somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার লেখা আর্টিকেল

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কৃমি দূরীকরণে প্রয়োজন সচেতনতা
সাদিয়া ফাতেমা কবির
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আজ ২২মে। আজ থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে `কৃমি নির্মূল সপ্তাহ|’ আগামী সাতদিন দেশব্যাপী সকল প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একযোগে শুরু হচ্ছে এই কার্যক্রম।

এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো ৫-১২ বছর বয়সী শিশুদের কৃমি-রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং সর্বোপরি কৃমি-রোগের মত সংক্রামক রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।

কৃমি কি?
কৃমি হলো মানবদেহের সবথেকে তিকর পরজীবী। এটি মানবদেহ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করে এবং বংশবৃদ্ধি করে থাকে। বিভিন্ন প্রজাতির কৃমি আছে তবে আমাদের দেশে মূলত সুতা কৃমি, বক্র কৃমি এবং কেঁচো কৃমির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।

কৃমি কেন হয়?
কৃমির প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় অপরিচ্ছন্নতা এবং অসচেতনতাকে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করেন না, মলত্যাগের জন্য তারা খোলা জায়গাকেই বেছে নেন। এভাবে খুব সহজেই মল দ্বারা সংক্রমিত হয় পরিবেশ যা পরবর্তীতে কৃমির সংক্রমণে ভূমিকা রাখে বেশ দৃঢ় ভাবেই। এছাড়া খাবার আগে, মলত্যাগের পর ভালভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস আমাদের অধিকাংশের মধ্যে নেই। যা এ রোগের আরও একটি কারণ। এছাড়া অপরিষ্কার এবং সংক্রমিত খাবার, শাকসবজি এবং অবিশুদ্ধ সংক্রমিত পানির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। এমনকি খালি পায়ে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে হাঁটার ফলেও কৃমির লার্ভা পায়ের তলার সূক্ষ্ম ছিদ্রের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে।

লক্ষণ সমুহ:
বিভিন্ন কৃমির ক্ষেত্রে দেহে বিভিন্ন ধরণের লক্ষণ দেখা যায়।

১) বক্রকৃমির আক্রমণে মূলত রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। এছাড়া পেটে ব্যথা, পাতলা পায়খানা, খাওয়াদাওয়ায় অরুচি, আমিষ সল্পতা দেখা দেয়। এর ফলে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধা প্রাপ্ত হতে পারে।

২) কেঁচো কৃমির লক্ষণ প্রকাশের ব্যাপারটি হয় বেশ ধীরে। শুরুতে কোনো লক্ষণ না দেখালেও দিন যত যেতে থাকে সংক্রমণ ও কৃমির সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লক্ষণগুলোও প্রকাশিত হয়। পেট ফাঁপা, পেট ফোলা, অরুচি, বমিভাব, পাতলা পায়খানা, আমাশয়, ওজনহানির মত লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।

কেঁচো কৃমি দুর্ঘটনা ঘটাতে একটু বেশিই পটু। এই কৃমি পিত্তনালীতে আটকে গিয়ে জণ্ডিস এমনকি পিত্ত-থলি বা পিত্তনালীর পাথর এর মত রোগগুলোকে ত্বরান্বিত করে থাকে। এছাড়া কৃমি এপেনডিক্সে আটকে গিয়ে এপেন্ডিসাইটিস ও করতে পারে।

৩) ফিতা কৃমির ক্ষেত্রে ভয়াবহতার মাত্রা আরও বেশি। এই কৃমির সিস্ট রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে চলে গেলে খিঁচুনি এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

চিকিৎসা:
কৃমি রোগের চিকিৎসায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমির ওষুধ সেবন করতে হবে। কৃমির ওষুধ সাধারণত প্রতি চার মাস অন্তর সেবন করতে হয়। বাড়িতে কৃমির ওষুধ গ্রহণ করলে বাড়ির প্রতিটি সদস্যকেই তা গ্রহণ করতে হবে। কারণ তা না হলে সংক্রমণ এর আশঙ্কা থেকেই যাবে।

প্রতিরোধ:
যেকোনো রোগের ক্ষেত্রেই প্রতিরোধ অনেক বেশি প্রয়োজন। কৃমি যেহেতু সংক্রামক রোগ তাই এক্ষেত্রে প্রতিরোধ ও সচেতনতা এই রোগ নিরাময় ও নির্মূল উভয় ক্ষেত্রেই একটু বেশি ভূমিকা রাখে| তাই কৃমি প্রতিরোধে-

১) স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার করুন।
২) প্রতিবার খাবার আগে এবং মলত্যাগের পর সাবান বা ছাই দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
৩) শাকসব্জি, ফলমূল ইত্যাদি খাবার আগে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
৪) হাতের নখ ছোট রাখুন।
৫) ফোটানো পানি পান করুন। রান্না, গোছলের মত কাজগুলোতেও পরিষ্কার পানি ব্যবহার করুন।
৬) মিষ্টি খেলে কৃমি হয় এই ধরণের ভ্রান্ত ধারণা দূর করুন। নোংরা খাবার তা সে যাই হোক না কেন কৃমির সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
৭) নোংরা, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস নিজে ত্যাগ করুন এবং আপনার শিশুর দিকেও ল্য রাখুন। সবসময় স্যান্ডেল ব্যবহার করার অভ্যাস করুন।

কৃমি রোগ আমাদের দেশের একটি বহুল প্রচলিত স্বাস্থ্য সমস্যা। সব বয়সেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে তবে শিশুরাই এক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের দেশের শিশু মৃত্যুহার বৃদ্ধির পেছনে এই রোগের ভূমিকা রয়েছে কিন্তু একটুখানি সচেতনতা এই রোগকে প্রতিহত করতে যথেষ্ট। তাই সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন।

লেখক: শিক্ষার্থী, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ, বরিশাল

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১২
সম্পাদনা: তানিয়া আফরিন, বিভাগীয় সম্পাদক
লিঙ্কঃhttp://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=fe6f87c187a81cc4c879d8eeff23d21a&nttl=20120522100004113519&fb_source=message
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আহত আততায়ী

লিখেছেন রাজীব নুর, ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৩০



সভ্য নগরের মানুষ যেনবা বনমানুষ।
মানুষকে মানে না মানুষ;
আর মানুষের হানাহানি দেখে হাসে বনের মানুষ।

পথে না বেরোলে জানতামই না-
কতটা রপ্ত করেছি আমরা অবজ্ঞা অবহেলা ও পরচর্চা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ টাকার চাল ইতিহাসের সেরা দাম (এখন ৮৫), এই দামে ওনাদের চোখে পানি আসেনা৷

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:০৭

আমার বাবা সরকারি চাকরী করছে, একাই বিশাল যৌথ ফ্যামিলি চালাইসে৷ যার ফলে প্রচুর ঋণ হইসে৷ কিন্তু কোনোদিন চুরি করেন নাই৷ গ্রামীন ব্যাংক থেকে বাবা ১০ হাজার টাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডক্টর মুহম্মদ ইউনুস ওয়ান ম্যান আর্মি!!!!!

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৩২

ইন্টারিম সরকারে প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর একের পর এর চমক দিয়ে যাচ্ছেন ডক্টর মুহম্মদ ইউনুস। ভঙ্গুর, মেরুদন্ডহীন শাসন ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু, গৃহযুদ্ধের কাছাকাছি চলে যাওয়া একটি দেশের দায়িত্ব কাঁধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফ্রিল্যান্সারদের রক্ত-ঘামে অর্জিত অর্থ আটকে রাখার ষড়যন্ত্র: পেপ্যাল চালু না করার পেছনে কাদের হাত?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭

ফ্রিল্যান্সারদের রক্ত-ঘামে অর্জিত অর্থ আটকে রাখার ষড়যন্ত্র: পেপ্যাল চালু না করার পেছনে কাদের হাত?

পেপ্যাল লোগোটি বিবিসি ওয়েব পেইজ থেকে সংগৃহিত।

ভূমিকা

বিশ্বের প্রযুক্তিনির্ভর শ্রমবাজারে বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীরা এখন এক অনস্বীকার্য শক্তি। আপওয়ার্ক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় সার্কাস দল!!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১০ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৫

আওয়ামিলীগ আমলে আওয়ামি মন্ত্রী এম্পিরা বিনোদনবঞ্চিত :( এই দেশের জনগনকে বিনোদিত করত তাদের বিভিন্ন মন্তব্যের দ্বারা। এখন এই স্থান একছত্রভাবে দখল করেছে বিএনপি !! দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদেরই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×