এইটা একটা লাল রং এর শিলা যার বয়স ১৯০ মিলিয়ন বছর। সে সময় এটা একটা বালিযারি ছিল যা সময়ের আবর্তে কঠিন শিলায় পরিনত হয়েছে। এটা এতোটাই দুর্গম যে এখানে গাড়ি বা অন্য কোন যানবাহন যেতে পারে না, যেতে হয় ৩ মাইল কষ্টকর হাইকিং করে। যাওয়ার আমন্ত্রন রইলো

২) Antelope Canyon (Arizona - USA)
এরিজোনা তে অবস্থিত এই খাদটি সবচেয়ে বেশী পর্যটক অধিষ্যুত এলাকা। এর দুইটা অংশ উপরের অংশের নাম "Tse' bighanilini", এর মানে হইলো, "পাথরের ভিতরের দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় যে জায়গায়", নিচের অংশের নাম "Hasdestwazi", এর মানে হইলো "সর্পিল সাপের শিলা"। ওয়ান অফ মোষ্ট ফটোজেনিক প্লেস অফ দি আর্থ।
৩) Great Blue Hole (Belize)
বাতিঘর রীফ সিস্টেমের অংশ, "গ্রেট ব্লু হোল" বেলিজ শহরের মূল ভূখন্ডের প্রায় 60 মাইল দুরে অবস্থিত এই গর্তটি আনুমানিক এক মাইল ব্যাসের, ৪৮০ ফুট (১৪৫ মিটার) গভীর এবং এই গভীরতার জন্য এই গর্তের রং গভীর নীল। পৃথিবীতে অদ্বিতীয় ড্রাইভিং সাইট হিসাবে এটা খুবই জনপ্রিয়। চলেন ডুব দেই।
৪) Crystal Cave of the Giants (Mexico)
দক্ষিণ চিহুয়াহুয়া মেক্সিকো মধ্যে একটি খনি অভ্যন্তরে গভীর পাওয়া গেছে এই ক্রিষ্টালের বার দ্বারা পূর্ন গহ্বর। এই ক্রিষ্টাল যতটা কঠিন, এর মাটি ততটাই নরম। এইখানে ঘুরাঘুরি করা খুবই রিস্কি। একটা ভয়াবহ নিউজ হলো এর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে স্বর্ন,রুপা ও তামা। জায়গাটা ভুপৃষ্ঠের অনেক নিচে অবস্থিত। আল্লাহ আল্লাহ কইরেন যদি যাইতে মুন চায় ...


৫) Eye of the Sahara (Mauritania)
এই মৌরিতানিয়ার অন্তর্গত সাহারা মরুভূমির দক্ষিন-পশ্চিমে অবস্থিত 30 মাইল ব্যাসের ল্যান্ডফর্ম যা শুধু মহাশুন্য থেকেই দেখা যায়। এর গঠন দেখতে চোখের মত তাই একে "আই অফ সাহারা" বা "সাহারার চোখ" বলা হয়। ধারনা করা হয় একটি উল্কাপিণ্ড আঘাতে এর উৎপত্তি হয়েছিল কিন্তু এর সৃষ্টি এখনও একটি রহস্য। বিজ্ঞানীরা এখনও এর রহস্য উৎঘাটন করতে পারে নাই।
৬) Blue Lake Cave (Brazil)
ব্রাজিলের অনেক মুভিতে এই জায়গাটা দেখানো হয়। এক কথায় ভুগর্ভস্থ লেক! এত সুন্দর লেক আর কোথাও নাকি নেই। জিওলোজিকাল ইফেক্টের জন্য এর পানির রং অসাধারন নীল। প্রকৃতির খেয়াল !!! আমি যামু .... গোসল করমু ... এইখানে গোসল করতে টাকা লাগে না মাগার যাইতে টাকা লাগে। [স্পন্সর আবশ্যক]
৭) Giants Causeway (Ireland)
নর্থদান আয়ারল্যান্ডের সমুদ্রতীরে অবস্থিত। মাএ ৪০,০০০ পাথরের ব্লক পাবেন এখানে যা আগ্নেওগিরির লাভা থেকে গঠিত। কল্পনা করেন, আপনে আর সে, বসে আছেন এই সমুদ্রতীরে, দেখছেন সূর্যাস্ত, আহা লাইফ !!!
৮) Hell Gate (Turkmenistan)
তুর্কিস্থানের লোকালরা একে ডাকে "ডোর অফ হেল"। এইটা কিছুটা মানুষের তৈরি বলাও যায়। কাহিনী হইলো, কিছু জিওলজিষ্ট গ্যাসক্ষেএ খুজতাছিল। এমন সময় হঠাৎ করে সব ইকুইপমেন্ট সহ পুরো এলাকা নিচের দিকে ডেবে যায়। তখন তারা গ্যাসপূর্ন এই বিশাল গর্তটা আবিষ্কার করে। খুব বেশি দিন হয়নি, ৪০ বছর আগে। তো তারা মনে করলে যে যেহেতু গর্তটা গ্যাসপুর্ণ, আগুন লাগিয়ে দিলে গ্যাস গুলা জ্বলে শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা গর্ত করে দেখবে নিচে গ্যাস ক্ষেএ আছে কি না। তাদের ধারনা ছিল নিচে খুব বেশি গ্যাস নাই, কিন্তু সব এক্সপার্টদের ভুল প্রমানিত করে এই বিশাল প্রকৃতিক চুলাটা আজ প্রায় ৪০ বছর ধরে জ্বলেই যাচ্ছে।
৯) Wave Rock (Australia)
ঢেওএর মত দেখতে এই পাথরটি আস্টেলিয়ায় অবস্থিত। এইটা ১৫ মিটার উচা ও ১১০ মিটার লম্বা। কেন এমন হলো বুঝলাম না, গুগোল ঘেটেও কিছু বের করতে পারলাম না।
১০) Chocolate Hills (Philippines)
আমি নিজেই ভাবছিলাম এইটা হয়তো ফটোসপ। কিন্তু এইটা ফটোসপ না। বোহাল, ফিলিপাইনে এই জায়গায় আপনে পাবেন ১২৬৮ টি "পার্ফেক্ট কোন সেপ" পাহাড়। এর নাম "চকলেট হিলস"। পুলাপান নিয়ে যেতে পারেন।
১১) Dry Valleys (Antartica)
এনটারটিকায় অবস্থিত এই জায়গা কে বলা হয়, পৃথিবীর বুকে মঙ্গল গ্রহের মত দেখা সবচেয়ে সামন্জস্যপূর্ণ এলাকা। এইটাই এন্টার্কটিকার একমাত্র জায়গা যেখানে তুষারপাত হয় না। এই জায়গার মাঝে যে লেকটা আছে তার কাহিনী হলো এর উপরে যে বরফ জমে থাকে তার পূরুত্ব কয়েক মিটার পর্যন্ত হয়। আরো আছে, এই বরফের নিচের পানি খুবই লবনাক্ত এবং এই পানিতে যে এককোষী প্রানী বাস করে তার সাথে এই পৃথিবীর আর কোন প্রানীর মিল নেই!!!
১২) Socotra Island (Indian Ocean)
এখানে যদি আপনাকে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে আপনি বিলিভ করবেন না যে আপনে পৃথিবীতে আছেন। নো ওয়ে। আপনার মনে হবে আপনে অন্য কোন গ্রহে চলে গেছেন।
ওকে, কিছু তথ্য দিচ্ছে, দ্বীপটি ৬-৭ মিলিয়ন বছর আগে মেইনল্যান্ড আফ্রিকা থেকে এর সকল রহস্য সাথে নিয়ে আলাদা হয়ে যায়। বর্তমানে এর অবস্থান ইন্ডিয়ান ওশানে, ২৫০ কিমি দূরে সোমালিয়া থেকে এবং ৩৪০ কিমি দূরে ইয়েমেন থেকে। এই দ্বীপে অনেকগুলো গুহা আছে যার কয়েকটা লম্বায় ৭ কিমি পর্যন্ত। এই গুহাগুলো কিভাবে হয়েছে জানেন, এগুলো হয়েছে স্যান্ডি নামক উপকুলীয় বাতাসের প্রবহের কারনে এবং এর সবচেয়ে বড় পাহাড় টি ১৫২৫ মিটার উচা। সবচেয়ে বড় চমক হলো এর অনেক গাছপালা, পশু প্রানীই ২০ মিলিয়ন বছর আগের!!!! অদ্ভুত, তাই না??? এই দ্বীপের ধুলাবালি ও সংরক্ষিত। যেতে পারবেন, ঘুরতে পারবেন কিন্তু কোন কিছু নষ্ট করতে পারবেন না। এমনকি ওখানে থাকতেও পারবেন না।
১৩) Rio Tinto (Spain)
এটা একটা ভূগর্ভস্থ নদী যা মাইন (রিও টিনটো)খননের সময় বের হয়ে আসে। এই মাইনটি ব্যপ্তি এতোটাই ব্যপক হয় যে এর আশেপাশের গ্রামগুলোকে অন্যত্র সড়িয়ে ফেলতে হয়। এবং বেশ কয়েকটি পাহাড়ও এই খননের মাঝে পরে জীবন হারায়। এই খননের প্যাটার্ন এতোটাই দৃষ্টিনন্দিত যে দেখলে মনে হবে আপনি চাঁদে আছেন। "রিও টিনটো" বলতে একটি মাইন, একটি নদী ও এই জায়গাকে বুঝায়। তো মাইনের কথা বললাম, জায়গার কথাও বললাম, এবার আসেন নদীর কথায়, এই নদীর পানিতে নামবেন এমন স্বপ্নেও ভাইবেন না। ঢুব দিবেন কিন্তু যখন পাড়ে উঠবেন তখন দেখবেন গায়ে শুধু হাড় রয়ে গেছে, মাংস-চামড়া নদী রেখে দিছে। এই নদীর পানি অত্যন্ত আম্লিক (pH-1.7-2.5) এবং ভারী ধাতু সমৃদ্ধ। ভাবতাছি বার্ষিক সাতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে কেমন হয় ???
১৪) Kliluk, the Spotted Lake (Canada)
"ক্লিলুক" সম্ভবত রেড ইন্ডিয়ানদের দেয়া নাম, "স্পটেট লেক" কাগুজে নাম। কাহিনী হইলো, গরমে এই লেকের পানি বাষ্পিভূত হয়, তখন পানিতে থাকা মেটিরিয়াল গুলা জমাট বাধে এবং সাদা রং এর গোল গোল সার্কেল তৈরি করে। এখন কথা হলো এর পানির কালার চেন্জ হয় কেমনে? ওয়েল, এর পানিতে ছোট ছোট উদ্ভিত কনা থাকে, তাদের কারনে এর রং কখনো হলুদ কখনো নীল কখলো সবুজ হয়। এর যাদুকরি ক্ষমতা আছে, তা হলো, রেড ইন্ডিয়ানরা এর পানি কাটা ছেড়ায় ব্যবহার করতো। মানে ঔষধ হিসাবে।
১৫) Salar de Uyuni (Bolivia)
আমার মনে হয় বলিভিয়াতেই দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি অপার্থিব ও দর্শনীয় ল্যান্ডস্কেপ আছে। এর ভিতর এই সল্ট লেক একটি। একে আপনি লবনের মরুভুমিও বলতে পারেন। একটু খটকা লাগতাছে? ওকে, পড়তে থাকেন, কাহিনী শুরু হইছিল ৪০,০০০ বছর আগে। তখন একটা প্রি-হিস্টরিক বিশাল লেক ছিল, নাম Lake Minchin, তো এই লেক যখন শুকায় গেল তখন দুইটা ছোট ছোট লেক ও দুইটা লবনের মরুভুমি বংশধর হিসাবে রেখে গেল। এর একটা হলো এই "সালার ডি ইউনি"। কি আছে এতে? শুধু লবন আর লবন, কত? হিসাবে ১০ বিলিয়ন টন, আর বছরে এখান থেকে উত্তোলন করা হয় ২৫০০০ টন। প্রমিস, আমরা লবনের অভাবে জীবনেও পড়বো না।
১৬) Vale da Lua (Brazil)
পৃথিবী সৃষ্টির সময়ের পাথর টাচ করতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে এখানে। ও সুখবর এখানে আছে প্রকৃতিক সুইমিং পুল।
১৭) The Stone Forest (China)
চীনের সব কিছুই যেন কেমন কেমন... এই যেমন এইটা ... এই জঙ্গল হলো পাথরের ... এমন জঙ্গল দুনিয়াতে আর একটাও নাই। এর পরিচয়ই এর সবকিছু বলে-- ''First Wonder of the World"
১৮) Eisriesenwelt Ice Caves (Austria)
এর ব্যপারে বলতে হলে বলা হয় এটি হলো "Mother Nature's handicraft"। এটি লম্বায় ৪০ কিমি কিন্তু এর অল্প একটুই টুরিষ্টরা দেখতে পারেন, আর তাতেই নাকি তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
সবাইকে শুভকামনা , আজ এ পর্যন্তই ...
আমার "কত অজানা রে" সিরিজ:
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-উৎসব (কত অজানা রে পার্ট-১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-কম্পিউটার মাউস (কত অজানা রে পার্ট-২)
পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-প্রাকৃতিক গরম পানির লেক (কত অজানা রে পার্ট-৩)
পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- জাপানের কিছু পুকুর যাকে তারা 'হেল' বা নরক বা জিগোকু বলে (কত অজানা রে পার্ট-৪)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দুবাই ওয়াল্ড (দেখলেও পস্তাইবেন না দেখলেও পস্তাইবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৫)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ক্রেজিয়েষ্ট ম্যানমেইড ফাউনটে (কত অজানা রে পার্ট-৬)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-এক্সট্রিম বডিবিল্ডার (কত অজানা রে পার্ট-৮)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫