somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আমাদের বাহাস আর লালনের গান

১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হৈচৈ হচ্ছে, হৈচৈ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। একটা পক্ষ আগের সরকারের সময়ে হৈচৈ করত কিন্তু বর্তমানে চুপ। আরেকটা পক্ষ আগে চুপ ছিল এখন সরব। তৃতীয় পক্ষটা আগেও সরব ছিল; এখনও সরব। তবে এরা একটু বেকায়দায় পড়ে গেছে।

আগে দ্রব্যমূল্য বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলে অন্তত কোনো ট্যাগ খেতে হতো না। অথচ এখন আফসোস লীগ ট্যাগ খেতে হচ্ছে।

আগে যারা দ্রব্যমূল্য বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নীরব ছিল, তারা নিশ্চয়ই দালাল ছিল? এখন যারা নীরব থাকছে বা সমালোচকদের বিভিন্ন ট্যাগ দিচ্ছে তারা কী?

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বলা যায়: দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা ও কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কাঁচাবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যে কারণে দামটা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তুলনামূলক অনেক বেশি। এ অবস্থা বেশিদিন থাকবে না। কিন্তু এটা কী করে বলা যায়, ১৫ বছর কোথায় ছিলেন? ১৫ বছর খারাপ ছিল বলে এখনও খারাপ যাবে? তাহলে কেন এত আন্দোলন? কেন এত রক্তপাত?

কেউ কেউ দেখলাম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বলছেন, ১৫ বছরের জঞ্জাল দুই মাসে দূর করা সম্ভব না। ঠিক কথা। কিন্তু চট্টগ্রাম বিভাগে যখন বন্য‍া হলো, অনেক টাকা সাহায্য উঠল। সেই টাকার যথাযথ হিসেব যখন দেওয়া হচ্ছিল না, তখন দেখলাম অনেক জ্ঞানী লোকও তাদের সাফাই গাইলেন। বললেন, ১৮ লাখ কোটি টাকা গেল সেদিকে খবর নেই, এই কয়েক টাকা (নয় কোটি বা তার বেশি) নিয়ে এত হৈচৈ! প্রকারান্তরে তাদের কাজকে সমর্থন দিলেন। একবারও ভাবলেন না এরা যদি এখনই পরিষ্কার না থাকে ভবিষ্যতে পরিষ্কার থাকবে এর নিশ্চয়তা কী? ব্যাপারটা কি এমন শত্রুর পতনে অন্য যে কাউকে সমর্থন দেওয়া যাবে? নিজের বিবেককে প্রশ্ন করা যাবে না?

যাহোক, টাকার হিসেব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় লোকে চট্টগ্রাম বিভাগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য টাকা দিল ব্যাংকে রাখার জন্য?

হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন, পাকিস্তানিদের বিশ্বাস করি না গোলাপ নিয়ে এলেও। আমার মনে হয় এই কথাগুলো বাঙালিদের জন্যও প্রযোজ্য। আমাদের জাতিগত স্বভাব কি বদলাতে পারব? আদৌ আমরা কি সভ্য হতে পারব?

দেশে লোকে সরকারি চাকরি চায় দাপট দেখাতে, অসৎভাবে উপার্জন করতে। এই চরিত্র মনে হয় না কখনও বদলানো যাবে। সরকারি চাকরির দাপট আর টাকা কমে গেলে লোকে ওদিকে মুখও ফিরে তাকাবে না।

আমরা কিন্তু জাতি হিসেবে খুবই কিউট। নিজে অসৎ, অথচ অন্যকে সৎ উপদেশ দিই। নিজে কথা বলতে চাই, অথচ অন্যকে তার মতো কথা বলতে দিতে চাই না। সম্প্রতি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মির সঙ্গে কী কাণ্ডটাই না হলো! ইউনূসের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটা মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উর্মি একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। আর যায় কোথায়? চাকরিও গেল, মামলাও হলো। আগের সরকারের সময় এমন ঘটনা ঘটেছে। তাহলে অন্যদের সাথে ইউনূসের পার্থক্যটা কোথায় রইল?

আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাসী ইউনূস নিজের ৬৬৬ কোটি টাকা করের মামলা ছাড়িয়ে নিলেন। গায়েবি মামলা শুরু হলো দেশে। ওদিকে বড় বড় আসামিরা মুক্তি পেতে লাগল। নিয়মকানুনের বালাই নেই। দুই মাসে এত এত খুন হলো, লুটপাট হলো- এসব নিয়েও পদক্ষেপ নেই।

আগের সরকারের সময় শুনতাম রায় এক জায়গা থেকে আসে। এখন দেখলাম সিস্টেম তো একই।

আমাদের পল্টি নিতে বেশি দেরি লাগে না। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের জন্য জানপ্রাণ দিয়ে দিয়েছিলাম। এমন পণ করেছিল কেউ কেউ নিজে একবেলা খেয়ে হলেও রোহিঙ্গাদের খাওয়াবে। কয়েকদিন পর যখন তাদের আসল রুপ বের হয়ে এলো তখন পল্টি নিতে দেরি হলো না। সব দায় একজনের কাঁধে দিয়ে দিলাম।

লালন কম দুঃখে লেখেননি, এক কানায় কয় আরেক কানারে, চলো চলো ভবপাড়ে, নিজে কানা পথ চেনে না পরকে ডাকে বারংবার

ছবি: সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৪৩
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আমাদের বাহাস আর লালনের গান

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৪১


দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হৈচৈ হচ্ছে, হৈচৈ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। একটা পক্ষ আগের সরকারের সময়ে হৈচৈ করত কিন্তু বর্তমানে চুপ। আরেকটা পক্ষ আগে চুপ ছিল এখন সরব। তৃতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ থাকে না কেউ থেকে যায়

লিখেছেন বরুণা, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০৩


চমকে গেলাম হঠাৎ দেখে
বহুদিনের পরে,
নীল জানালার বদ্ধ কপাট
উঠলো হঠাৎ নড়ে।

খুঁজিস না তুই আর খুঁজিনা
আমিও তোকে আজ,
আমরা দু'জন দুই মেরুতে
নিয়ে হাজার কাজ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরও একটি কবর খোঁড়া

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:০৪

গোরস্থানে গিয়ে দেখি
আরও একটি কবর খোঁড়া
নতুন কেউ আজ মরেছে
এমন করে বাড়ছে শুধু
কবরবাসী, পৃথিবী ছেড়ে যাবে সবাই
মালাকুল মওত ব্যস্ত সদাই
কখন যে আসে ঘরে
মৃত্যুর যে নেই ক্যালেন্ডার
যে কোন বয়সে আসতে পারে
মৃত্যুর ডাক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘটে যা’ তা’ সব সত্য নহে

লিখেছেন বিষাদ সময়, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৪৫

সত্য কী?
যাহা আমি বিশ্বাস করি তাহাই সত্য।
সত্য অন্মেষণ কী?
আমি যাহা বিশ্বাস করি তাহার পক্ষে যুক্তি খুঁজিয়া বেড়ানো।
ভাল কে?
যে আমার পক্ষে কাজ করে সে।
মন্দ কে?
যে আমার সমালোচনা করে সে।

গড় পড়তা বাঙালীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ বলার শুরু করেছে, "আমরা আগেই ভালো ছিলাম"।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২



একাধিক কারণে মানুষ ইহা বলার শুরু করেছেন: (১) সাধারণ মানুষ কোমলমতিদের ক্রমেই চিনতে পারছেন, ইহা ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে; কোমলমতিরা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ অনেক পদে আছে ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×