অনেকদিন আগের কথা। এক দেশে ছিলো এক মেয়ে। মেয়েটার তখন ঠিক সেই বয়সটা। যেই বয়সে কারনে অকারনে হেসে ওঠে তারা, আবার এক পলক দুঃখেই কেঁদে বুক ভাসায়। অথবা কোনো উদাস দুপুরে বা নিঝুম বৃষ্টিরাতে ঘুম ভেঙ্গে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। নিস্তব্ধ তারা ভরা একাকী রাতে বা কোনো আবেগী সন্ধ্যার জ্যোৎস্না আলোয় হঠাৎ বুকের ভেতরটা শূন্য হয়ে যায়।
ঠিক তেমনি কোনো এক মন খারাপ করা বৃষ্টিবিকেলে কেউ শুনালো তাকে আশ্চর্য্য মায়াবী সেই গান। যে গান শুধু তাকেই নয় ঐ বয়সী যেকোনো মেয়ের মনে এক মূহর্তে সব দুঃখ ভুলিয়ে শুধুই ভালোলাগার আবেশ ছড়িয়ে দেয়। সেই রেশ আর কাটে না এই জীবনে।
পরী তুমি ভাসবে মেঘের ভাজে
আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে
তুমি আনমনে বসে আছো.......
আকাশপানে দৃষ্টি উদাস
আমি তোমার জন্য এনে দেবো
মেঘ থেকে বৃষ্টির ঝিরিঝিরি হাওয়া
সে হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি।
এমন এক অপার্থীব উপহারের পর কি আর কারো মন খারাপ থাকতে পারে? কখনই না। এ পৃথিবীর কোনো মেয়েরই সাধ্য নেই এরপর মন খারাপ করে থাকার। আর আমি এও নিশ্চিৎ যে দিতে পারে তাকে এমন উপহার তারও মন ভরে ওঠে কোনো এক অজানা ভালোলাগায়!
আমি তোমার জন্য এনে দেবো
রোদেলা সে ক্ষন
পাখি কে করে দেবো তোমার আপনজন
পরী,তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে.....
হ্যাঁ এ কথা একেবারেই সত্যি, পরীদেরকে মেঘের ভাঁজে এমন করে কে আর ভাসাতে পারে!! সে এক আশ্চর্য্য প্রশ্ন! সেই আশ্চর্য্য প্রশ্নটির উত্তরটি যার নাম সেও আমার দেখা আরেক আশ্চর্য্য মানব! অবশ্য এখানে অনেকেই জানে তার নাম, তার ব্লগের ঠিকানা।
http://www.somewhereinblog.net/blog/mohamedan
তার অবাক সুন্দর কবিতা গুলির সাথে সাথে আমি দেখেছি এক অবাক করা মানুষ! সত্যিকারের কবিরা বোধ হয় এমনি হয়। এ পার্থীব জগতের অযাচিত জন্জালগুলো থেকে তাদের বাস অনেক দূরে। জীবনের এই রুঢ় কঠিন পথে শুধুই হেঁটে চলা পথিক বুঝি তারা। তাইতো জানতে ইচ্ছে করে,
তোমার বাস কোথা হে পথিক ওগো দেশে কি বিদেশে?
তুমি হৃদয় পূরণ করা ওগো তুমি সর্বনেশে!
এমন করে লিখতে পারে যারা তাদেরকে সর্বনেশে ছাড়া আর কি বা বলা যায়? মাঝে মাঝে আমি অবাক হয়ে যাই তার কিছু লেখা পড়ে। এ যেন আমাদের সবার বুকের মধ্যে গেঁথে থাকা চিরচেনা অনুভুতিগুলিই। শুধু আমরা পারিনা সেই অব্যাক্ত অনুভুতিগুলিকে কথা ও বাক্যে ঠিকঠাক ফুটিয়ে তুলতে। যা এই যাযাবর পথিক অনায়াসে পেরে যায়। যাযাবর বললাম কারণ যতটুকু জেনেছি তাতে আমাদের এই অবাক মানবটির আসলেই যাযাবর বা বোহেমিয়ান স্বভাব আছে। সেই যাযাবর প্রায়ই ভর করে তার যাযাবর মনটাতেই।
গানটি নিয়ে গীতিকারের কিছু কথা
আজ তোমার জোছনা হারায় আলো
প্রজাপতির ডানায় বিষাদ করে ভর
যখন তখন,
আমি তোমার জন্য এনে দেবো
অঝোর শ্রাবন,
আকাশছোঁয়া জলজোছনা
পরী,তুমি ভাসবে মেঘের ভাঁজে.....
মাঝে মাঝে আমার সত্যিই একটা কথা খুব মনে হয়। এ গানটির ভেলায় চড়ে কতইনা পরীরা মেঘের ভেলায় ভেসেছে। বাংলাদেশের এমন কোনো মানুষই পাওয়া যাবেনা মনে হয় যার প্রিয় গানের তালিকায় এ গানটি নেই। আমি ইউ টিউবে সার্চ দিয়ে দেখেছি কতই না প্রেমিক তাদের প্রেমিকাকে উপহার দিয়েছে এই গান।
পরী গানটি নিঃসন্দেহে তার এক অনবদ্য সৃষ্টি! তবে অবাক হই বন্ধুবাৎসল আবেগী কিন্তু চাপা এ মানুষটির আরও কিছু গান শুনেও।
বন্ধু থেকো,
থেকো আমার প্রার্থনায়
স্বপ্ন, স্বপ্নভাঙ্গার
প্রতি মোহনায়
বন্ধু থেকো, কেউ থাকে না যখন...
সত্যিই এমন আকুল প্রার্থনার পর কেউ কি পারে বন্ধু না থেকে? তবুও এই একটি বাক্য, একটি লাইন কেউ থাকে না যখন... গানটির মধ্যে ভালোবাসা আর অভিমানের আকুতি এই দু এর সাগরে হাবুডুবু খাই আমি। বেরিয়ে আসে বুক চিরে কোনো এক অচেনা চাপা দীর্ঘশ্বাস!
বন্ধু থেকো ..কেউ থাকেনা যখন...
তোমার কি আর দুঃখ পেলে চলে
মেদুর আকাশ, বৃক্ষ সবুজ
তোমার কথা বলে।
তোমার কি আর দুঃখ পেলে চলে.....
এমন অভিমান!!! বুকচেরা কষ্টের এক অনুভুতিই যেন জড়িয়ে আছে কথা গুলোয়। অবাক হয়ে ভাবি কি করে যে লেখে মানুষ এমন সব কাব্য কথা!!!
তোমার কি আর দুঃখ পেলে চলে?
জলের উপর নিয়ন আলোর রঙ
আকাশ তখন খানিক এলোমেলো
শব্দ পাখির দল বিবাগী চুপ
বৃষ্টি নামে, নগর তখন আরাম শীতল পাটি...
হাসিমুখে আমি তখন বিষাদ নিয়েই হাঁটি।।
বার বার পড়ি। কত শতবার যে পড়েছি! মাথার ভেতর ঢুকে গেছে একটি লাইন। হাসিমুখে আমি তখন বিষাদ নিয়েই হাঁটি। চেপে রাখা অভিমান বা জমে থাকা কষ্ট নিয়ে হাসিমুখে ঘুরে ফিরি কতই না আমরা তবুও মাথার ভেতর ঢুকে যায় একটি লাইনই, হাসিমুখে আমি তখন বিষাদ নিয়েই হাঁটি।
আমার মন খারাপের পরেও
আমি আছি রে তোর পাশে,
আমার অনেক বিষাদ ভোরেও
আকাশ রাখছি তোর আকাশে...
তোকে দিলাম শঙ্খ সাদা
একটা স্বপ্ন ঘুড়ির সাথে
তোর মন ভালো থাক দিনে
তোর মন ভালো থাক রাতে..
আমার মন খারাপের পরেও
আমি ভাবছি তোর-ই কথা
আমার একশ দিবস যাবে
তোর ভাবনা নিয়ে একা...
আমার মন খারাপের পরেও
আমি থাকবো তোকে নিয়ে ’...
আমার মন খারাপের পরেও ...
এ লেখাটি পড়েও অবাক আমি! হাজার মন খারাপ করিয়ে দেওয়া কোনো মানুষকেও না ছেড়ে যাবার মত ভালোবাসা কে আর পারবে এমন কবি ছাড়া?
যে লেখাটি দেখে দুষ্টামী করে লেখা নীচে আমার নিজের একটা অকবিতা।
একটা শালিক আর জোনাকির ভুল.....................
যাইহোক, হাজার হৃদয়ে এই অনবদ্য ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে দেওয়া সে মানুষটির জন্ম আসলেই ধন্য আমাদের শতকোটী মনের ভালোবাসা পেয়ে।
আর ঠিক এক মিনিট পর তার জন্মদিন! তার জন্মদিনে তাকে জানাই প্রানঢালা ভালোবাসা আর শুভকামনা। হাজার বছর বেঁচে থাকো এমনি হাজার হাজার গান নিয়ে শত মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায়!
শুভ জন্মদিন!!!
তোমার জন্য এই স্পেশাল দিনে আমার এক টুকরো স্পেশাল কেক।
এটা পরীরাজ্য থেকে পরীদের উপহার
এটা সবার জন্য............লাল লাল, নীল নীল, চকলেট স্ট্রবেরী ফ্লেভারে
যাদের চকলেট বা কোলেস্টেরল প্রবলেম আছে তাদের জন্য সাদা ধপধপে ভ্যানিলা
আবারও একবার ---Happy Birthday To Nostalgic------
আর একটা গিফ্ট
http://www.mediafire.com/?4r1i7hr2wuel1az
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:০৭