(১)
ঃ এই শুনো!
ঃ কি?
ঃআমি তোমাকে ভালোবাসি। আই লাভ ইউ।

ঃ কিন্তু আমি তোমাকে ঘৃণা করি। আই হেইট ইউ।

ঃ থ্যাংক ইউ।

ঃথ্যাংক ইউ কেন?

ঃআমাকে ঘৃণা করার জন্য। ভালোবাসায় হোক আর ঘৃণায় হোক, তোমার মনের কোনায় তো আমার জায়গা হয়েছে, সেটাইবা কম কি? তাই থ্যাংক ইউ!

ঃতুমি একটা পাগল।

ঃহবে হয়তো। জেনে খুশি হলাম যে আমাকে ভাবো তুমি।

ঃকই না তো! তোমাকে নিয়ে আমি আবার কখন ভাবলাম? কি বলছ এইসব?

ঃআমাকে নিয়ে না ভাবলে তুমি কিভাবে বললে যে আমি পাগল? যাক, তোমার কাছে পাগলই সই।

ঃকি সব উল্টা পাল্টা বলছ! যাও ডাক্তার দেখাও।

ঃডাক্তার রোগ ধরতে পারবে না। তুমি ধরেছ আমি পাগল, তাই ট্রিটমেন্ট ও তোমাকেই করতে হবে।

ঃআমি ঐ সবের মধ্যে নাই। যাও ভাগো। বললাম না, আই হেইট ইউ।

ঃআমিও তো সেটাই বলি। ব্যাপার না। চল সেলিব্রেট করি।

ঃসেলিব্রেট! মানে? কিসের সেলিব্রেশান?

ঃএই যে আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তুমি আমাকে ঘৃণা কর। দুইটার উৎপত্তিস্থল তো একই- হৃদয়। তাই একেই সেলিব্রেট করি।

ঃপাগলামির একটা লিমিট থাকা দরকার। কাউকে শুনছ যে ঘৃণা আর ভালোবাসা মিলিয়ে সেলিব্রেট করতে?

ঃকেউ করেছে কিনা সেটা জেনে আমি কি করব? আমি জানি আমারটা। তুমি না গেলে এখন কিন্তু আমার পাগলামি বাড়বে। কই যাবা বল।

ঃআমি কোথাও যাব না। তুমি কি করবা দেখি কর।

ঃঐ যে রাস্তার মাঝের খালি জায়গা দেখছ না? আমি ১ থেকে ১০ গুনবো, এর মধ্যে তুমি রাজি না হলে আমি সেখানে গিয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করব খালি গায়ে।

ঃযা খুশি তা কর। আমি যাচ্ছি না।

ঃ ১, ২, ৩, ৪, জলদি কর। আমি কিন্তু সত্যিই পাগল।

ঃ পাগলামি বাদ দিয়ে বাসায় যাও। এইসব করার মানে আছে?

ঃ ৫, ৬, ৭, ৮ জলদি বল। খুব দূরে না এই ধর সামনের কফি শপে। প্লিজ। আর মাত্র ২ বাকি।

ঃএকি তুমি শার্টের বুতাম খুলছ কেন? সত্যিই কি খালি গায়ে দৌড়াবা নাকি? থামো থামো। প্লিজ অনেক হয়েছে পাগলামি।

ঃ তাহলে তুমি যাচ্ছ আমার সাথে কফিশপে?

ঃ হুম যেতে পারি এক শর্তে। শুধু ৫ মিনিট। এর বেশি না।

ঃ আচ্ছা তাই সই। চল তাহলে।

ঃ একি ফুল কেন? ফুল কখন কিনলা আবার?

ঃআমি জানি তুমি আমাকে হেইট কর। সেই উপলক্ষে আগে থেকে রেডি রেখেছিলাম লাল গোলাপ। হা হা...

ঃহেইট করলে লাল গোলাপ দেয়? জানতাম না তো!

ঃঠিক তা না। প্রথমে ভেবেছিলাম কালো গোলাপ দিব। পরে ভাবলাম আমি তো তোমাকে ভালোবাসি। তাই লাল টাই ভালো। আর লাল তো তোমার প্রিয় কালার।

ঃ তুমি জানলে কিভাবে? আমার ডায়েরি পড়নিতো আবার!

ঃ নাহ, ভালোবাসলে অনেক কিছু জানতে হয়। তবে হেইট করলে কিছু না জানলেও চলে অবশ্য!

ঃ হুম তোমারে বলছে! আমিও তোমার সব জানি। আর ভাব দেখাইও না।

ঃ কি জানো বল দেখি। নাকি শুধুই পার্ট নাও।

ঃ সেটা আমি তোমাকে কেন বলব, আমার জানা আমার কাছেই থাক।

ঃ না বললে আমি মনে করব তুমি আসলে আমাকে হেইট কর না, খালি বলার জন্য বলা।

ঃ ও বাবা! হেইট করি তার জন্য আবার প্রমান দিতে হবে নাকি? আমি পারবোনা এইসব। যাও।

ঃ তাহলে কিভাবে হবে! তবে কি আমি ধরে নিব তুমিও আমাকে লাভ কর!

ঃ পাগল নাকি? যাও তোমার সাথে কফিশপে আসাই ভুল হয়েছে। আমি গেলাম।

ঃ যেতে চাচ্ছ যাও। কিন্তু হেইট যেহেতু কর, ফোন তো করবা নাকি?

ঃ ফোন কেন করব। যাকে ঘৃণা করে তাকে কি ফোন করে নাকি কেউ?

ঃ কেন করবে না? ফোন করে আমাকে বকা দিবা। ঝাড়ি দিবা। তোমার ঝাড়িও মজা। দিবা তো নাকি?

ঃ আমি কাউকে ঝাড়ি দেইনা।

ঃ আচ্ছা, তোমাকে ফোন দিতে হবে না, আমিই দিব। শুধু কষ্ট করে রিসিভ তো করতে পারবা।

ঃ দেখা যাক, আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। গেলাম।

ঃ কি ব্যাপার! গতকাল সারাদিন তোমাকে এত বার কল দিলাম তুমি ফোন ধর নাই কেন?

ঃ ফোন করেছিলে নাকি? কই খেয়াল করি নাই তো! তুমি না বললা যে আমাকে কল দিবা না!

ঃ আমি দিব না বলছি তুমিও ফোন ধরবানা নাকি? বেয়াদব একটা।

ঃ আরে বাবা, চোখ দেখি আবার ছল ছল! কি ব্যাপার পানি নাকি জল সেখানে?

ঃ সেটা তোমাকে ভাবতে হবে না।

ঃ আচ্ছা, ভাবলাম না, কিন্তু ম্যাডামের চোখ ফোলা কেন? চোখের নিচে দেখি কালি! সারা রাত ঘুমাও নাই নাকি?

ঃ খবরদার, আমাকে নিয়ে তুমি একটুও ভাববা না। ভালোবাসো না ছাই! ভালোবাসলে ফোন ধর নাই কেন?

ঃ তুমি দেখি রেগে যাচ্ছ!

ঃ রাগের কি দেখছ তুমি। আই রিয়েলি হেইট ইউ। স্টুপিড, বেয়াদপ ছেলে।

ঃ সত্যিই আমাকে হেইট কর তুমি?

ঃ কেন তুমি বুঝ না?

ঃ হুম আমি বুঝি তো। এই নাও রুমাল, আগে চোখ মুছ, আশেপাশের সবাই দেখছে।

ঃ রুমাল নিব কেন? আমার সাথে ঝগড়া করার ইচ্ছা আছে নাকি তোমার?

ঃ রুমালের সাথে ঝগড়ার কি সম্পর্ক আবার?

ঃ সেটা তুমি বুঝবা না। আই হেইট ইউ, আই হেইট ইউ, আই হেইট ইউ।

ঃ আচ্ছা ঠিক আছে। বুঝলাম। কিন্তু তোমার হাতে ওইটা কি? আমার জন্য নাকি?

ঃ নাহ তোমার জন্য না। এই গাছটার জন্য। গাধা কোথাকার।

ঃ ওমা, এত দেখি গোলাপ ফুল! হঠাত হেইট পারসনের জন্য গোলাপ! কি ব্যাপার ম্যাডাম?

ঃ কোনো ব্যাপার নাই।

ঃ কি হল। লজ্জা পেলে নাকি? ওমা, গাল দেখি পুরো লাল হয়ে গেছে।

ঃ তুমি একটা গাধা। মস্ত বড় গাধা। এখনো যে বুঝতে পারেনা সে একটা বলদ।

ঃ আমি জানি।

ঃ কি জানো?

ঃ কাছে আসো, কানে কানে বলি।

ঃ যাও বেয়াদপ। কাছে আসতে পারবো না। ভাগো।

(২) চার বছর পরঃ
ঃ মামুনি, তোমার আম্মু কোথায়?
ঃ আম্মু! লান্না কলে।
ঃ মা কে গিয়ে বল, আব্বু ডাকে।
ঃ আমি কেলছি না! আমাল পুতুলের বিয়ে এখন। এখন পালবো না।
ঃ আচ্ছা মা, তুমি খেল, আমি দেখি তোমার মা কি করে!
ঃ একি তুমি রান্না ঘরে কি কর? মেয়ের কাছে যাও।
ঃ না এমনি দেখতে এলাম তুমি কি কর!
ঃ এমনি! নাকি অন্য মতলব? ঘটনা কি সাহেবের!
ঃ ঘটনা কিছুই না। আই লাভ ইউ।
ঃ উম্মম... ঢং কত!! বিয়ের ৩ বছর পরেও এখনো লাভ ই কমলো না তার!
ঃ নাহ, তা কখনোই কমবে না। আই লাভ ইউ।
ঃ আই হেইট ইউ।
ঃ থ্যাংক ইউ।
ঃ কি হাসছো যে?
ঃ নাহ, এমনি।