যারা "পাইরেটস অফ ক্যারাবিয়ান" মুভিটা দেখছেন তারা "নাইন পিছ অফ এইট" কথাটা শুনে থাকবেন। আজ আপনাদের দেখাবো বাস্তব দুনিয়ার "এইট পিছ অফ হেল"। "জিগোকু অফ বিপু" "The "hells" (地獄, jigoku) of Beppu" এর জাপানী নাম। জাপানের দুইটা জেলায় এই হেল গুলা অবস্থিত। প্রথম ছয়টা "কানাওয়া(Kannawa)" জেলায়, বাকি পরের দুইটা "শিবাশেকি(Shibaseki)" জেলায়। চলেন আপনাদের নরক দেখায় নিয়া আসি। খবরদার পিছে পরে যাবেন নে কিন্তু, তাহলে আর দুনিয়ায় ফিরে আসতে পারবেন না ... হু হু হা হা হা ....
১) Umi Jigoku (উমি জিগোকু)

নরক হলেও এটা দেখতে খুব সুন্দর। আপনে হয়তো ভাবতাছেন, জিনিসটা কি? আচ্ছা যান বলে দেই, এইটা নীল পানির একটা পুকুর। এর নাম "সমুদ্র নরক(sea hell)"। এর আশেপাশে আরও কয়েকটা ছোট ছোট পুকুর আছে। এর ভিতর যেইটা সবথেকে বড় সেইটার আবার মেলা কাহিনী, মানে হইলো এর পানি পরিষ্কার, এর পানিতে যে পদ্ম ফুল ফোটে তার পাতা এতো বড় যে তা অনাযাসে মানুষ্য বেবিদের ওজন নিতে পারে।


২) Oniishibozu Jigoku (ওনিইশিবোজু জিগোকু)
কাঁদার পুকুর। কান্না-কাটির পুকুর মনে কইরেন না কিন্তু, কাহিনী হইলে এইটা একটা কর্দমাক্ত পুকুর যা ২৪ ঘন্টা বয়েল হইতাছে, এর নামকরনের মাজেজা হইতাছে, বয়েল হওয়ার ফলে যে বাবল গুলা তৈরি হয় তা দেখতে "মংক" দের নেড়া মাথের মত। সুখবর হইলো এইটার আশেপাশে কিছু পাবলিক গোসলখানা আছে। চাইলে গোসল করতে পারবেন। খরচ পরবে ৬০০ ইয়েন। মাএ ৫৪৯.৫৬ টাকা। এক গোসলে




৩) Shiraike Jigoku (শিরাইকি জিগোকু)
হেরা কয় "white pond hell" আমি কই দুধের নরক। এর পানির রং সাদা। আমার ধারনা এর নিচে চিনামাটির খনি আছে। এই পুকুরের চারপাশে একটা চমৎকার বাগান আছে। আর পুকুর পরিষ্কার থাকলে এক পানির নিচে দেখতে একুরিয়ামের মত। এর নাম হেল হলো কেন বুঝলাম না ..


৪) Kamado Jigoku (কামাডু জিগোকু)
কাহিনী হইলো এর নাম "রান্নার পাএ নরক(cooking pot hell)" আপনে চাইলে এখানে হাত-পা চুবিয়ে গরম পানির মজা নিতে পারবেন, চাইলে পানি পানও করতে পারবেন, এমন কি খাবার গরম বা সিদ্ধ করে খেতেও পারবেন। শর্ত হইলো পুকুর ময়লা করা যাইবো না। আমাদের দেশে হলে পাবলিক এর উপর টাট্টিখানা বানাইয়া হাগু করতো।




৫) Oniyama Jigoku (ওনিইয়ামা জিগোকু)
গোসল করবার চাইলে ভুইলা যান। কারন এইটা "মানুষের ব্যবহারের জন্য নহে"। কেন ? মিয়া এইটাতে থাকে বিশাল বিশাল কুমির। এই পুকুরে নাইমা কুমির-কুমিরানী প্রেম করে, আর কি কি যেন করে




৬) Yama Jigoku (ইয়ামা জিগোকু)
"পর্বতনরক(mountain hell)" এই নাম হইলো কেন বুঝলাম না। এর নাম হওয়া উচিৎ ছিল "নরকের চিড়িয়াখানা", ও এর সাথে একটা ছোট্ট চিড়িয়াখানা আছে, কিন্তু এখানে থাকে সব পাহাড়ি বিশাল বিশাল চিড়িয়া। এইটাও "মানুষের জন্য নহে", "জাপানি চিড়িয়াদের জন্য সংরক্ষিত"


৭) Chinoike Jigoku (চিনোকি জিগোকু)
এর কথা আগের পোষ্টে বলেছি। অতিরিক্ত আয়রন থাকার জন্য এর পানির রং রক্ত লাল। নাম "blood pond hell"। এইটা নাকি ফটোজেনিক, মানে সবচেয়ে সুন্দর।


৮) Tatsumaki Jigoku
এইটার কাহিনী বেশ মজার। এর অফিসিয়াল নাম "spout hell"। আমি কই "নরকের কেতলি"। কেতলিতে পানি গরম করলে যেমন ফুস করে বাস্প ছাড়ে তেমনি এইটা থেকে প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পরপর ৬-১০ মিনিটের জন্য ফুস করে বাস্প ও গরম পানি ছাড়ে। কিছু কি মনে পরে গেল ???




যাবেন ঘুরতে ? তাহলে এই নেন কিছু তথ্য:
ম্যাপতো দিলাম কিন্তু আমি ম্যাপের কিছু বুঝি না।
-গাইড বলে যে লোকাল বাসে না উঠে কার রেন্ট করতে। ইচ্ছা মত ঘুড়াঘুড়ি করা যাবে তাহলে।
- সকাল ৮ টা বিকাল থেকে ৫ টা পর্যন্ত ভিজিট করা যাবে।
- সব গুলা নরক দর্শন করতে হলে টিকেট কাটতে হবে। মূল্য ১৮৩১.৮৮ টাকা বা ২০০০ ইয়েন।
- সপ্তাহের ৭ দিনই খোলা।
আমি দেখি নাই তাই তথ্য যাচাই করতে পারলাম না। সো তথ্যে ভুল থাকলে, বলেন ঠিক করে দিব, বাট নো ত্যেনাপেচানো ...
সবাই কে শুভকামনা।
সবাইকে শুভকামনা , আজ এ পর্যন্তই ...
আমার "কত অজানা রে" সিরিজ:
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-উৎসব (কত অজানা রে পার্ট-১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-কম্পিউটার মাউস (কত অজানা রে পার্ট-২)
পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-প্রাকৃতিক গরম পানির লেক (কত অজানা রে পার্ট-৩)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দুবাই ওয়াল্ড (দেখলেও পস্তাইবেন না দেখলেও পস্তাইবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৫)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ক্রেজিয়েষ্ট ম্যানমেইড ফাউনটে (কত অজানা রে পার্ট-৬)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয় - জিওলজিকাল বিশ্ময় (এর অনেক গুলো আজ প্রথম দেখবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৭)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-এক্সট্রিম বডিবিল্ডার (কত অজানা রে পার্ট-৮)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭