ভ্রমণ বাংলাদেশ প্রতি বৎসর বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় প্রচুর ট্যুর করে থাকে । গত বছর ডিসেম্বরে এমনি একটা ট্যুর ছিল সিপ্পি পাহাড় ট্রাকিং । উচ্চতায় ইহা বাংলাদেশের ৪র্থ কিন্তু দূর্গমতায় প্রথম । সদস্য ছিলাম আমরা ২৩ জন । অবশ্য আমাদের কয়েকজন বাদে আমরা বাকীরা দূর্গম সিপ্পির চুড়ায় পা রাখতে পারিনি । বেশী দূর্গম স্থানগুলোতে ছবিও উঠাতে পারিনি । তবু যেটুকু উঠাতে পেরেছিলাম তাই দেখুন আমার ক্যামেরায়..............
শুরু হলো আমাদের দুর্ঘমতার দিকে পথ চলা, আর তার জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ হল বাশের লাঠি । এটা ছাড়া পাহাড়ে পথ চলা কিংবা পাহাড়ের উপরে থাকা আমাদের জন্য কোন ভাবেই সম্ভব ছিল না । তাই এখানে পাহাড়ী বন থেকে আমরা সবার পছন্দ মতো বাশের লাঠি সংগ্রহ করে নিলাম ।
এই পিচ্ছিল সরু মেটো পথ ধরে যেতে ভয় পেয়ো না, এই বলে পাহাড়ী ফুল আমাদের স্বাগতম জানালো..........
এমনিভাবে চললো আমাদের পথ চলা..........
একেতো চড়াই উৎরাই পেরোনো খুবই কঠিন, তার উপর নিজ বোঝা আর টিমের খাবার দাবারের কিছুটা বোঝা নিয়ে চলাটা এক সময় দুরুহ হয়ে উঠল । আর কুয়াশা ভেজা পিচ্ছিল লাল মাটির কথাটা নাই বা বললাম ।
সিপ্পি আরসুয়াং। বম ভাষায় আর মানে মোরগ, আর সুয়াং মানে মোরগের মাথার ঝুটি। খাড়া খাড়া ৩টা পিক দূর থেকে মোরগের ঝুটির মতো লাগে তাই এই নাম ( সৌম্য ভাই এর কাছ থেকে এই তথ্যটা জেনেছি ) । আর তিনটি পিকের মাঝখানে আমাদের থেকে বেশ নিচে জমাট মেঘ । বলা যায়....এইরূপ দেখে আমি মরতে পারি,,,,,,,,,,,,,,,
কঠিন থেকে কঠিনতর পথ.......
কদম ফুল টাইপের এটা ফুল না ফল আমার জানা হল না

১ম পিক আর ২য় পিকের মাঝখানের এই স্বচ্ছ ঝিরির শীতল জল আমাদের মাঝে এনে দিল নতুন উদ্যম......কিন্তু ২য় পাহাড়টায় চড়তে গিয়েই হাড়ে হাড়ে টের পেলাম পাহাড় ট্ট্যকিং কাকে বলে, কোথাও দেখা গেছে এক হাত একটা কার্নিস ৭০ডিগ্রী খাড়া হয়েউঠে গেছে সেই সাথে ৫০ডিগ্রী বাঁক । আর একপাশে খাড়া পাহাড় অপর পাশে হাজার ফুট খাদ এমন পথের কথা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি । ওখানে ক্যামেরা চালানো দূরের কথা জান নিয়া যে ফিরে এসেছি সেটাই বড় পাওয়া ।
সবচেয়ে বিপদ জনক পথটা পার হয়ে পাহাড়ের উচুতে উঠার পর এই জিনিসটা চোখে পড়ে, এটাও কোন ফুল না ফল জানতে পারিনি, এদিকে বার কোন একটা অনাজা প্রাণীর ডাক শুনতে পেয়ে এখানে আর দেরী করিনি, চলতে থাকি । এই পর্যায়ে আমরা মাত্র ছিলাম দু'জন । আমাদের চেয়ে শক্তিশালী টিম অনেক আগে চলে গেছে আর কিছুটা দূর্বল টিম এবং ওদের সহায়তা কারিরা যথেষ্ট পিছনে ছিল ।
বিশাল খাড়া একটা গিরিখাদের উপর পাহাড়ীদের তৈরী কাঠের সাকো, এই সাকো পার হও্যার পরেই আমার মাস্যল পুল করে, যার জন্য আমি তাৎক্ষণিক বসে সহ ট্রাকারদের সেবা নিয়ে দ্রুতই আবার হাটতে থাকি ।
এক সময় দেখা মেলে আমাদের পরবর্তী ক্যাম্প করার জন্য নির্ধারিত পাহাড়ীদের পাড়ার, এই পাড়ার নাম রোনিন পাড়া ।
আমাদের স্বাগত জানানোর অপেক্ষায়.....
এইখানেই হয় ২য় রাতের ক্যাম্প
চলবে................
আগের পর্ব এ্যাডভেঞ্চার অব সিপ্পি (ফটোব্লগ) -১