা আছে কি না? জবাবে সুশীল কুমার সিন্ধে বলেন, প্রকল্পটি হলে বাংলাদেশের কোনো ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই, বরং লাভ হবে। শুষ্ক মৌসুমে বরাক নদ দিয়ে যেখানে ২৮২ কিউসেক পানি আসে, সেখানে বাঁধ নির্মাণের পর ৫৩৭ কিউসেক পানি পাবে বাংলাদেশ। বন্যার স্বাভাবিক মৌসুমে আসে ২০২১ কিউসেক পানি। আর বাঁধ নির্মাণ করা হলে পানির পরিমাণ কমে ১৬৪৮ কিউসেক হবে। এতে বাংলাদেশ শুষ্ক মৌসুমে বেশি পানি পাবে এবং বন্যার প্রকোপ কমবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যাওয়া বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন ভূমিকম্পের ঝুঁকির বিষয়টি ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের কাছে তুলে ধরেন। জবাবে টিপাইমুখ প্রকল্প এলাকাটি ভূমিকম্পপ্রবণ বলে স্বীকার করে তাঁরা বলেন, বাঁধ নির্মাণে এমন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যাতে ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ওপরের ভূমিকম্প হলেও কোনো ক্ষতি হবে না। ভারতের তিহারি বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে ৮ মাত্রার ওপরের ভূমিকম্প প্রতিরোধক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। টিপাইমুখে তার চেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
পুরো প্রতিবেদন এখানে Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৩:১৭