সেমেস্টারের বিরতির ছুটি কাটিয়ে আজ রাজশাহী থেকে ফিরছিলাম সকালের সিল্কসিটি'তে। এক ইয়ারমেট ও ৩ জন জুনিয়র মিলিয়ে ৫ জনের দল। ট্রেনে যথারীতি প্রচণ্ড ভীড়। সারি সারি চেয়ারের মাঝে (চেয়ার কোচ) হাটাঁর জায়গাটাতেও প্রচুর যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন। পা ফেলার জায়গা নেই এমন অবস্থা। আমাদের দলের গন্তব্য জয়দেবপুর স্টেশন পর্যন্ত। ওখান থেকে সিএনজি নিয়ে ক্যাম্পাসে ফেরার প্ল্যান। ঢাকা-রাজশাহী রুটে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন তারা হয়তো অনেকেই জানেন ট্রেনের একটি বগি জয়দেবপুরের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকে। কিন্তু বগিটি ছোট হওয়ায় প্রায়ই জয়দেবপুরের টিকিট কাটলে কাউন্টারে স্ট্যাণ্ডিং টিকিট ধরিয়ে দেয়। এজন্য বরাবরই সিট নম্বর নিশ্চিত করতে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত টিকিট কাটি।
এবারও তাই আমরা যে বগিতে ছিলাম সেখানকার অন্য সকল যাত্রীর গন্তব্য এয়ারপোর্ট স্টেশন। জয়দেবপুর স্টেশন প্রায় পাওয়া পাওয়া অবস্থা। এদিকে জয়দেবপুর স্টেশনেও বগির অন্য যাত্রীরা নামবেন না। ফলে ভীড় পেরিয়ে আমাদের ৫ জনকে ৪টা ল্যাপটপ, ১ টা সিপিইউ, ৩ টা স্যুটকেস, ২ টা আমের কার্টুন ও ৩ টা ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে নামতে হবে। সিদ্ধান্ত হল তিনজন ভীড় ঠেলে স্যুটকেস ৩ টা নিয়ে আগে নেমে যাবে। আমরা বাকি দুইজন জানালা দিয়ে আমের কার্টন ও বাকি জিনিস ধরিয়ে দেওয়ার পর নামব। আমার হাতে ওদের দুটো ল্যাপটপ ধরিয়ে দিয়ে ওরা সামনে গেটের দিকে এগিয়ে গেল। আমি আমার নিজেরটি সহ মোট তিনটি ল্যাপটপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সেসময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক অপরিচিত সহযাত্রীর অনুরোধ, "ভাই, আপনি নেমে যান। আমি জানালা দিয়ে জিনিসপত্র ধরিয়ে দেব।"
"সমস্যা নেই, আমি নিজেই পারব"- আমি জবাব দিলাম।
ইতোমধ্যে ওরা প্ল্যাটফরমে নেমে জানালার কাছাকাছি চলে এসেছে। এবারে লোকটি আবার বলল, "ভাই, কোন সমস্যা হবে না। আমি আপনাদের ল্যাপটপ ঠিক নামিয়ে দেব"।
এইবার বুঝলাম চান্দু তুমি কেন বারবার আমার উপকার করার লাইগা উইঠ্যা পইড়া লাগছিলা।
"নো থ্যাংক্স।" জবাব দিয়ে মুচকি একটু হেসে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।
পরে সবাইরে ঘটনা খুইলা বললে সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হইলাম ঐ ব্যাটার উদ্দেশ্য ভালো ছিল না। মনে মনে বললাম, "প্ল্যান টা খারাপ ছিল না। তয় বেটার লাক নেক্সট টাইম" ।