somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কলেজে পড়ার সময় মোবাইল ফোনে যে আকাম করেছিলাম B-) :P :P

১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কামরুল আমার স্কুল লাইফের বন্ধু। ক্লাশ থ্রি থেকে একসাথে পড়েছি। স্কুলের পর একই কলেজে, একই সেকশন। কলেজে ক্লাশ তেমন একটা হইত না। আর হৈলেই বা কী! ক্লাশের সময়টাতে আমাদের খুঁজে পাওয়া যেত কমন রুমে। ক্যারম খেলেই ক্লাশের সময়টুকু পার করে দিতাম। B-) B-)

তবে ক্লাশ ঠিকমত না হলেও ল্যাব ঠিকই হৈত। আর সেখানে ফাঁকি দিলে ফাইনালে ধরা খাওয়ারও চান্স আছে। কারণ প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা হবে নিজের কলেজে। একজন এক্সটার্নাল বাদে ভাইভা বোর্ডেও থাকবেন নিজেদের টীচাররাই। সুতরাং স্যারদের মুখ চেনানোর ব্যাপার আছে।

প্র্যাকটিক্যাল ক্লাশে প্রায় ৩০-৪০ জনের গ্রুপ। কেমিস্ট্রি ল্যাবে একদিন লক্ষ্য করলাম এক সহপাঠিনীর দিকে কামরুল এক দৃষ্টিতে তাকাইয়া আছে। বুঝলাম কিছু একটা চলতাছে।

মাইয়াডা ভালৈ ছিল। পাতলা ছিপছিপে ধরণের। লম্বায় ৫ ফুটের কাছাকাছি। কালো ফ্রেমের চশমা পইড়া কলেজে আসত। খোলা চুল আর কালো চশমায় বেশ ভালো দেখাইত। ;) ;)


পরে একদিন নিউমার্কেটের সামনে কামরুলের সাথে দেখা। তারে জিগাইলাম ঘটনা কী। কিন্তু সে রীতিমত পিছলাইতাছে। শেষ পর্যন্ত স্বীকার করল মাইয়ার জন্য সে ফিদা।
ঘটনা আরো বিস্তারিত জানার জন্য কামরুলের সাথে গল্প শুরু করলাম।

- দোস্ত, মাইয়াডারে তোমার ভালো লাগে এইটাতো ভালো কথা। মাইয়ারে জানাইছো?
-নারে দোস্ত। সরাসরি বলার মত সাহস এখনো যোগাড় করতে পারি নাই। তবে বেনামে ফুন কইরা মাঝে মাঝে গ্যাজাই।
-কস কী? মাইয়ার ফুন নাম্বার পাইলি ক্যামনে? মাইয়া তোর লগে গ্যাজায়?
-সেইরকম একটা না। পরিচয় দিই না বইলা বেশিক্ষণ কথা কয় না।
-ভালো ভালো। ওক্কে দোস্ত। বেস্ট অফ লাক।

বিকাল বেলা হবিবুর রহমান স্যারের ব্যাচে পড়তে গিয়া ঘটনা জানাইলাম নজরুল আর রবীন্দ্রনাথ'রে (দুইটাই ছদ্মনাম ;))। আমাদের এই তিনজনের ফ্রেণ্ডশিপ অনেক ভালো। কলেজে, ব্যাচে সব জায়গায় একই সাথে পড়তাম।

-জানোস, কামরুল স'র লগে গ্যাজায়?
- ক্যামনে?
-ও কী নিজের নামে ফোন করে?
-নাহ! হালায় বেনামে গ্যাজায়।
-তাইলে এক কাজ করি আমরা মাইয়ারে ফোন কইরা কামরুলের নামে গ্যাজাই।
-এইটা ঠিক হইব না। তবে এক কাজ করা যায়, আমরা ফোনে ওরে হিন্টস দিতে পারি। যেন সে মনে করে কামরুলই ওর লগে এইভাবে গ্যাজায়।
-ওক্কে ডান!

বিস্তারিত পরিকল্পনা করা হইল। এক সহপাঠিনীর মাধ্যমে মাইয়ার ফোন নাম্বার ও সংগ্রহ করা হল। পরিকল্পনার প্রথম অংশ অনুযায়ী রাত বারোটা বাজতেই আমি মাইয়ারে ফোন দিলাম।
-হ্যালো।
-হ্যালো, কে "স"?
-জ্বী। আপনি কে বলছেন?
-কেমন আছ?
-আগে বলুন, আপনি কে?
-আমি তোমার ক্লাশমেট। আমরা একই সাথে ল্যাব করি। বলতাছো না কেমন আছ?
-ভালো আছি। নাম বলতে কোন প্রবলেম আছে?
- আচ্ছা তোমারে একটা ক্লু দেই। পরীক্ষার সময় তোমার খুব কাছেই আমার সিট পড়ে। আমি তো ভাবতাম তোমার মাথায় অনেক বুদ্ধি। দেখি তুমি এইবার বুঝতে পারো কিনা।

পরীক্ষার সময় ওদের দুইজনে একই বেঞ্চে বইসা পরীক্ষা দিত। মাইয়া বোধ হয় বুইঝা ফালাইছে। কিন্তু তারপরও ধরা দিতাছে না।
- না আমার মাথায় সবার মত অত বুদ্ধি নাই। আপনি নাম না বললে আমি ফোন রেখে দিব।
-আরে বাবা, এত ফোন রাখি রাখি কর কেন? আমি কি তোমারে ফাউল কোন কথা কইছি? তারপর, তোমার পড়ালিখা কেমুন হইতাছে?
-আপনি আপনার নাম বলবেন!
(একটু ধমকের সুর)
-আমার নাম আমরুল;)

এইভাবে প্রায় মিনিট তিনেক মাইয়ার লগে কথা কইলাম। প্ল্যান অনুযায়ী আমার অংশের কাজটুকু ততক্ষণে আমি করে ফেলেছি। মাইয়া তখন কিছুটা কনফিউজড আমার পরিচয় নিয়ে। B-)B-)

কথা বলা শেষ হইলে ফোন দিলাম নজরুলরে। ওরে গ্রীন সিগন্যাল দিলাম। এবার ওর পালা। সে কথা বলার পর রবীন্দ্রনাথের পালা।

পরের দিন কলেজে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ ওদের সাথে দেখা। তিনজনই মুচকি মুচকি হাসতাছি। বুঝলাম মিশন একোম্পলিশড। ক্লাশের পর করিডরে দাড়াইয়া প্রত্যেকেই জানাইল মাইয়া কার সাথে ক্যামনে কথা কইছে।

দেখি, মাইয়া দুই বান্ধবীরে নিয়া করিডোর দিয়া যাইতাছে। আমরা হাসি চাপতে পারি না এমন অবস্থা। :D :D
এইবার আসল পরিচয় দেবার পালা। মাইয়ারে ডাকলাম, "এই "স" শুইনা যাও"।
একটু অবাক হইয়া মাইয়া কাছে আসল।
-হুম, বল।
-গতকাল রাতে আমরা তিনজন তোমার লগে একটু ফান করছি। কিছু মনে কইরো না।


"আমি আমরুল"- মুচকি হেসে বললাম।
"আমি জামরুল"- নজরুল বলল।
"আর আমি শামরুল"- রবীন্দ্রনাথ'র উত্তর।

পাঠক, বুঝতেই পারতাছেন মাইয়ার অবস্থা তখন কেমুন। :P

সেই মাইয়া এখন রাবিতে পড়ে শুনেছি। এইচএসসির পর প্রায় বছর তিনেক হইল মাইয়ার সাথে দেখা হয় নাই। তবে এই মাইয়ার কথা আমরা তিনজনই বোধ হয় ভুলতে পারব না। :P
কামরুলের কানেও কথাটা গিয়েছিল। তবে হালায় ব্যাপারটা ফান হিসাবেই নিছে। তাই বাইচাঁ গেছি। তাছেড়া মনে হয় কামরুলের কিল ঘুষি একটাও মাটিতে পড়ত না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১০ রাত ১:১০
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×