ছোট্ট সাদা ফুল বকুল, আর লাল সাদার শিউলী! ভোরের কুয়াশা ঢাকা , আর শিশির ভেজা মাটিতে ফুল ফুটে ঝরে যায়! যেন ফুল গুলো গাছ তলা সাজিয়ে দেয় নিজেকে দিয়ে! দূর থেকে মনে হবে স্বর্গ!
যখন আধো আধো বুলিতে কথা শিখেছি মাত্র, টুক টুক করে হাঁটা শিখেছি! খুব ভোরে দাদা গান গেয়ে ঘুম ভাঙ্গতেন! দাদা যখন মনে করিয়ে দিত ফুল নিবে না? আমি ঘুম ভুলে যেতাম! আমার ছোট্ট ঝুড়ি নিয়ে দাদার হাত ধরে নেমে যেতাম নিচে! কুয়াশা ঢাকা আকাশ! ঘাস শিশিরে ভেজা! টুক টুক করে হেটে আমি গাছতলা! ছোট ছোট হাত দিয়ে একটা একটা করে কুড়ানো ফুল যেত আমার ছোট্ট ঝুড়িতে! দাদা পাশে দাঁড়িয়ে দেখতেন, কিছু ফুল কুড়িয়ে দিতেন, পাশে হাঁটতেন। শিউলী তলার সব ফুল নিয়ে ছুটে যেতাম বকুল তলায়! শিউলী ফুল অনেক পাওয়া যেত। কিন্তু বকুল খুব কম পেতাম। হঠাৎ কোন একদিন বকুল গাছ আমার মনের কথা বুঝত! ছড়িয়ে দিত ফুল আমার জন্য! কি যে সুন্দর ছিল সেই ভোর গুলো! কেউ কখন কল্পনা করতে পারবে না!
কুয়াশা কেটে এক সময় সূর্যি মামা দেখা দিতেন তার সোনালি আলো নিয়ে! ছুটোছুটি করে ক্লান্ত আমাকে নিয়ে দাদা ফিরে আসতেন বাসায়!
আমি আমার কুড়ানো মুক্ত মানিকের ফুলের ঝুড়ি নিয়ে ছড়িয়ে বসতাম ঘরের মেঝেতে। দাদা সেই ফুল দিয়ে সুন্দর মালা গেঁথে দিতেন! কখন কখন আমি আমার ছোট হাত দিয়ে মালা গাঁথার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আমি সুই পেতাম না। কাঠি ভেঙ্গে সুতা পেঁচিয়ে দিতেন দাদা! নিজে যতদিন না সুই ধরতে শিখেছি, দাদাই আমাকে মালা গেঁথে দিতেন! বড় মালা, ছোট মালা, মাথার মুকুট, হাতের বালা, পায়ের নূপুর, সব গুলো দিয়ে আমি হয়ে যেতাম ফুলপরি! বার বার আয়না দেখে খুশি নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম সারা ঘর! এক সময় ফুলকন্যার চোখ জুড়ে ঘুম চলে আসে ক্লান্ত হয়ে!